somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অনিঃশেষ দেশভাগের কথকতা : সুধা কি সাদিয়ার কথা শুনছে

১৩ ই আগস্ট, ২০০৮ রাত ৯:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শেয়ালদা আর গোয়ালন্দ তেমুন আছে ভাই
আমি যামু আমার দেশে, সিধা রাস্তা নাই।

গত বছরের ১৬ নভেম্বর সমকালের সম্পাদকীয় পাতায় 'ভারতে অবিশ্বাসের হাওয়া' নামে সুধা রামচন্দ্রনের একটি নিবন্ধের অনুবাদ প্রকাশিত হয়। বিষয় : ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাসমূহে মুসলমানদের নিয়োগে অলিখিত বাধা বিষয়ে ভারতীয় সংবাদ ম্যাগাজিন আউটলুকের একটি রিপোর্ট। দুদিন পর একটি প্রতিক্রিয়া আসে। শিরোনাম : 'দুর্দিনেও জানাচ্ছি শুভেচ্ছা; অসাম্প্রদায়িকতার!' এর লেখক ঢাকার পল্লবীর একটি মহিলা মাদ্রাসার দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী শেখ সাদিয়া তাসনীম। সাদিয়া তার ভাষায় 'প্রবল আন্তরিক শুভেচ্ছা বা কৃতজ্ঞতা' জানাবার জন্যই কলম ধরেছে। এর জন্য উপযুক্ত ভাষাও তার জানা নেই, 'কারণ এর আগে কখনো আমার কাউকে তীব্র আন্তরিকতা জানানো হয়নি। এজন্য তাকে (সুধাকে) আমার মনের তীব্র আন্তরিকতাসহ শুভেচ্ছা বা কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমি পাচ্ছি না।' বোঝা যায় সাদিয়া লেখাটি পড়ে এমন আপ্লুত যে, তার 'তীব্র' ও 'প্রবল' আন্তরিকতাকে কৃতজ্ঞতা না শুভেচ্ছা হিসাবে প্রকাশ করবে তা সে বুঝতে পারছে না। মুহূর্তটি আমার কাছে অনন্য ও ঐতিহাসিক মনে হয়। কারণ, মাদ্রাসার এক ছাত্রী_ যাকে সাধারণভাবে ভাবা হয় অবরোধবাসিনী, রক্ষণশীল এমনকি মৌলবাদী (?) বলে_ যখন তার প্রতিবেশী দেশের আরেক নারীকে অন্তরের অন্ত:স্থল থেকে অসাম্প্রদায়িকতার জন্য অভিভাদন জানায়, বটেই তা আপ্লুত হওয়ার মত ঘটনা। কারণ প্রতিবেশী তার পড়শির সঙ্গে কথা বলতে চাইছে এবং চিনছে ও জানছে।

প্রতিবেশীতার ধারণার মধ্যে একটা স্ববিরোধ আছে। প্রতিবেশী মানে যার সঙ্গে বেশি মাখামাখি আবার প্রতিবেশী সে-ই, যার সঙ্গে নিত্য লাগালাগি। ভারত বাংলাদেশের তেমনই প্রতিবেশী। ভারত-বাংলাদেশের আলোচনা দুটি দেশ ও দুটি রাষ্ট্রের সম্পর্কের আলোচনা, অর্থাত তা রাজনৈতিক সম্পর্কের আলোচনা। ব্যক্তিগত ও মানবিক মাত্রা সেখানে অনুপস্থিত। যেমন অনুপস্থিত থাকে কে মুসলমান আর কে হিন্দু তার উল্লেখ। ভারত ঘোষিতভাবে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হলেও ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকেরা মনে করে তাদের দেশ হিন্দুপ্রধান, যেমন সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশী মনে করে তারা মুসলিম দেশের বাসিন্দা। ভিন্নমতের লোক উভয় দেশেই আছে, সেটা ভাল। কিন্তু ভালর থেকেও বেশি জরুরি হলো এই মনে করার ভেতরের মর্মটা বুঝে দেখা। সুধা আর সাদিয়ার লেখায় তারই ইঙ্গিত।

