বিদায় হে মহান অস্তগত সূর্য,
বিদায় হে মহান ক্রান্তিকালের আরম্ভক্ষন।
আমি আজ কাঁদিনি;আজ আমার চোখে কান্না আসেনি,
আমার চোখে ছিল ক্রোধ আর জ্বলন্ত অগ্নিশিখা,
আজ আমি জ্বালিয়ে দিয়েছি কয়েক লক্ষ বাড়িঘর,
তবুও আমি আজ ক্লান্ত নই,
তবুও আমি আজ দিকভ্রান্ত নই,
আমি আজ পান করে নিয়েছি- বাঙালি জাতির নির্লজ্জ্বতার বিষ,
মাথা পেতে নিয়েছি একটি জাতির প্রতি তার শ্রেষ্ঠ সাধকের অভিশাপ,
নিজের বুকে বিদ্ধ করে নিয়েছি অজস্র ধিক্কারের বান ।
সত্যিই আমি আজ অসুস্থ নই !
আমি ঘুমাতে পারছি না; আমার চোখে ঘুম আসছে না,
দু:স্বপ্নের কালো ছায়া পিছু নিয়েছে আমার;
কে তুমি? কি চাও?
তোমার মৃত্যু!
কেন?
অপরাধ ঢাকার অপরাধে !
মৃত্যুর ভয় আমি করিনা;
তবে তোমার অভিযোগ আমি মাথা পেতে নিলাম;
তোমার যা ইচ্ছে খুশি তুমি করতে পারো?
কিন্তু আমি কেমন করে বলি নিজের লজ্জার কথা?
কেমন করে বলি- কবির মৃত্যু দিবসে তার শূন্য স্মৃতিসৌধের কথা;
বিকেলবেলা গুটিকয়েক পথচারীর নিরুদ্দেশে কবিঘরে ঘুরে আসার কথা?
সকালবেলা কয়েকটা ফুলের তোরা-এইটুকুই কি ভালবাসা?
কোটি মানুষের শহরে গুটিকয়েকের কবি ঘরে অানাগোনা ?
বল, কে দেবে আমায় এই উত্তর?
কে মানবে এ অবিচার?
কে মার্জনা করবে এই মহাপাপ...?
পালিয়েছে, হয়ত ও লজ্জ্বা পেয়েছে,
নয়ত আমার ক্রোধে ভয় পেয়েছে
নতুবা ও আর শুনতে চায়না কালের জঘন্যতম পাপের কথা!
কিন্তু তোমরা শোন হে ঢাকাবাসী,
কাঁদনি তোমরা- কেঁদেছে আজ ঝরা পাতা,
কাঁদনি তোমরা- কেঁদেছে আজ পথের ধূলিকনা,
কাঁদনি তোমরা- কেঁদেছে আজ তোমাদের বিবেক।
কিন্তু তোমরা তা টেরও পাওনি,
বিবেকের সাথে অতটুকু সম্পর্কও যে আর অবশিষ্ট নেই তোমাদের!
তোমরা ঘুমিয়ে পরেছ, ঘরের সব আলো নিভিয়ে ফেলেছ,
কিন্তু চেয়ে দেখ! কবি এখনও ঘুমাননি!
অামাদের জন্য বিবেকের লন্ঠন হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন কবি;চির উন্নত শির!
সদা জাগ্রত কবি! চির তরুন কবি!
বৃদ্ধ হয়েছি আমরা, ক্লান্ত হয়েছি আমরা,
কবি আছেন চির নতুন, চির দীপ্যমান।
হয়নি এখনও ভোর, খুলে দেখ তবু দোর?
আলোর জেয়ারে মিলিছে আজ অন্ধকারের ঘোর।