
বাংলাদেশে যারা ইসলামিক পরিবারে বেড়ে উঠে, তাদের মধ্যে একটা আন্ডারস্ট্যান্ডিং কম-বেশী মোটামোটি কাজ করে, সহজ কথায় যেটা হলো- “মিডিয়া সবসময় মুসলিমদের ছোট খাটো ব্যাপারকেও অনেক বড় করে ইনিয়ে বিনিয়ে দেখায়, যেন মানুষ মুসলিমদেরকে, ইসলামকে ভুল বোঝে”। ফতোয়া নিয়ে আমার কখনো মাথাব্যথা ছিলনা। অনেক স্থানীয় হুজুররাই ফতোয়ার অপব্যবহার করে জানি, কিন্তু ঐ যে, মিডিয়া এইসব ঘটনাকে আসলে বেশী করে রসায়ে বলে। অতএব, এইসব নিয়ে চিন্তা করে সময় নষ্ট করে কে?
আসলে বাংলাদেশের মহিলারা, বিশেষ করে গ্রামের মহিলারা যে ফতোয়ার কী পরিমাণ অসহায় শিকার, সে সম্পর্কে হঠাৎ করে জানার সুযোগ আসলো কো-সুপার স্যারের বদৌলতে (এখানে যদিও সবাই বড়-ছোট সবাইকে নাম ধরে ডাকে, এমনকি টীচারদেরকেও, কেন যেন ওয়েস্টের এই কালচার আমি পুরোপুরি রপ্ত করতে পারিনি। বিশেষ করে টীচারদের বেলায়। সুপার আর কো-সুপার দু’জনকেই প্রথমে বলে নিয়েছি ‘দেখেন, আমাদের দেশে আমরা বড়দেরকে কখনো নাম ধরে ডাকিনা শ্রদ্ধা করে। আমি আপনাদেরকে স্যার বলেই ডাকবো, যেমনটা দেশে আমার টীচারদেরকে ডাকি’। প্রথমে দুইজনেই খুব আনকম্ফোর্ট ফীল করলেও, এখন দেখি উলটা দুই’জনেই বেশ খুশী! হয়তো জীবনে প্রথম কোনো স্টুডেন্ট ওনাদেরকে স্যার ডাকছে, তাই! আল্লাহই জানেন! )।
স্যারের সাথে একদিন কথায় কথায় ‘ডুয়েল ইম্পেরিয়ালিজম’র কথা বলছিলাম। কীভাবে মুসলিম মেয়েরা- যারা সত্যিকার ইসলামকে জানতে ও বুঝতে চায়- তাদেরকে একদিকে মাওলানা/মোল্লা/হুজুর দের সাথে ফাইট করতে হয়, অন্যদিকে কীভাবে ওয়েস্টের সাথেও ফাইট করতে হয়। এই ফাইটিং’র মাঝখানে পরে ওদের জীবন মোটামোটি কী রকম ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে যায়।…… কো-স্যার সেদিন হঠাৎ করে ডাকলেন, “তুমি সেদিন ডুয়েল ইম্পেরিয়ালিজমের কথা বলছিলে না?”
“জ্বী স্যার”।
“হুম। সেন্টার যে প্রতি মাসে একটা করে ইন্ডোর লেকচার এরেইঞ্জ করে জানোতো?”
“জ্বী জানি”। ঐ ইন্ডোর লেকচার সিস্টেমটা আমার খুব প্রিয়। কারণ প্রতি মাসেই কোনো না কোনো লেকচারার কোনো না কোনো সাম্প্রতিক বিষয়ে দারুন সব লেকচার দেন! দুইঘন্টার সেশান, আমার দূর্দান্ত লাগে।
“এই মাসের স্লটে এখনো কাউকে ইনভাইট করা হয়নি। আমি তোমাকে ইনভাইট করছি তাহলে”।
আকাশ থেকে ধপাস করে পরলাম, “মানে????!!!”