সুধা লিখেছে, 'সম্প্রতি সংবাদপত্রে ভারতের কিছু কিছু গোয়েন্দা সংস্থায় মুসলিমদের নিয়োগ বন্ধ থাকার ওপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। শিক্ষা ও চাকুরিতে মুসলিমদের ক্ষীণ উপস্থিতি সর্বজনবিদিত, তারওপর সরকারি সংস্থা থেকে পরিকল্পিত ভাবে তাদের বাদ রাখা ভেবে দেখার মতো ব্যাপার। এটা কেবল দেশের ধর্মনিরপেক্ষ ও বহুত্ববাদী আদর্শের বরখেলাপই নয়, ভারতের নিরাপত্তার ওপরও এর অভিঘাত পড়বে।' মুসলমানদের প্রতি বৈষম্যে সুধার উদ্বেগ থেকে তাকে মনে হয় না যে তিনি 'হিন্দু' অবস্থান থেকে কথা বলছেন, বরং তার অবস্থান রাষ্ট্রের 'নিরাপত্তা' এবং 'দেশের ধর্মনিরপেক্ষ ও বহুত্ববাদী আদর্শের' পক্ষে।

সেকারণে তার চোখে পড়েছে যে, 'মুসলমানদের প্রতি অবিশ্বাস আরো অনেক বিস্তৃত ও গভীর। কেবল প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বই নয়, আরো অনেক ক্ষেত্র থেকেও তাদের দূরে রাখা হয়। ভারতে ১০০ কোটি ১০ লক্ষ জনসংখ্যার ১৩.৪ শতাংশ হলো মুসলিম। কিন্তু চাকুরি ও শিক্ষায় কী সরকারি আর কি বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই তাদের স্থান জনসংখ্যার হারের থেকে অনেক কম। এক অদৃশ্য হাত তাদের কোটাকে ৩.৫-এর মধ্যেই আটকে রেখেছে। ভারতে ভাল থাকা বলতে যা বোঝায়, তার জাতীয় মানদণ্ডের অনেক নীচে পড়ে আছে মুসলিমরা। এবং তথ্যপ্রমাণ বলছে এই বৈষম্য মোটেই কমছে না বরং বাড়ছে।' এটুকু বলার জন্য যে অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টি ও সতসাহস লাগে, তা সুধার আছে। কিন্তু একটু খোঁজ-খবর রাখা পাঠকমাত্রই জানেন, ভারতের সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে এমন লোকের সংখ্যা নিতান্তই কম। অরূন্ধতি রায়ের কথা বলা যায়, তিনি কাশ্মীরে জাতিগত নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার। কাশ্মীর তার কাছে ভারতের অঙ্গ নয়। সম্প্রতি তিনি ভারতীয় শাসকদের জঙ্গিনিধন হিড়িকের বলি দিল্লির এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক আফজাল গুরুর ফাঁসির আদেশের বিরুদ্ধে জনমত তৈরির কাজে নিয়োজিত হয়েছেন। তিনি এবং আরো ক'জন মিলে গুজরাট গণহত্যার জন্য উসিলা হিসেবে ব্যবহৃত গোধরা ট্রেনে আগুন লাগানোর ঘটনা তদন্তে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট খতিয়ে দেখিয়েছেন যে, ঐ ঘটনায় মুসলমানদের হাত থাকা তো দূরের কথা, স্বয়ং বিজেপি গং-এর জড়িত থাকার নজির আছে। দিল্লি পার্লামেন্ট ভবনে আত্মঘাতী হামলার বিষয়টি নিয়েও তাঁদের অবস্থান মূলধারার মিডিয়ার বিপরীতে।

