ছেলেটা অংক করছিল , “একটা কাজ একজন পুরুষ ও পাঁচজন নারী একদিনে করতে পারে , কাজটি ১ জন নারী ৪ দিনে করতে পারে , তাহলে একজন পুরুষ…….
“চাচী, আঙ্গুরদের বাড়িতে তো পুলিশ আসছে ”
আহা আঙ্গুর আপা , ছেলেটি , যাকে আমরা এখন থেকে ফারুক আব্দুল্লাহ বলে জানবো , সে চঞ্চল বোধ করতে থাকে ।
খুনের মামলায় প্রতিবেশিনী গ্রেফতার হবে , এক বেশ তরতাজা আঙ্গুর , পাড়ার বিভিন্ন বয়সী মানুষের ঘুম হারাম করা আঙ্গুর , ছেলে ছোকড়াদের স্বপ্নগুণের সবথেকে বুনো কল্পনাটা পুলিশি ঝামেলায় পরে যাবে , আর লোক জমবে না ? সুতরাং আমরা ফারুক আব্দুল্লাহকে আঙ্গুরদের বাড়ির সামনের জমায়েতে সনাক্ত করি , একটা ঢিলেঢালা হাফপ্যান্ট আর সাদা একটা হাফ সার্ট পরা ছিল বোধ হয় , কিংবা লাল ঠিক মনে করতে পারছিনা , কারণ এরপর বহুবছর পর আমরা একটা পানশালায় মিলিত হই । কিন্তু ঐ জমায়েতে ফারুক আব্দুল্লাহকে আমরা বেশ লক্ষ্য করি , ছেলেটার কৈশোর ছিল বড় বেশী বিপর্যয়কর , হাফপ্যান্টের ভেতরে দুটো পা কেমন বেসামাল দৈর্ঘ্য বিস্তার করেছে , কণ্ঠটা কেমন যেন , বেসুরো , আমরা ঐ জমায়েতে ফারুক আব্দুল্লাহকে লক্ষ্য করতে বাধ্য হই , কেননা আঙ্গুরদের বাড়িতে যে ছেলেটা কাজ করতো শাহীন , সে ছিল ফারুক আব্দুল্লাহর বয়সী , যে আঙ্গুরদের বাড়ির লাগোয়া পুকুরে মরে ভেসেছিল । যার খুনের জন্য আঙ্গুরদের থানায় যেতে হয় , আমরা এই খুনের ব্যাপারটা নিয়ে ভাববো , ফারুক আব্দুল্লাহর সাথে আমরা যখন পানশালায় মিলিত হব তখন ।
১৩ আর আঠারো যে দূরত্বটা , সেটা ত্রিশ আর পঁয়ত্রিশে অত অর্থবহ থাকেনা , আমার যখন ফারুক আব্দুল্লাহকে , তার পরিবার সহ চিনতে পারি , তখন সে আমাদের কাছে নেহাত ছেলেমানুষ , আমরা বেশ পাড়ায় ক্লাব ঘরে লুকিয়ে সিগারেট টানি , আমাদের কারো কারো আবার প্রেম ট্রেম হয়েছে , আমাদের এই দঙ্গলটা ছিল চৌকোস , আমাদের স্বপ্ন ছিল উপরে উঠার , মাসের শেষে বাবা মায়ের চাপা ঝগড়া , কারো কারো বাড়িতে যেটা বিস্ফোরিত হয় , পরদিন আমাদের ভেতরের তারা ভীষণ লজ্জিত হয়ে থাকতো , হয়তো আমাদের কারো বাবা তার সন্তানকে বকছে “শুয়োয়ের বাচ্চা, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তোদের পড়াশুনার টাকা নিয়ে আসি , তাও এই রেজাল্ট , অমুকেরা কিভাবে পারে …………” আমরা এই কথোপোকথন শুনে থাকলেও তা এড়িয়ে যেতাম , আমরা আসলে দিন বদলের স্বপ্ন দেখতাম , আমরা বড় কিছু হতে চাইতাম , আমরা মহৎ হতে চাইতাম , কিছুটা শৈল্পিক । আমরা আমাদের পরিবারের সুখের গল্প করতাম , আমরা