“মানে হলো এই মাসের লেকচার তুমিই দিবা। বিষয় তোমার ঐ ডুয়েল ইম্পেরিয়ালিজম আর মুসলিম মেয়ে”।
স্যার ব্যাস্ত। ‘আমিতো লেকচারার না, স্টুডেন্ট মাত্র’ বলে প্রতিবাদটাও করার সুযোগ মিললোনা। মাথা ভোঁ ভোঁ করতে করতে আর বাসায় ফেরা হলোনা। সোজাআআ লাইব্রেরী। মোটামোটি যা বই’র সন্ধান পেলাম নেট ঘেটে- বাংলা-ইংরেজী- সবগুলার ডকুমেন্ট ডেলিভারী রিকোয়েস্ট করে বাড়ি ফিরলাম সন্ধ্যায়।
ক’দিন পরে একদিন জিপসী বাসায় ফিরে অবাক! টেবিলে-বিছানায় চারিদিকে বই আর আর্টিক্যাল প্রিন্ট আউটের ছড়াছড়ি! মাঝখানে ল্যাপটপ কোলে নিয়ে উদ্ভ্রান্ত বসে আছি আমি।
ওর অবাক প্রশ্ন “ঘটনা কী?!”
আমি শিউর কার্টূনের মত মানুষ যদি বাস্তবে দেখতে পারতো তাহলে জিপসীও দেখতো আমার মাথার তালু দিয়ে গোল গোল রিং হয়ে ধোঁয়া হয়ে বের হচ্ছে! লেকচার রেডী করার চাপে না, দুঃখে! বাংলাদেশে ফতোয়ার চরম অপব্যবহারের দুঃখ্-খে! ১৯৯৩ সালে আমি কত বড় ছিলাম? ক্লাস ফোরে পড়ি। তখন নিশ্চয়ই আমার পেপার পড়ার বয়স হয়েছিল। কিন্তু তাহলে আমার নুরজাহানের কথা মনে নেই কেনো? জিপসী জিজ্ঞেস করে “নুরজাহান কে?” … নিজেকে মাফ করে দিলাম। যাক, জিপসী যদি ঐ সময়ের নুরজাহানকে মনে করতে না পারে, তাহলে আমার মনে না থাকাটাও যুক্তিসংগত।
কিন্তু প্রশ্নটার উত্তর জানা দরকার। আসলেই, নুরজাহান কে?
আর দশ/বিশটা বাংলাদেশের গ্রামের মহিলার মত নুরজাহানও সিলেটের সাধারণ একজন মহিলাই। আগের জামাই’র সাথে তালাক হয়ে যাওয়ার পর মুতালিব নামের আরেকজনের সাথে যার বিয়ে হয়েছিল। যে মাওলানা নিজে তালাক করিয়েছিলেন, নিজে মুতালিবের সাথে নুরজাহানের বিয়ে দিয়েছিলেন, সে মাওলানাই পরে গ্রামীন পলিটিক্সে জড়িয়ে ফতোয়া দিলেন, নুরজাহান-মুতালিবের সংসার অবৈধ! নুরজাহান ‘জেনা’ করেছে! জামাই-বউ দুইজনকেই ১০১ টা পাথর মারা হলো। নুরজাহানের বৃদ্ধ বাবা-মা’কে পর্যন্ত পঞ্চাশটা করে বেত মারা হলো!! দিনশেষে নুরজাহান অপমান-লাঞ্চনা সহ্য করতে না পেরে বিষ খেয়ে আত্নহত্যা করে।
আমি হয়তো একটু বেশী সেনসিটিভ, তাই সতের বছর আগের নুরজাহানের জন্যে আমার মন খারাপ হচ্ছে। কিন্তু ঘটনা যদি ওতেই থেমে থাকতো তাহলে নাহয় একটা কথা ছিল। ঐ বছরের শেষের দিকেই আরেকজন, ফিরোজাও ফতোয়া’র শাস্তি-অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্নহত্যা করে সালিশের দিনেই। শুধুমাত্র ১৯৯৩ সালেই পত্রিকায় এসেছে খবর অনুযায়ী ফতোয়ায় মেয়েরা আত্নহত্যা করেছে বা খুন হয়েছে এমন নয়জন! আল্লাহ মাবুদ জানেন পত্রিকায় আসে নাই এমন আরো কতজন!!