এরকম আরো প্রতিবাদী আছেন। সাদিয়ার কথা থেকেই বোঝা যায়, ভারত তার কাছে সাম্প্রদায়িক হিন্দুর দেশ, সেখানে তার ভাষায় উন্মুক্ত ও নিরপেক্ষ মনের ব্যাক্তি প্রায় নেই-ই। তাই সরল বিশ্বাস নিয়ে সে লিখতে পারে, 'রবি ঠাকুর যেমন অসাম্প্রদায়িক ছিলেন তেমনি সুধাদাও একজন। কারণ আমাদের দেশের ৮০%-৮৫% মুসলমান এবং এখানে হিন্দু, খ্রীস্টান, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীগণ স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করছে। এখানে যদি কোনো মুসলমান অন্য কোনো ধর্মের মানুষকে এমন কোনো কথা বা কাজ করে, যা তার ইগোতে লাগে তবে সবাই সেটা নিয়ে বেশ সমালোচনা করে বলে, এ দেশ সাম্প্রদায়িক, এ দেশের মানুষেরা সাম্প্রদায়িক। অথচ প্রতিবেশী দেশ ইন্ডিয়াতে যখন ঘরে আগুন লাগিয়ে মানুষ হত্যা করা হয় তখন কেন সেদেশকে কেউ সাম্প্রদায়িক বলে না? কেন সেদেশের মুসলমানরা চাকরি ও শিক্ষায় সরকারি-বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই তাদের দক্ষতা দেখাতে পারছে না? কেন বিএসফের লোকেরা আমার দেশের বিডিআর হত্যা করলে, অপহরণ করলে, পুশইন করলে, গবাদি পশু নিয়ে গেলে প্রতিবাদ হয় না?... মুসলমানরা নিজ ধর্ম পালন করলে সাম্প্রদায়িক বা মৌলবাদি হয় অথচ অন্য কোনো ধর্মাবলম্বী তার ধর্ম পালন করলে সে সাম্প্রদায়িক নয়; মৌলবাদী নয়, কেন? আমার সব সময় মনে হতো শুধু মুসলমানরাই অসাম্প্রদায়িক জাতি। আর এই অসাম্প্রদায়িকতা আমি শিখেছি আমার পরিবার এবং শিক্ষকদের কাছ থেকে। কিন্তু শুধু মুসলমানরাই যে অসাম্প্রদায়িক তা ভুল প্রমাণিত করলেন সুধাদা দেখালেন হিন্দুদের মধ্যেও আছে মুসলমানের মতো উন্মুক্ত এবং নিরপেক্ষ মনের ব্যাক্তি।'