প্রেম করতাম , আমরা কবিতা পড়তাম , সুনীল কিংবা হুমায়ূনের প্রেমের গল্প উপন্যাস পড়ে জোশ পেতাম , আমরা সফল প্রেমিক হতে চাইতাম । প্রেমপত্র লিখছি , এই সময় মা কাজের মেয়েকে যাতা গালিগালাজ করছেন , আমরা এড়িয়ে যেতাম , আমরা বেশ মন দিয়ে পড়তে চাইতাম , কারণ ঐ দমবন্ধ সময় থেকে উত্তরণের একটাই সিঁড়ি ছিল আমাদের , আমাদের পেছনে ফেরার নেই , আমাদের বাবারা ঘোর গ্রাম থেকে এই মফঃস্বলে হিজরত করেছেন , লজিং থেকে থেকে একটা কেরানী , কিংবা স্কুলমাস্টারি জোগাড় করেছেন , কিংবা ভাইবোনদের মধ্যে আমাদের পিতাই দুই তিনটা পাশ দিয়ে কোন ব্যাঙ্কের ক্যাশিয়ার , বাকিরা সব গ্রামে , আমাদের অনেকের চাচাতো ভাইবোনেরা বিশ্বাস করতো শহরে আমাদের বাবারা অনেক কিছু করে ফেলেছেন , একই বাবার সন্তান কেউ গ্রামে আর কেউ শহরে , এর ভেতরে তারা একধরণের চাতুরী দেখতে পেতেন , আমাদের শেকড়ের সাথে অবিশ্বাসটা ছিল পাকাপাকি , আমরা তাদের লুকোতে চাইতাম , আর তারা প্রত্যাশা করতো আমাদের ভেতর প্রকাশিত হতে । আমাদের বাড়িগুলো ছিল একেকটা আলাদা নৌকার মত বিচ্ছিন্ন , ভ্যাপসা হলুদ আলো আর দীর্ঘশ্বাসে ভারী , আমাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা দুঃখ ছিল , আমাদের বাবাদের আলাদা আলাদা দুঃখ ছিল , আমাদের মায়েরাও দুঃখী ছিলেন ।
ফারুক আব্দুল্লাহর সাথে এরপর আমাদের দেখা হয় আমাদের এক্স স্টুডেন্টদের কোন গেটটুগেদারে , পেটমোটা এক মন্ত্রীর শুভেচ্ছা বক্তৃতা যখন শুরু হয় আমরা উশখুশ করতে থাকি , খবর পাই মদের ব্যবস্থা আছে , তবে একটু গোপনে খেতে হবে , আমরা আড়াইতলার ছাদে যাই , চেয়ারপাতা আছে , একটা চব্বিশ পঁচিশ বছরের ছেলে তার প্রেমিকাকে নিয়ে রং ঢং করছে , যা দেখে আমরা একটু বিরক্ত হব হব করছি , সেসময় আমরা একটা কোনের চেয়ারে ফারুক আব্দুল্লাহকে বসে থাকতে দেখি , এবং আমরা লক্ষ্য করি সে একমনে ঐ যুগলের দিকে চেয়ে হাসছে । আমাদের সাথে তার দৃষ্টি বিনিময় হলে সে হাতের গ্লাসটা নিয়ে উঠে আসে এবং একটা আন্তরিক হাসি দেয় । সে কোন একটা অ্যাড ফার্মে কাজ করতো , আর কোন একটা চ্যানেলে নিউজ পড়ত । আমরা তার খবর জানতে চাই , সে বিয়ে করেছে কিনা , তার বাবা মা জীবিত কিনা , কিংবা তার বড় বোনটা কেমন আছে ।