পরের বছর ১৯৯৪-এ ফেনীর রোকেয়া স্বামী মারা যাওয়ার পর বাবার বাড়ী ফেরত এলে, প্রতিবেশী দুলাল তার সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলে। রোকেয়া প্রেগনেন্ট হয়ে গেলে তাকে বিয়ে করার জন্যে চাপ দিলে গ্রামের প্রভাবশালী দুলাল সবার সামনে তাকে ধর্ষন করে (এটা যে বাংলাদেশ আমার বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে!), উলংগ করে চুল ধরে উঠানে টেনে এনে গ্রামের সবার সামনে পিটিয়ে অর্ধ-বেহুঁশ করে ফেলে। সে অবস্থাতেই দুই/তিন দিন তালা দিয়ে একটা রুমে আটকে রাখে। আর অবশেষে ফতোয়া জারী করেন হুজুর (******* প্লীজ পৃথিবীর সবচেয়ে খারাপ গালিটা ভেবে নিন)। রোকেয়া দোষী সাব্যস্ত হয়। গর্ভবতী রোকেয়াকে অর্ধ-নগ্ন অবস্থায় গাছের সাথে বেঁধে মাথার চুল কেটে দেয়া হয়, আলকাতরা ঢেলে দেয়া হয়। তারপর জুতার মালা পড়িয়ে ঘুরানো হয় পুরা গ্রামে। রোকেয়াও কি আত্নহত্যা করেছিল কিনা, কোথাও আর সে তথ্য খুঁজে পেলাম না।
ঐ বছরেই বগুড়ায় এনজিও সংস্থা ব্র্যাক’র টাকায় লোন নিয়ে গাছা লাগানোয় আরেক হুজুর ফতোয়া দিলেন, নজিমন বেগম যখন ব্র্যাকের টাকায় হাত লাগাইছে, তখনই ওর তালাক হয়ে গেছে ওর জামাইয়ের সাথে! নজিমনের সাথে আরো দশজন মহিলা একসাথে তালাকগ্রস্থা হয়ে পড়ে হুযুরের এক ফতোয়ার জোড়ে!! তাও রক্ষা নাই, নন্দাইলের হুযুর আর উৎসাহী গ্রামবাসীরা মিলে শত শত লাগানো গাছ একসাথে ধ্বংস করে ফেলে, ওগুলো “খ্রীষ্টানদের গাছ”! এক ফতোয়ার ঠেলায় পুরা দেশে এনজিও’র সাহায্যে ঋণ নিয়ে লাগানো হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলার উৎসব পালিত হয়! ৯৪
সালে ‘অথেনটিক’ ফতোয়ার ঘটনা খুঁজে পেলাম সাতটা!
মাজেদা, এনজিওদের ক্লিনিকে গিয়েছিল গর্ভকালীন চেকাপের জন্যে। হুযুর ফতোয়া দিলেন, এই বাচ্চা খৃষ্টান হয়ে জন্ম নিবে, কারণ মায়ের গায়ে “কাফের এনজিও” অস্পৃশ্যদের হাত লেগেছে!! মাজেদার জামাই মাজেদাকে ক্লিনিক থেকে চুল ধরে টেনে হিঁচড়ে ঘরে ফেরত আনে। বাচ্চাটা প্রি-ম্যাচিউর হয়ে জন্ম নেয়। খৃষ্টান হয়ে বেঁচে থাকার (!) ঝামেলা থেকে বেঁচে থাকার জন্যেই হয়তো দুই’দিন পরেই বাচ্চাটা মারা যায়। ……… রুমেনা বেগামের জামাই মারা যাওয়ার পর স্থানীয় হুযুর তার জামাইয়ের লাশের গোসল ও জানাযা পর্যন্ত পরানো নাযায়েয বলে ফতোয়া দেয়। রুমেনা স্বামীর লাশের সামনে তওবা করে সে আর এনজিও ক্লিনিকে দাই’র কাজ করবেনা, জীবনেও আর এনজিওদের ধারে কাছেও যাবেনা। তারপর হুযুর জানাযা পড়ান!!