সাদিয়া খেয়াল করেনি, ভারতের মুসলমানদের যে অবস্থার কথা সে বেদনার সঙ্গে উল্লেখ করেছে, তাকি বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়েরও সাধারণ অবস্থা নয়? তারপরও সাদিয়ার কয়েকটি প্রশ্ন মনের ভেতর কাঁটা হয়ে খচখচ করে। কেন সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ কেবল মুসলমানদের বিরুদ্ধেই তোলা হবে যখন ভারতেও মুসলমান বিদ্বেষ ও নিধন আছে? কেন বিএসএফ নিয়মিতভাবে সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যা করেও নিষ্কলুষ থাকতে পারে? কেন ধার্মিক মুসলমান মাত্রই সাম্প্রদায়িক বা মৌলবাদী হবে? কেন বাবরি মসজিদ ভাঙ্গা ও গুজরাট গণহত্যার পরও ভারত অসাম্প্রদায়িক আর বাংলাদেশের পরিচয় হয় সাম্প্রদায়িক? সাদিয়ার দৃষ্টিভঙ্গিকে আনাড়ি বা অনভিজ্ঞ বলা যায়, কিন্তু তার ভেতরে উপমহাদেশের সাম্প্রদায়িক বাস্তবতার যে পাঠ আছে, তাকে নিতান্তই বেঠিক বা দুষ্ট চিন্তা বলা যায় কি? কিন্তু কী বিষ্ময় যে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আর হালে সুধা রামচন্দ্রন ছাড়া আর কোনো অসাম্প্রদায়িক ভারতীয় বা বাংলাদেশী হিন্দু তার কাছে অচেনা। এটা কীভাবে হলো? এটা কি কেবল সাদিয়ারই ব্যর্থতা। এর কারণ কি কেবলই তার মাদ্রাসা শিক্ষা? নাকি বাংলাদেশী সমাজের সুপ্ত দেশে টিকে থাকা সাম্প্রদায়িক মনোভাবও এর জন্য দায়ি। সাদিয়া তার অসাম্প্রদায়িকতার শিক্ষা পেয়েছে 'পরিবার এবং শিক্ষকদের কাছ থেকে'। তা-ই যদি হয়ে থাকে তবে তারাও তাকে সচেতন করেননি যে, 'শুধু মুসলমানরাই অসাম্প্রদায়িক জাতি' নয়? শেখাননি যে, জাতি ও ধর্ম সমার্থক নয়। এক জাতির মধ্যে একাধিক ধর্ম থাকতে পারে, তার উদাহরণ বাঙালি ও আরবরা। আবার এক ধর্মের মধ্যে একাধিক জাতি থাকার নজির সকল ধর্মেই আকছার। সাদিয়ার দুর্ভাগ্য যে, সে এ শিক্ষা তার সমাজ-রাষ্ট্র থেকে পায়নি। যেমন দুর্ভাগ্য ভারতের অসংখ্য আধুনিক ও স্মার্ট তরুণদের_ যারা তাদের 'শিক্ষক ও অভিভাবকদের' মন্ত্রণায় বিজেপির হয়ে হিন্দুত্ব প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বাবরি মসজিদ ভেঙ্গেছে, গুজরাটে গণহত্যা করে মুসলমান মেরেছে। আর সেই নরঘাতক মোদী নিজেই যে অনেক আগে থেকে পরিকল্পনা করে রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপির নের্তৃত্বে নৃশংস ভাবে দাঙ্গা ঘটিয়েছে, তার লিখিত ও ভিডিও প্রমাণ হাজির হওয়ার পরও মোদী আবার বিপুল জনপ্রিয়তা নিয়ে ভোটে জিতে আসে এবং ভারতের মূলধরারা বড় বড় মিডিয়ার ভাষ্যে, মোদী আগে খারাপ কাজ করলেও এখন তো ভাল হয়েছে এবং রাজ্যে উন্নয়ন বইয়ে দিচ্ছে। সুধা রামচন্দ্রনের লেখা পড়ে সাদিয়ার ভুল ভাংছে। কিন্তু সুধা যাদের ইঙ্গিত করে বলেন : অনেক হিন্দুই বিশ্বাস করেন যে, সত্যিকারভাবে মুসলমানরা ভারতীয় নয়। তাদের ভাবা হয় 'বহিরাগত', কয়েক শত বর্ষ আগের ভারত আক্রমণকারীদের বংশধর। ১৯৪৭-এর দেশভাগ এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর এই হিংসা আরো বাড়ে। ভারতীয় মুসলিমদের ভাবা হয় পাকিস্তানপন্থি এবং এখন তাদের দেখা হয় সম্ভাব্য সন্ত্রাসবাদী হিসাবে।' যেমন ভারতের তেহেলকা ম্যাগাজিন তাদের চলতি সংখ্যার প্রচ্ছদ কাহিনীতে দেখিয়েছে যে, আহমেদাবাদ-বেঙ্গালুরু বোমার পর এবং আরো আগে থেকেই প্রমাণ ছাড়াই মুসলিমদের গ্রেফতার ও শাস্তি দেয়া হচ্ছে সন্ত্রাসী বলে। গুজরাতে সন্ত্রাস দমন আইন টাডায় গ্রেফতার হওয়া বেশিরভাগই হলো মুসলিম এবং বিশেষত তারা, যারা ২০০২ এর গণহত্যার পর ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্য করেছিল। এরকম কয়েকটি ঘটনা উন্মোচন করে তেহেলকা দেখিয়েছে যে, শাস্তিপ্রাপ্তদের বেশির ভাগই নির্দোষ। তাদের অভিযোগ এটা পরিকল্পিতভাবেই করা হচ্ছে। এ অবিশ্বাস ও ভুল কে ভাঙ্গাবে? সাদিয়ার কথা কি তারা শুনবে?

