অহঙ্কার পতনের মূল- ভুলে যান এসব মান্ধাতার ধর্মান্ধ কথা;
মূলত অহঙ্কার আকাশের সিঁড়ি।
অহঙ্কার অর্জনের জন্য যা কিছু দরকার, আমাদের সেসব নেই
যাঁদের নাক অনেক উঁচুতে উঠে গেছে, নিজ নিজ কীর্তির ফসলে
আমরা তাঁদের কাছ ঘেসতে পারি না, যদিও
অনেক ইচ্ছেয় আমাদের মন পুড়ে যায়
আর ব্যর্থতায় ‘আঙুর ফল টক’-এর মতো নিছক আত্মপ্রবোধে তাঁদেরকে অভিসম্পাতে বলি, তোমাদের পতন অনিবার্য।
যাঁরা অহঙ্কারী, কী তাঁদের দোষ আমি তা বুঝি না
আমাদের দিকে তাঁরা ফিরে না তাকালে, আমাদের আক্ষেপই বা হবে কেন?
তাঁদের কৃপাচাহনির এতো কী প্রয়োজন আমাদের?
হাত পাতাই যখন জন্মগত অভ্যাস, তখন অহঙ্কারী হওয়া যায় না
আমাদের অহঙ্কারী হওয়া অতীব জরুরি। একজন অহঙ্কারীর তীব্র আত্মসম্মান বোধ আছে। যাঁর আত্মসম্মান বোধ আছে, তাঁকে কখনো অন্যের মুখাপেক্ষী হতে হয় না।
যাঁর দশটি সুদৃশ্য জামা আছে, তিনি ছেঁড়া শার্ট গায়ে জড়িয়ে যেমন সারল্য প্রকাশ করতে পারেন, অহঙ্কার অর্জিত হবার পর তেমনি তিনি ‘নিরহঙ্কার’ নামক আভরণ অঙ্গে ধারণ করতে সক্ষম; আমরা তখন তাঁকে অমায়িক, বিনয়ী, প্রভূত সাধু বিশেষণে অলঙ্কৃত করি।
দৈবাৎ একজন ‘অহঙ্কারী’ মানুষের সাক্ষাত পেলে খুঁজে দেখুন ঠিক কী কী কারণে তিনি অহঙ্কারী হয়ে উঠেছেন। যেসব কারণে মানুষ অপনাকে অহঙ্কারী বলেন,
বস্তুত ওগুলো আপনার কষ্টসাধ্য অর্জন। পরশ্রীকাতরতা আমাদের চারিত্রিক ত্রুটি, অন্যের ভালো কদাচিৎ সহ্য করি। এজন্য আমরা নাক-উঁচু বা অহঙ্কারী শব্দের জন্ম ঘটিয়েছি। ‘অহঙ্কার’ কোনো নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য, আমি তা ভাবি না। সামর্থ থাকলে আপনিও অহঙ্কার প্রদর্শন করুন। আমরা নপুংসক ও অসমর্থ মানুষকে অহঙ্কারী হতে দেখি কি?
আমার প্রিয়তমা স্ত্রী যেদিন বলবেন ‘তুমি আমার অহংকার’, কিংবা আমার স্বজনেরা, বন্ধু ও সঙ্গীরা, এবং আরো অনেকে, সেদিন নিশ্চিত বুঝে নেবো আমার কর্ম একটা উপযুক্ত সুফল বয়ে এনেছিল এ মানুষগুলোর জন্য।
যেদিন শুনবেন, চারপাশের লোকজন বলছে আপনি লোকটা অহঙ্কারী, সেদিন সুখে ও গর্বে আপনার বুক স্ফীত হবে। সবাই অবচেতনেও অহঙ্কারী হতে ভালোবাসে।
আত্মসম্মানবোধ এক অমূল্য রত্ন। তা থেকে অহঙ্কারের উন্মেষ। একজন অহঙ্কারী মানুষকে ভালোবাসতে শিখুন, আর তাঁর মতো অহঙ্কারী হবার সুপন্থাবলি চিহ্নিত করুন। আপনার উত্থান অবশ্যম্ভাবী।
আমার কর্ম আমার অহঙ্কার। অহঙ্কার আমার গর্ব।
১৭ মে ২০১১