আমি মাঝে মাঝে কবিতা লিখি। সেই স্কুলে যখন পড়ি। তবে তা একান্তই নিজের জন্য। আমার কবিতা কাউকে দেখাতে আমার ভাল লাগেনা। মাঝে মাঝে ছড়া লিখি ঐটা সবার সাথে শেয়ার করি কিন্তু কবিতা শেয়ার করি না। কারন আমি ভাল লিখতে পারিনা।
কিন্তু আজকে বিশ্ব এইডস দিবস। আমি এইডস নিয়ে একটা কবিতা লিখেছিলাম ১৯৯৭ সালে। এতদিন কবিতাটা আমার খাতাতেই ছিল। আজ জানিনা কেনো সবার সাথে শেয়ার করতে ইচ্ছা হচ্ছে। এই কবিতাটা গদ্য কবিতা।
"আবার আসিব ফিরে এই ধানশিরিটির তীরে।"
জীবনানন্দ দাশের এই কবিতাটা আমার বড্ড প্রিয়।
ছোট বেলা থেকেই আমি এই কবিতাটা খুব ভালবাসি।
আমার দেশ,
আমার বাংলাদেশে আমি ফিরবে যাব।
এই আশা নিয়ে আমি ছোট থেকে এত বড় হয়েছি।
কিন্তু আমার আর দেশে ফেরা হবেনা।
সবুজ ধান ক্ষেত দেখা হবেনা।
শীতে খেজুরের রসের পিঠা খাওয়া হবেনা।
ছোট ভাইদের সাথে ডাংগলি খেলা হবেনা।
ঈদে ফিরনি, শেমাই খাওয়া হবেনা।
বৃষ্টির দিনে দাদুর কোলে মাথা রেখে
রাজা রানী, পান্তাবুড়ির গল্প শোনা হবেনা।
গরমের ছুটিতে মামা বাড়ি বেড়াতে যাওয়া হবেনা।
মামার সাথে ছাদে উঠে ঘুড়ি উড়ানো হবেনা।
নানার সাথে দাবা খেলা আর নানীর হাতের
গরম গরম সিঙ্গারা খাওয়া হবেনা।
আর আমার মা........
মাকে দেখিনা বহু দিন।
তোমায় বড্ড দেখতে ইচ্ছে করেগো মা।
তোমার হাতের আদর পেতে ইচ্ছে করে।
আরো ইচ্ছে করে তোমার কোলে মাথা
রেখে সেই ছোট্ট বেলার মত ঘুমাতে।
এসব কিছুই আমার করা হবেনা
কারন;
কালো ব্যাধি 'এইডস' এ আক্রান্ত আমি।
বাচবো মাত্র আর এক মাস।
আমার বাবা টাকার লোভে প্রবাসী হয়েছেন,
সবুজ শ্যামল বাংলাদেশ ছেড়ে।
কিন্তু আমিতো কিছু করিনি।
তবে আমার কেনো ফেরা হবেনা?
আমিতো বাবার মত নই,
আমিতো আমার দেশকে ভালবাসি।
তবে আমি কেনো ফিরতে পারব না
আমার দেশে?
কেও কি পারবে আমার এই ইচ্ছা পূরণ করতে?
আমি আমার দেশে ফিরতে চাই।
আমার দেশে,
সবুজ শ্যামল বাংলাদেশে।
আমার এই কবিতার ছেলেটির মত যেন আর কাওকে কবিতার এই বাক্য গুলো জীবনে বলতে না হয়।
আসুন আমরা সবাই সচেতন হই। এইডস থেকে নিজেকে, দেশকে এবং দেশের মানুষকে বাচাই।