"স" সিনেমার সাথে পরিচিত থাকলে আপনি ভিলেন বুড়োটাকে (Jigsaw) ভুলে যেতে পারবেন না। যে Life ডিজার্ভ করে না, তাকে শেষ করে দেওয়াই ছিল তার খেলা। এই খেলা খুব মারাত্মক একটি খেলা, যদি চক্করে কেউ পড়ে, ভিক্টিম বেচারা/বেচারী সেখান থেকে বের হয়ে আসতে পারে না।
খেলাটা খুব সাংঘাতিক! আপনি ভালোয় ভালোয় রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন। গফের/বউয়ের সাথে অন্যান্য ভাল দিনগুলোর মতোই সুন্দরভাবে গুড নাইট বলে ঘুমিয়ে পড়েছেন। কিন্তু ঘুম থেকে জেগে দেখেন আপনার একটা চোখ অপারেশন করে কেউ ছিনিয়ে নিয়েছে! আরেকটা চোখ আগের মতোই ভালো। তবে মাথায় একটি মাস্ক! এমন সময় একটা রোবট এসে আপনাকে বলল- এটা ডেথ মাস্ক। তোকে ৩ ঘন্টা সময় দিচ্ছি এর মধ্যে তোর মাথায় ঘিলু থাকলে বেঁচে থাকবি, আর তা না হলে এই ডেথ মাস্ক তোকে পরপারে পাঠিয়ে দিবে।
ইমাজিন করুন, এই পরিস্থিতিতে যদি কখনো নিজেকে আবিস্কার করেন- তখন কি করবেন? বেঁচে থাকাটা যে কত গুরুত্বপুর্ণ সেই জ্ঞান প্রাকটিক্যালি আপনি গ্রহণ করবেন। আর যদি কোনভাবে এই যাত্রা থেকে রক্ষা পান, তাহলে নিজের জীবনের মুল্যটা নিজেই জেনে যাবেন। সেটাকে নিজের ও পৃথিবীর কাজে লাগাতে অণুপ্রাণিত হতে পারেন।
কারো মারা যাওয়া একটা দুঃসংবাদ, আপনি যদি কখনো শুনেন- আপনার কাছের কোন মানুষ মারা গেছে, তাহলে আপনার মাথার বায়োলজিক্যাল অংশে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে! এটা এমন একটা শকিং যেটার তীব্রতা নির্ভর করে কতটা কাছের মানুষ মারা গেছে। আপনার ঘনিষ্ট বন্ধু হলে সেটার প্রাবল্য হবে অনেক বেশি, যেটা অন্য পরিচিত মানুষের বেলায় হয়।
যাক, ব্লগার সাহসী সন্তান মারা গেছে- এই টাইপ ব্যাপার আমি কখনো কল্পনাও করিনি। কয়েকদিন আগে একটা ইমেইল পেলাম যেটা ব্লগের একটা পোস্টের লিংক ছিল। তথমত খেয়ে সেটা পড়ছিলাম। আমার কাছে নিকট অতীতের কিছু ব্যাপার দৃশ্য হল।
ফ্লাশব্যাকে-
সাহসী'র সাথে ইমেইলে যোগাযোগ হতো প্রথম প্রথম। এরপর ফেসবুকে। কথা প্রসংগে জানলাম উনি নাকি এনজিও'র একজন গুরুত্বপুর্ণ স্টাফ!!