কেবল তা-ই নয় যে, সাদিয়া যে প্রশ্নগুলো তুলেছে তার অসাম্প্রদায়িক উত্তর ভারত ও বাংলাদেশের আধুনিক ও অসাম্প্রদায়িক মহল থেকে দিতে হবে। সুধার লেখা সাদিয়ার মনে যে আলো ও আশাবাদ জাগ্রত করেছে, তার শক্তিতেই কি মুসলমানের প্রতিবেশী বাংলাদেশী হিন্দু সমাজ ও বাংলাদেশের প্রতিবেশী হিন্দুপ্রধান রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নতুন করে রচিত হতে পারে না? পারে, যদি রাজনীতিবিদ ও রাষ্ট্রের সাম্প্রদায়িক ও আধিপত্য ও সবিধাবাদী নিয়ন্ত্রণের বাইরে, কিছু কিছু প্রচারমাধ্যমের ছদ্মবেশী সাম্প্রদায়িকতার প্রভাবের বাইরে দাঁড়িয়ে সুধা ও সাদিয়ারা পরস্পর কথা বলে, পরস্পরকে জানে। সাদিয়া বাংলাদেশের তরুণ সমাজের প্রতিনিধি নয়। সে মাদ্রাসায় পড়ে, হয়তো বোরখাও পড়ে, তার সিলেবাস আধুনিক নয়।

অন্যদিকে বাংলাদেশের তরুণ সমাজের তুখোড় চরিত্ররা আধুনিক, সনাতন মূল্যবোধের ধার তারা ধারে না, তারা বলিউডি সিনেমার ভক্ত। মুসলমান বা হিন্দু নিয়ে তারা খুব একটা ভাবিত কিনা জানা যায় না। সাদিয়ার সঙ্গে তাদের বনবে না। কিন্তু সে যে ব্যাক্তিত্ব ও জিজ্ঞাসা প্রকাশ করেছে তা কি ঐ 'আধুনিকদের' মধ্যে খুব বেশি আছে? কেবলই বোরখা দেখলে ভেতরের মানুষটাকে কখনোই জানা হবে না। জানা যাবে না যে, অবরোধ ভাঙছে, বরফ গলছে। সাদিয়া মাদ্রাসার ভেতরের সেই স্বাভাবিক সপ্রাণ মানুষের অস্তিত্বই জাহির করেছে। সেই সপ্রাণতাকে গ্রহণ করা ও এগিয়ে নেয়ার কর্তব্য তাদেরও; যারা নিজেদের অসাম্প্রদায়িক মনে করেন।

তা যতদিন না হবে, ততদিন উপমহাদেশের রাষ্ট্র পর্যায়ে শুধু নয়, সম্প্রদায়ে সম্প্রদায়ে কেবল নয়, ব্যক্তির মনেও মধ্যেও অন্তহীনভাবে দেশভাগ চলতেই থাকবে। আমরা যতই ভাবি, দেশভাগের দাগ আমরা ১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসেই ফেলে এসেছি, তাকে মিথ্যা করে দিয়ে বারবার তা আমাদের সামনে এসে দাঁড়াবে। দেশ ভাগ শেষ করে সমাজকে ছিন্নবিচ্ছিন্ন করে তা শেষ হবে আমাদের প্রত্যেকের মনের ব্যবচ্ছেদে, হিংসার কূপে ডুবে গিয়ে।

২০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×