আমাদের ঐ মহল্লায় ফারুক আব্দুল্লাহর পরিবারটা ছিল কেমন জানি শান্ত , ছিমছাম । ওর বড়বোন মোমের পুতুলের মত দেখতে ছিল , আমাদের মধ্য যে সবথেকে ভাবুক স্বভাবের তার সাথে ওর বেশ ভাব হয়েছিল , আমরা আমাদের ভেতর তাঁকে দেখতে পাই , ও বেশ নাম করা ভালোছাত্র ছিল , সরকারের কোন একটা বিভাগের বেশ ভবিষ্যৎ থাকা একজন প্রকৌশলী । হ্যাঁ আনিস , ও জিজ্ঞেস করে , সোমার কথা , সোমা এখন কি করে , ওর বিয়ে হয়েছে কি না , ফারুক আব্দুল্লাহ জানায় তার বোন বিবাহিতা , এবং তার বোন দুই সন্তানের জননীও । আনিসের আগ্রহটা আমাদের কাছে বেশ স্বাভাবিক লাগে , আনিস আর সোমার চিঠিগুলো ছিল অন্যরকম , ঠিক আমরা যেমন লিখতাম , তোমাকে অনেক ভালবাসি , তোমার পাগল করা হাসি , তোমার জন্য মরে যেতে ইচ্ছা করে এই রকম কোন আবেগ ছিলনা , সোমা লিখত কেবল তার দিন যাপন নিয়ে , তার এখন কোথা যেতে ইচ্ছে করছে , পাখির রং , গাছের শব্দ , ঝমঝম বৃষ্টি , অথবা অর্থহীন বকবক , মাঝে আলগোছে হটাত খুব নরম করে জিজ্ঞেস করা আপনাকে বড় চুলে কি পবিত্র দেখায় , এইসব অদ্ভূত কথা ।
তবে খুব স্বল্পায়ু ছিল সময়টা , সোমারা তাঁদের নিজেদের বাসায় উঠে যায় , যেটা আমাদের পাড়া থেকে একটু দূরে , আর আমাদের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়ে যায় , এরপর সোমার সাথে আনিসের ব্যক্তিগত পর্যায়ের যোগাযোগ ছিলনা কখনো । ফারুক আব্দুল্লাহ গ্লাসে মদ ঢালে , আমরা গ্লাস শেষ করি , আমরা আবার সিক্ত হই , আর পানপাত্র ভরতে থাকি , আমরা লঘু কথা বলি , আমাদের স্ত্রী সন্তানদের কথা হয় , রুটি রুজির কথা হয় , অফিসের বসের কথা হয় , আয় উন্নতির কথা হয় , আর হটাত করে আঙ্গুরের কথা হয় , ঐ হাফপ্যান্ট পড়া ছেলেটা যে রকম উত্তেজনায় আমাদের জিজ্ঞেস করেছিল সতের আঠার বছর পর অবিকল ঐ ভাবেই জিজ্ঞেস করলো “আঙ্গুর আপা শাহিনকে মেরে ফেলেছে ??” আমরা অবাক হই , আমরা এটা ভেবে অবাক হই , ফারুক আব্দুল্লাহ ব্যাপারটাকে আজো “খুন ” বলছে না কেন , ফারুক আব্দুল্লাহ আমাদের দিকে তাকায়, একটু নড়েচড়ে বসে , তার ভ্রূ কপালের তিন চারটা ভাঁজের সাথে কোন স্বাস্থ্যকর জ্যামিতি তৈরি না করতে পারার ব্যর্থতায় আমাদের দিকে প্রশ্নবোধকতা জারি করে , আমরা অপেক্ষা করি ,
আর আনিস আমাদের মধ্য থেকে মিলিয়ে যায় , ফারুক আব্দুল্লাহ হাসে , আমরা অনুভব করি আমরা আসলে ফারুক আব্দুল্লাহর কথা শুনতে চাই , সে নাকি বেশ বেসামাল জীবন বেছে নিয়েছে , আমরা আগ্রহী হয়ে উঠি তার কথার জন্য
সে হটাত দাঁড়িয়ে যায় , মদের প্রভাবে আমরা ভুলে যাই , যে এটা নেহাত একটা আড্ডা , এখানে কারো বক্তার মত দাঁড়িয়ে যাওয়াটা কেমন যেন , যেহেতু আশেপাশে লোকজন আছে , কিন্তু আমাদের চোখে স্বাভাবিক বলে অনুমোদিত হয়
ফারুক আব্দুল্লাহ তার ধরা গলায় বলতে থাকে
