মেঘ পিয়নের ব্যাগের ভেতর মন খারাপের দিস্তা
মন খারাপ হলে কুয়াশা হয়, ব্যাকুল হলে তিস্তা
মন খারাপের খবর আসে বন পাহাড়ের দেশে
চৌকোণ সব বাক্সে, যেথায় যেমন থাক সে
মন খারাপের খবর পড়ে দারুণ ভালবেসে
মেঘের ব্যাগের ভেতর ম্যাপ রয়েছে মেঘ পিয়নের পাড়ি
পাকদণ্ডী পথ বেয়ে তার বাগান ঘেরা বাড়ী
বাগান শেষে সদর দুয়ার, বারান্দাতে আরাম চেয়ার
গালচে পাতা বিছানাতে ছোট্ট রোদের ফালি
সেথায় এসে মেঘ পিয়নের সমস্ত ব্যাগ খালি
দেয়াল জুড়ে ছোট্ট রোদের ছায়া বিশালকায়
নিষ্ফলকে ব্যাকুল চোখে তাকিয়ে আছে ঠাই
কিসের অপেক্ষায়..
রোদের ছুরি ছায়ার শরীর কাটছে অবিরত
রোদের বুকের ভেতর ক্ষত
সেই বুকের থেকে টুপ টুপ টুপ নীল কুয়াশা ঝরে
আর মন খারাপের খবর আসে আকাশে মেঘ করে
সারা আকাশ জুড়ে..
মেঘের দেশে রোদের বাড়ী পাহাড় কিনারায়
যদি মেঘ পিয়নের ডাকে সেই ছায়ার হদিস থাকে
রোদের ফালি তাকিয়ে থাকে আকুল আখান্কায়
কবে মেঘের পিঠে আসবে খবর বাড়ীর বারান্দায়
ছোট্ট বাগানটায়..
আষাঢ় মেঘে বৃষ্টি এলো, আকাশ জুড়ে গাঢ়
রোদের সাথে ছায়ার আড়ি মুখ দেখেনা কারো
মেঘ করেছে.. পড়ার ঘরে বিছানাটা জুড়ে
উথাল পাতাল মেঘ করেছে.. নিঝুম হৃদয়পুরে
বুঝি হঠাৎ করে মেঘ পিয়নের ক্ষণেক অসাবধানে
তার চিঠির গোছা উড়ে গেছে কখন দুরের বনে
গুড়িয়ে গেছে ঝরনা জলে ছড়িয়ে গেছে গাছের ডালে
মন খারাপের পাতাগুলি গাছের পাতার মতন
নীল পাহাড়ে পড়ছে ঝরে, ঝরছে অবিরত
এপাশ ওপাশ রাত্রি ফুরায় মন খারাপের ভোরে
পশলা মেঘে বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে ঝরে
আয় বৃষ্টি টাপুর টুপুর, আয় বৃষ্টি ঝেঁপে
মন খারাপের বৃষ্টি, তোকে দুঃখ দেব মেপে
মেঘ পিয়নের কোথায় বাড়ী, কোথায় সে কোন দুরে
আষাঢ় হলেই কোথায় থেকে আসে আকাশ জুড়ে
মন খারাপের দিস্তে গুলি কখন বিলি করে
রাত জাগা কোন ভোরে, মেঘের দ্বি-প্রহরে
পাকদণ্ডী পথের দ্বারে বাগান ঘেরা ঘরে
এখন রোদ উঠেছে, মেঘ পিয়নের যাওয়ার সময় প্রায়
যেসব চিঠি হয়নি বিলি পড়েছে ঝর্ণায়
গড়িয়ে গেছে নদীর জলে, ছড়িয়ে আছে গাছের ডালে
টুপ টুপ টুপ পড়বে ঝরে পাহাড় তলির পথে
ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাবে শুকনো পাতার সাথে
মন খারাপের সজল টুকু শুকিয়ে গিয়ে শেষে
মিলিয়ে যাবে তির-তিরে এক মন কেমনের রেশে
মেঘ পিয়নের ব্যাগের এবার মন কেমনের দিস্তা
সেই মন কেমনের স্রোতের টানে চলছে বয়ে তিস্তা