লেখা অনেক লম্বা হয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছরের লিস্ট দিতে থাকলে এই লেখা হয়তো আর শেষ হবেনা। …… আমার মাথায় খালি একটা চিন্তাই ঘুর ঘুর করছে, আমি আম্মুর পেটে জন্ম না নিয়ে বাংলাদেশের গ্রামে কোনো নুরজাহান, মাজেদা, রুমেনা, নজিমন হয়েও তো জন্ম নিতে পারতাম!! তখন কী হতো? … আমার মনে হয় এভাবে বাংলাদেশের ইসলামপন্থীরা কখনো ভাবেন না। দাঁড়ান, দাঁড়ান, আমাকেও পাথর মারার আগে কেন এই কথা বলছি, তা শুনুন।
ইন্টারেস্টিংলি, বাংলাদেশের ফতোয়া নিয়ে রিসার্চ করতে গিয়ে যা দেখলাম, যাদেরকে ইসলামপন্থীরা ‘মুরতাদ’ বলেন, ‘কাফের’ বলেন, ‘নাস্তিক’ বলেন, ইত্যাদি ইত্যাদি বলেন, একমাত্র তারাই ফতোয়ার নামে এইসব চরম অন্যায় নিয়ে কথা বলেছেন, লিখেছেন, বক্তব্য দিয়েছেন, সোচ্চার হয়ে দাঁড়িয়েছেন, পত্র-পত্রিকায়-জার্নালে লিখালিখি করেছেন, চেষ্টা করেছেন যতটা সম্ভব এই ধরনের পরিস্থিতি কমিয়ে আনতে! কিন্তু অনেক খুঁজেও একজনও ইসলামপন্থী খুঁজে পেলামনা যিনি এই পরিস্থিতির নিন্দা জানিয়েছেন, ফতোয়া পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন, এসব ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন!!!!!!!! আবার মজার কথা হলো, ফিরোজপুরে যখন কিছু মেয়েকে শুধুমাত্র বোরকা-নিকাব পড়ার কারনে হেনস্থা করা হলো, এমনকি রিমান্ডে পর্যন্ত নেয়া হলো, তখন আবার এই ‘নাস্তিক’ ‘মুরতাদ’ ‘কাফের’ ইত্যাদি ইত্যাদি ইনারা একটা ‘টু’ শব্দটা পর্যন্ত করলেন না!!!!!!!!!!!!!!! ইসলামপন্থীরা তখন আবার চরম সরবে গলা শুকিয়ে ফেললেন, দুনিয়া ফাটিয়ে ফেললেন ‘ইসলাম’ গেল গেল বলে!
আমার আজকাল কেন যেন লজ্জা লাগে নিজের জাতির জন্যে। চরম চরম এবং চরম হিপোক্র্যাট একটা জাতির মেয়ে আমি, যারা কিনা নিজের মতের বাইরে দাঁড়িয়ে সত্যকে দেখতে জানেনা। জাতিটা কী করে যেন চরম দু’ভাগে ভাগ হয়ে আছে। অলিখিত নিয়ম, ‘তুমি ইসলাম-পন্থী, ঠিক আছে, সাবধান ফতোয়া নিয়ে কথা বলবানা। সবসময় এনজিওদের বিরুদ্ধে বলবা’। ‘তুমি ইসলাম-বিরোধী, ঠিক আছে, ফতোয়া ছাড়া আর কিছু নিয়ে কথা বলবানা, এনজিওরা যাই করুক না কেন সবসময় এনজিওদের প্রশংসাই করতে হবে’!