”আমি আসলে প্রতারিত হয়েছি , আমি প্রতিনিয়ত স্বপ্নভঙ্গের শিকার হয়েছি , আমি প্রথম চুমু খাবার পর , বাসায় গিয়ে কেঁদেছি , কারণ আমার চুমুকে যে রকম মনে হয়েছে সেটা আসলে তেমন না , আমি মদের ঘোরকে যেমন ভেবেছি , যেরকম কল্পনা করেছি , সেটা পান করবার পর আমি দেখেছি , সেটা আসলে তেমন না , সাফল্যকে যতটা উত্তেজক ভেবেছি সেটা তেমন নয় ”
ফারুক আব্দুল্লাহ থামে , সে তার গ্লাস ভরে নেয় , আর আমরা খালি করি ।
ফারুক আব্দুল্লাহ বলতে থাকে
“আমরা আমাদের বাবাদের জীবনকে ঘেন্না করতাম , আমরা আমাদের মায়ের দুঃখকে স্যাঁতস্যাঁতে ভাবতাম , কিন্তু অবিকল সেই জীবন পুনরাবৃত্তি হচ্ছে , আমরা ভাণ করি প্রতিনিয়ত, আমাদের বাবাদের মত , আমাদের স্ত্রীরা আমাদের বোনেরা ভাণ করে সর্বদা , যেন আমাদের মায়েরা নিয়ত প্রতিফলিত হছে তাদের ভেতর , আমরা আমাদের সন্তানদের মাথা নিচু করতে শেখাই শক্তির সামনে , যেমন আমাদের পিতারা শিখিয়েছেন আমাদের , আমাদের মায়েরা যেমত তাদের জীবনকে বেঁধেছেন আমাদের ভেতরে , আমাদের পিতারা যেমন আমাদের উপর বর্তেছেন তাঁদের আকাংখার বোঝা , আমরাও তাই করছি । ” এবার আমরা কিছুটা ভাবনায় পড়ে যাই , আমার এটার ভেতর একটা সত্যতা অনুভব করি , শরীরে মদের প্রভাব না থাকলে হয়তো আমরা এর প্রতিবাদ করতাম , আমরা চিৎকার করে আমাদের সামগ্রিক সংগ্রামের কথা বলতাম , বলতাম আমাদের দিন বদলের কথা , আমাদের সুন্দরী স্ত্রীদের কথা , যারা আমাদের মায়েদের মত দুঃখী নয় , আমরা আমাদের বাবাদের মত গম্ভীর নই ।
এবার ফারুক আব্দুল্লাহ আবার শুরু করে , তার চোখে নৈরাজ্য আর কন্ঠে শ্যাওলা , “আমাদের সম্পর্কগুলো ছিল বড় দেয়া নেয়ার , আমরা আলাদা আলাদা ভাবে অনিরাপদ ছিলাম , আমরা নিরাপত্তার খোঁজে এক ছিলাম , আমরা আমাদের স্বাধীনতা বিকিয়ে দিতে চেয়েছি , আমরা আমাদের ক্ষয়কে ঢেকে যেতে শিখেছি , আমাদের সমস্ত না পাওয়াকে আমরা আমাদের সন্তানদের উপর চাপিয়ে দিচ্ছি , যেমন আমাদের পিতারা দিয়েছেন , আমরা আসলে আমাদের অবদমন , আমাদের ভীতিকে ত্যাগ বলে চালাতে শিখেছি , আমরা অসুখী দাম্পত্য সহ্য করি এই বলে যে আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ ভেবে আমরা এক আছি , কিন্তু সত্য হল আমাদের আসলেই আলাদা হবার ক্ষমতা নেই , আমাদের কোন অতীত নেই , আমাদের যে বর্তমান তা কেবল একটা নিরাপদ ভবিষ্যতের বিনিয়োগ মাত্র ”
ফারুক আব্দুল্লাহ এবার বসে , তাঁকে খানিকটা নির্ভার মনে হয় । সে এবার কণ্ঠ নিচে নামায় , অপ্রয়োজনীয় সতর্কতায় চার দিক দেখে নেয় , আড়াইতলার সব টেবিল খালি , নিচে ডিনার দেয়া হয়েছে মনে হয় ।