এর বেশ কিছু দিন পর উনি আমাকে বলেন- নেভিতে জব করেন। খুব গোপনীয় ব্যাপার সেটা। আমি যেন কাউকে না বলি কারণ এটা বিশ্বাস করেই তিনি আমাকে বলেছেন।
নেভী'র জলদস্যুদের বিশেষ অভিযানে তিনি যান। সেদিন উনি এক জলদস্যুকে গুলি করেছেন! ওর মৃত্যু-মুখের দিকে তাকিয়ে নাকি ভুল করেছেন। এখন ঘুমাতে পারেন না। আরো কিছুদিন পরে তিনি জানান- খুব অসুস্থ। ফায়ারিং করতে গিয়ে ইনজুরড হয়েছেন! আমার কাছে ব্যাপারটা অস্বাভাবিক মনে হল।
উনার পায়ের আঙুল থেকে ব্লিডিং হচ্ছে! এটা জেনে আমার খুব খারাপ লাগল। আমি মন থেকে কষ্ট পেলাম, খারাপ লাগল।
এরপর ব্লগের পাতায় শত-শত পোস্ট এসেছে। অনেকে জেনারেল হয়েছেন। কেউ কেউ ব্যান খেয়েছেন! তবে সবচেয়ে বড় ঘটনা ছিল জনমদাসী নামক ব্লগারের বিরুদ্ধে একজোট হওয়া সব ব্লগার।
সেই ঘটনার পর থেকে ব্লগে মেরুকরণ হয়। কিছু সংখ্যক ব্লগার নিজেদের একজোট হয়ে ব্লগের বাইরে অশ্লীল-অরুচিকর ভাষায় ব্লগ নিয়ে কথাবার্তা চালিয়ে যেতে থাকেন। এমনকি সেটা ব্লগেও নিয়ে আসেন, তবে সাহসী সন্তানকে আমি এইসবে তেমন অ্যাক্টিভ দেখিনি। নামকাওয়াস্তে কতিপয় অভদ্রলোক-অভদ্রমহিলাকে সেখানে রস নিতে দেখতাম।
এদের সাথে সাহসী সন্তানের সখ্যতা ছিল। সেখান থেকে ধীরে ধীরে ইনঅ্যাক্টিভ হয়ে পড়েন। ব্লগ থেকে উনার গ্যাপ বাড়তে থাকে। এই গ্যাপ যখন ভুলে যাওয়া'র পর্যায়ে চলে গেছে তখনই দেখা গেল- সাহসী সন্তান বিতর্ক!
ইন-ফরোয়ার্ড
২০১৪ সালের পর থেকে প্লাবন আসেনি সেটা যেমন সত্য, ঠিক তেমনি সামহোয়ারইনব্লগ কখনোই একেবারে খরা হয়ে যায়নি। যারাই আসেন তারা এসে বলেন সামু'র যৌবন শেষ। এটা শাটডাউনের অপেক্ষা করছে। বাস্তবতা হয়তো এই মেসেজই দেয় বলে তারা এমন বলেন। তবে সেটা হবে সাধারণ ব্লগাররা কখনোই তেমন ভাবেন না। সাহসী'র অন্তর্ধানে ব্লগ থেকে দুরে থাকা ব্লগাররা কিছুটা নড়েচড়ে বসেছেন। এটা ভাল।
যাইহোক, সাহসী'র রহস্যজনক(!) খবর নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। অনেকেই অতোটা উদ্বিগ্ন না এখন ব্লগার চিরকুট এর মন্তব্য পড়ার পর। আমিও তেমন উদ্বিগ্ন না কারণ উনি গেলবছর অক্টোবরে মাথায় গুলি খেয়েছিলেন বলে শুনেছি, কিন্তু এরপরও তিনি বহাল তবিয়তে ছিলেন। এখন শোনা যাচ্ছে উনি প্যারা জাম্পিং করতে গিয়ে গুরুতর আহত + কোমায় আছেন।
সবশেষে-
পোস্টটা জিগসৌ দিয়ে শুরু করেছিলাম যে কারণে সেটা আসলে এখন পর্যন্ত শুরু করাই হয়নি। (ভাবনাগুলো আজকাল খুব বেশি স্বাধীন হয়ে গেছে!!!!) বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ নিয়ে একটি পাজল গেম খেলা হচ্ছে! সে সুক্ষ খেলাটা ধরা পড়েনি এখনো। যাইহোক, পরের কোন এক পোস্টেই নাহয় সেগুলো বলা যাবে।

এই পোস্ট কেন করলাম? কারণ অনেকেই এখনো কোন কূল-কীনারা করতে পারছেন না! তাদের জানতে সহায়তা করার জন্যই এই পোস্ট! হামা ভাইয়ের পোস্টের চিরকুট-লেকচার পড়বার মতো ধৈর্য কয়জনের থাকতে পারে আমার জানা আছে। আর এর চেয়েও বড় কথা এইরকম গোজামিলে ভরপুর মন্তব্যে মাথায় ছয়-ঘুরান্টি না খেয়ে বহাল থাকবে এইরকম উন্নত মষ্তিষ্ক পৃথিবীতে খুব কম আছে।
এই পোস্ট করার আরেকটা কারণ হলো হাত-টা একটু খুলুক। অনেক দিন হয়ে গেল। কিছুই লেখায় হলো না। এবার যদি কিছু লেখার মুরোদ জুটে এই অনুর্বর মষ্তিষ্কে!!
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:১৭