ঈদ মানে আনন্দ, খুশী, উৎসব। শব্দটি আরবী ভাষা থেকে এসেছে। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ঈদ সম্পর্কে বলতে গিয়ে ইরশাদ করেন, প্রত্যেক জাতির জন্য উৎসবের ব্যবস্থা আছে। আর এটা (ঈদ) হচ্ছে আমাদের উৎসবের দিন।
[মুসলিম, ১৯৩৮ অংশবিশেষ]
এ খুশী ও উৎসব আবার বিভিন্ন প্রকার। আমাদের দেশেও এ ভিন্নতার কোন হিসাব নেই। হোক না তা বিজাতীয় অর্থহীন ও অশ্লীলতায় ভরপুর উৎসব!
কিন্তু এ উৎসব যদি হয় উপরওয়ালা কর্তৃক নির্ধারিত ও সীমাবদ্ধ তাহলে তো কথাই নেই।
ঈদ প্রতিটি মুসলিম নরনারী, শিশুকিশোর, যুবক- বৃদ্ধ, তরুণ-তরুণীর মনে নির্মল আনন্দের স্নিগ্ধ পরশ বুলিয়ে দেয়। মুসলমানদের জন্য এ যেন এক মহোৎসবের দিন। আমরা মুসলিম হিসেবে এ কথা ভুলে গেলে চলবে না যে, আল্লাহ সু. কর্তৃক আমাদের জন্য বিশেষভাবে প্রাণভরে আনন্দ-উল্লাস করার জন্য এ দু'টি দিনকেই নির্ধারণ করে দিয়েছেন। যেমনঃ হযরত আনাস (রা) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন মক্কা থেকে হিজরত করে মদিনায় এলেন, তখন তিনি দেখলেন, লোকেরা বছরে দু’টি নির্দিষ্ট দিনে খেলাধুলা ও আনন্দ উপভোগ করে। তিনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, এ দু’টি দিন কেমন? তারা বলেন, আমরা ইসলাম আগমনের পূর্বে এ দু’টি দিনে খেলা-তামাশা ও আনন্দ উপভোগ করতাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, আল্লাহ এ দু’টি দিনের পরিবর্তে দু’টি উৎকৃষ্ট দিন নির্ধারিত করে দিয়েছেন। একটি ঈদুল ফিতর এবং অন্যটি ঈদুল আজহা।
-সহীহ বুখারি ও মুসলিম
কিন্তু ইদানিংকালে তথাকথিত নতুন প্রজন্ম বা আধুনিকমনা কিছু তরুণ তরুণীরা ঈদের দিনের আনন্দকে অতিরঞ্জিত করে পালন করা ছাড়াও কিছু বিজাতীয় উৎসবের দিনগুলোর প্রতি তাদের গভীর টান লজ্জাজনক বৈ কিছুই নয়। এ কথা স্বীকার করতে কোন দ্বিধা নেই যে, অন্য সকল ধর্মের ন্যায় মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব 'ঈদে' অশ্লীলতার ছিঁটেফোঁটাও নেই। উপরন্তু প্রাণপ্রিয় নবী সা. ও সাহাবাদের আমল থেকে প্রমাণিত হয় এ দিনে বেশি বাড়াবাড়ি না করতে কঠোর নিষেধাজ্ঞা করা হয়েছে।
তবে কেন আমরা বিজাতীয় আগ্রাসনের স্রোতে গা ভাসিয়ে দিয়েছি? কবে হুঁশ ফিরবে এ জাতির, কবে বোধদয় হবে এ প্রজন্মের? এমন প্রশ্নের জবাবে আমরা প্রতিমুহূর্তই উন্মুখ হয়ে আছি। আল্লাহ সু. আমাদেরকে সুষ্ঠু জ্ঞান দান করুক। আমীন।
সেইসাথে আসুন ঈদের খুশী আর আনন্দকে নিছক আনুষ্ঠিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে একে ভাগ করে নেই সবার সাথে। হাত বাড়িয়ে দেই সবার দুখে। তবেই হয়ত স্বার্থক হবে এ উৎসব, ইবরাহিমের সেই কুরবানী।
বিজাতীয় সংস্কৃতি নয় ইসলামেই রয়েছে সর্বকালের সেরা সংস্কৃতি। তাই এ সেরা সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধি করা আমার আপনারই দায়িত্ব।