“জানেন আমি আঙ্গুর আপার কাছে খুন হতে চেয়েছিলাম, আমার আজও সন্দেহ হয় , খুনটা আদৌ আঙ্গুর আপা করেন নাই , কিন্তু শাহিনকে আমার খুব হিংসা হত , আমার মনে হত ……. ” আমার ফারুক আব্দুল্লাহর ব্যাপারটা ধরতে পারি , ঐ বয়সে আমাদেরও অমন জীবন্ত কিছু কল্পনা ছিল , কিন্তু আমার ফারুক আব্দুল্লাহর জন্য কষ্ট অনুভব করি , কারণ আমাদের মত ফারুক আব্দুল্লাহও জানে আঙ্গুর আপার ব্যাপারটা , আঙ্গুর আপাকে আমরা বহুবছর ধরে বি এ পড়তে দেখেছি , তার সাথে অনেকের অনেক রকম সম্পর্ক ছিল , তার স্তাবকদের দলে আমাদের এলাকার একজন গুন্ডামত কমিশনার ছিল , যদিও সে বিবাহিত , কিন্তু আঙ্গুর আপার সবথেকে বেশী অধিকার ছিল তাঁর , একবার আমাদের গ্রাম থেকে আসা এক চাচাত ভাইয়ের সাথে আঙ্গুরের প্রেম প্রেম মত হয়েছিল , ঐ কমিশনার এসে শাসিয়ে গিয়েছিল
শাহিনের ব্যাপারটা এর বেশীদূর যায়না , আঙ্গুর পরদিন ছাড়া পায় , সম্ভবত তাঁর কমিশনার প্রেমিকের এখানে কোন অবদান থেকে থাকতে পারে ।
কিন্তু আঙ্গুর অনুভব করে আরও পরে সে কমিশনারের রক্ষিতা ছাড়া কিছুই নয় ,
এটা নিয়ে হয়তো তাদের কথা কাটাকাটি হয়
কিংবা অন্য কিছু
আমরা জানতে পারিনা , কেননা আমরা জানতে চাইতাম না , আমরা আঙ্গুর আপাকে ভয় পেতাম , ফারুক আব্দুল্লাহর সাধ ছিল খুন হবার , কিন্তু আমরা খুন হবার ভয় পেতাম ।
আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যাই , কোন এক ছুটিতে ফিরে আমরা জানতে পারি , আঙ্গুর পাগল হয়ে গেছে , কিন্তু যে খবরটা আমরা ভুলে যেতে চাই , কিংবা যে কথাটা আমরা নিজেদের কাছে নিজেই গোপন করি , তা হল আঙ্গুর আপা ধর্ষিত হয় ।
তাদের বাড়ির লাগোয়া পুকুর পাড়ে
হয়তো চারজন কিংবা পাঁচজন পুরুষ ছিল
এবং আমরা নিজেদের এটা বোঝাতে সক্ষম হই , আঙ্গুর আসলে কর্মফল ভোগ করছে ।
ইতোমধ্যে আমাদের মদের ঘোর কাটতে শুরু করে
আমাদের স্ত্রীরা আমাদের ফোন দেয় , আধো আধো কণ্ঠে আমাদের সন্তান আমাদের জানায় তাদের প্রতীক্ষার কথা
আমরা ফারুক আব্দুল্লাহর মাতাল বাহাসে যেমত বিভ্রান্ত হয়েছিলাম , তা কাটিয়ে উঠতে শুরু করি । আমরা অনুভব করি ফারুক আব্দুল্লাহর ব্যবচ্ছেদে বড় বেশী নৈরাশ্য , ও বড় বেশী জাজমেন্টাল
ফারুক আব্দুল্লাহ আমাদের সামনে থেকে মিলিয়ে যেতে থাকে
আর বাসা ফিরতে ফিরতে কোন এক সিগন্যালে, লাল বিধিনিষেধে আমাদের আঙ্গুরকে মনে পড়ে , যার হাতে ফারুক আব্দুল্লাহ খুন হতে চেয়েছিল ।