যেই ফতোয়ার ঠেলায় এত্তগুলো মেয়ের জীবন চলে যায়, সংসার ভেংগে যায়, ঘরছাড়া-গ্রাম ছাড়া হয়ে যায়, সত্য হলো- ইসলামে ফতোয়া’র লিগাল ভ্যালু মোটামোটি শূন্যের কাছাকাছি। ফতোয়া একজন মুসলিম-জ্ঞানী ব্যক্তির অভিমত/মতামত মাত্র (এখানে মুসলিম-জ্ঞানী ব্যক্তি অর্থ যিনি তার ধর্ম ইসলামকে ভালভাবে জানেন, এর লিগাল ব্যাপারে অভিজ্ঞ)। অন্যান্য ধর্মের মত ইসলামে কোনো রেবাই/ফাদার/পাদ্রী/পুরোহিত সিস্টেম নেই। ‘মুফতি’ বলে কোনো শব্দ রাসূল, এমনকি চার সাহাবা’র যুগেও ছিলনা!!! এইসব শব্দ/টার্ম/আসন গড়ে উঠেছে পরবর্তী যুগে। যখন ইসলাম অন্যান্য ধর্মের সংস্পর্শে এসেছে, সমস্যা বেড়েছে, নিত্য-নৈমিত্তিক জীবনে নিয়ম কানুন জটিল হয়েছে, যুগ জটিল হয়েছে, চাহিদা বেড়েছে। ……… ভাই ও বোন-সবেরা, আমাকে ধরে আবার পাথর মাইরেন না, এইসব আমার কথা না! ২০০৬ সালে Islamic Fiqh Academy’র আলোচনায় সৌদি আরবের ভাইস-মিনিষ্টার অফ জাস্টিস শেখ আব্দুল মোহসেনের আলোচনা খুঁজে বের করে পড়ে দেখেন। ওনি আরো কঠিন করে বলেছেন, “এমনকি যদি কোনো ইসলামিক ইন্সটিট্যুশানও কোনো ফতোয়া জারী করে, যে কোনো সাধারণ মুসলিম ব্যক্তি’রও অধিকার আছে যে সে ইচ্ছা হলে সে ফতোয়া মানবে, অথবা মানবেনা”! বাপরে!!! এইনা হলে ইসলাম! ব্যক্তি-স্বাধীনতা কাকে বলে!!!!
সমস্যা হলো অন্য জায়গায়। মুসলিমরা এখন নামে মাত্র মুসলিম। আম্মু বলে, দাদু নাকি সবসময় আম্মুকে বলতেন “এখন দুনিয়াতে কোনো মুসলিম নাই”! দাদু একটু এক্সট্রিমে বলতেন, আমি বলি “দুনিয়াতে মুসলিম গুনতে গেলে একটু কষ্ট-মষ্ট করে হাতে গুনেই শেষ করা যাবে মনে হয়”! কারন ঠিক কয়জন মুসলিম জানেন কোরানে কী লেখা আছে?? কয়জন জানেন রাসূল তার জীবনে আসলে কী করেছেন, কী করেননি? ইসলামের বেসিক-নলেজ ঠিক কয়জন মুসলিমের আছে?? ……… আমি জানি প্রত্যেক মুসলিমের পক্ষে ইন্ডিভিজ্যুয়ালি কোরান-রিসার্চ করা সম্ভব না। কিন্তু অন্ততঃ বেসিক নলেজ কয়জনের আছে???!!! মাদ্রাসায় যারা পড়ান, পড়েন- তারা ইসলাম মোটামোটি জানেন বলে দাবী করেন। কিন্তু কোন ইসলাম? ওনাদের হুযুরদের শিখানো ইসলাম?? নাকি দুনিয়াদারী ঘেটে নিজে জেনে-বুঝে গবেষণা করে বের করে আনা ইসলাম?? হুযুরদের জানা ইসলামে বাংলাদেশের যে কী অবস্থা, সে তো ফতোয়ার কাহিনী ঘেটেই দেখতে পাচ্ছি।……… কথায় আছে, প্রতি শতাব্দীতে একজন করে মুজাদ্দিদ আসেন পৃথিবীতে, যিনি ইসলামকে নতুন করে রিভাইভ করেন- কতটুকু সত্য এই কথা জানিনা- তারপরও আশা করি, একজন না, এখন শত শত মুজাদ্দিদ আসা দরকার। যারা এইসব ফতোয়াবাজীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। মানুষকে তাদের সত্যিকারের অধিকারের কথা বলবেন। বলবেন, মানুষ কোনো গরু-ছাগল-বাঘ না যে তাকে চেইন দিয়ে, শেকল দিয়ে বেঁধে রাখতে হবে। মানুষ আল্লাহ’র সেরা সৃষ্টি, যাকে ফতোয়া দিয়ে বেঁধে রাখার চেষ্টা চরম বোকামী!!
(আমাকে মাইরেন না, বিশেষ করে পাথর বা বেত!! আমি ছোট! ছোট মুখে কোনো বড় কথা বলে ফেললে, ক্ষমা কইরেন)।