বর্তমান যুগের অনেক আবিস্কার রয়েছে যার কারনে আমরা আধুনিক বিজ্ঞানের কাছে কৃতজ্ঞ কিন্তু আমরা কি জানি ? এই সকল আবিস্কার প্রাচীনযুগের মানুষ একসময় ব্যহার করতো ? প্রাচীন যুগের মানুষ কতোটা উন্নত ছিলো তার ছোট্ট একটি ধারনা পাওয়া যাবে আমার এই পোস্টে। খুব বেশি সময় নস্ট না করে চলুন দেখে নেয়া যাক প্রাচীন আমলের সেই সকল আবিস্কারগুলোকে।
আগুন ছোড়া যন্ত্র বা ফ্লেম থ্রোয়ারঃ
এটি একটি সমরাস্র যা আবিষ্কার হয় ১৯০১ সালে । প্রথম বিশ্বযুদ্ধে এই অস্রের ব্যবহার শুরু হয়। এটি একটি পেট্রোলিয়াম শক্তির অস্র। যন্ত্রের ভেতরে পেট্রোলিয়াম দাহ্য পদার্থ থাকে। শত্রুর দিকে অস্রটি প্রয়োগ করলে যন্ত্র হতে আগুন ছুটে গিয়ে শত্রুকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়। বর্তমানে যুদ্ধক্ষেত্রে এই অস্র এখনও ব্যবহার হয়ে থাকে।
এবার আসি প্রাচীন আমলের আগুনছোড়া যন্ত্র বিষয়ক তথ্যে, প্রায় ৩০০ বছরও বেশি সময় আগে বাইজেন্টিয়ান জাতী তাদের যুদ্ধ জাহাজগুলোতে এই একই ধরনের আগুন ছোড়া যন্ত্র ব্যবহার করতো। শত্রু পক্ষ্যের জাহাজের নির্দিস্ট কাছে গিয়ে এই যন্ত্র প্রয়োগ করে শত্রু পক্ষ্যের জাহাজ পুড়িয়ে দিতো । আর সে আমলে জাহাজ বলতেই কাঠের জাহাজ , অতএব বুঝতে বাকি থাকে না যে অস্রটি বেশ কার্জকরি ছিলো সে আমলে। তবে সেই আগুন ছোড়া যন্ত্র প্রস্তুত করতে কি কি উপাদান ব্যবহার করা হতো তা আজও অনাবিষ্কৃত।
এলার্ম ঘড়িঃ
১৭৮৭ সালে স্যার লেভি হ্যাচেন্স ঘড়িতে এলার্মিং প্রযুক্তি সংযুক্ত করেন। একটি নির্দিস্ট সময়ে তার সংযুক্ত এলার্মিং সিস্টেম ঘন্টাধ্বনী বাজিয়ে মানুষকে এলার্ট করে দিতো ।
মজার ব্যাপার হলো ৪৪০ বিসিতে গ্রিক ফিলোসফার প্লেটো , তিনি নিজেই এলার্ম ঘড়ি ব্যবহার করতেন । তথ্য উপাত্তে জানা যায় ।বেশ কিছু পাত্র পানিতে পুর্ন করে দিয়ে বিভিন্ন একটি কৌশল ব্যবহার করতেন , কিছূ সময় পর পর পানির পাত্রসমুহে পানির স্তর পরিবর্তন হয়ে যেতো আর পানির চাপ সৃস্টির কারনে একটি হুইসেল বেজে উঠতো ।
ভুমিকম্প অনুভব যন্ত্রঃ
ইতালিয়ান বিজ্ঞানী স্যার ফিলিপো সেচি ১৮৭৫ সারে ভুমিকম্প অনুভব যন্ত্র আবিস্কার করেন। যার আধুনিক সংস্করন ব্যবহার করে আমরা ভুমিকম্প বিষয়ক আরও অনেক তথ্য জানতে পারছি ।
আর প্রায় ২০০০ বছর আগে বর্তমান চিনের স্যার জাংহেং নামক একজন ইনভেন্টর ভুমিকম্প মাপক বা অনুভবক যন্ত্র প্রস্তুত করতে সফল হয়েছিলেন। স্যার জাংহেং এর যন্ত্রটি ছিলো ব্রোঞ্জের তৈরী। যখনই কম্পন অনুভব হতো তখনই ব্রোঞ্জের তৈরী এই যন্ত্র হতে একটি গোলাকার বল গড়িয়ে বের হয়ে আসতো।
স্বয়ংক্রীয় দড়জাঃ
বর্তমানে এই দড়জা ঢাকার অনেক শপিংমলে দেখা যায়। দড়জার সামনে উপস্থিত হওয়া মাত্রই নিজে নিজে দড়জা খুলে যায় আবার দড়জা দিয়ে প্রবেশ করা হয়ে গেলে দড়জা বন্ধ হয়ে যায় নিজে নিজে । ১৯৫৪ সালে আমেরিকায় প্রথম স্বয়ংক্রী দড়জার আবিস্কার হয় ।
এবার আসুন দেখি প্রাচীন আমলের স্বয়ংক্রীয় দড়জার তথ্য, ৫০ বিসিতে কিং আলেকজান্ডার এই ধরনের স্বয়ংক্রীয় দড়জা প্রস্তুত করান। সাধারনত মন্দির বা গুরুত্বপুর্ন ভবন সমুহে প্রবেশ করার জন্য এই দড়জা প্রস্তুত করা হতো । পানির চাপ ও লোহার চেইন ভাড়ি পাথর ইত্যাদি ব্যবহার করা হতো , আর দড়জার সামনে এক পাপোস ধরনের পাথরের টুকরোকে সেন্সর হিসেবে ব্যবহার করা হতো । এটার উপর মানুষ এসে দাড়ালেই যন্ত্র তার কাজ করা শুরু করে দিতো ।
তথ্যসুত্রঃ
১. Ancient Inventions
লেখকঃ স্যার জে থর্প
২. উইকি পিডিয়া
৩. ছবি গুগল থেকে ।