সম্পাদক-সংকলকদের প্রদত্ত তালিকা থেকে জানতে পারি আমারও একটা লেখা সেখানে আছে। কারও কারও মতো আমার কাছ থেকেও অনুমতি নেয়া হয়নি, যা নেয়া অবশ্যই উচিত ছিল। কিন্তু নেয়া হয়নি বলে আমি মনে করছি না তারা বিশাল অন্যায় করেছেন, আমার অজান্তে আমাকে বেইচা দিয়া টাকা কামাইতেছেন।
যদ্দূর মনে পড়ে কৌশিক জানুয়ারি মাসে পোস্ট দিলেন অপরবাস্তব ২ বেরুচ্ছে না, কিছু কারণ তিনি দেখিয়েছিলেন। তারপর একসময় দেখলাম বেরুচ্ছে। ২১ তারিখে, মানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে, আমাদের একুশে ফেব্রুয়ারিতে।
আর্থিক ও অন্যান্য প্রস্তুতি যথেষ্ট না থাকা এবং শেষ মুহূর্তে ২১ তারিখকে টার্গেট করার কারণে, আমার অনুমান হয়, একটা ননপ্রফেশনাল এপ্রোচ নিতে হয়েছে তাদের। পত্রিকা-পুস্তক ছাপানোর খানিক অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এরকম হতে পারে, যদি না কপিরাইট-মুদ্রণমান-পেশাদারিত্ব ইত্যাদি আপনার মাথায় না থাকে। যারা নানান 'উন্নত' দেশে থাকেন, সেই সব ব্লগাররা কপিরাইট বিষয়টা নিয়ে যতটা সচেতন, বাংলাদেশের মানুষদের কাছ থেকে সেই সচেতনতা আশা করা উচিত নয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে কপিরাইটের কড়াকড়ির বিপক্ষে, কপিলেফটের পক্ষে। সেটা অবশ্য অন্য আলোচনার বিষয়।
প্রকাশক-সংকলকরা ছাপানোর পূর্বে নির্বাচিত লেখা ও লেখকদের হতালিকা দিয়ে একটি পোস্ট দিয়ে সেই পোস্টেই সবার অনুমতি প্রার্থনা করতে পারতেন। যারা ছাপতে চাননা, তারা জানিয়ে দিতে পারতেন, এবং সেই লেখা না ছাপলেই চলতো।
মাঝে জানা গেল হেকিম সাহেব (সর্দারজি) নাকি নিষেধ করার পরেও তার লেখা ছাপা হয়েছে। অনুমতি ছাড়া ছাপায় আপত্তি জানিয়েছেন মৈথুনানন্দ ও মাহবুব মোর্শেদ। সম্ভবত মাহবুব সুমনও আপত্তিকারকদের তালিকায় আছেন, নিশ্চিত নই তার লেখা নির্বাচিত হয়েছে কিনা। বাকিদের কারও কারও মৌখিক সম্মতি নেয়া হয়েছে, কারও কারও সঙ্গে যোগাযোগ করাই হয়নি।
সংকলকরা প্রথম থেকেই বিষয়টাকে ফানি কিছু একটা হিসেবে ব্লগারদের সামনে হাজির করেছেন, যেটা তাদের দ্বিতীয় ভুল। কিন্তু আমি তাদের এসব ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে আগ্রহী। কারণ তারা এটা করেছেন ব্লগটাকে ভালবেসে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানের ভেতরের ব্যক্তিদের কথা আলাদা আলাদাভাবে তারা ভাবেন নাই, সেটা তৃতীয় ভুল। এই ভুলটা অবশ্য ক্ষমার অযোগ্য, যেই ভুলের মাশুল তারা দিচ্ছেন, কৌশিক বিদায় নিচ্ছেন ইত্যাদি। সেই ভুলের ফাঁকে যাদের লেখা তারা নির্বাচন করেননি তারাও একচোট ক্ষোভ প্রকাশ করে নিচ্ছেন।
তবে তারা চোর, একথাটা বলা খুব 'আনকাইন্ড' হবে। তাদের কাঠগড়ায় অনেকক্ষণ রাখা হয়েছে, এবার আমরা থামতে পারি। কচলাকচলির কারণে লেবু ইতোমধ্যে তিতা হয়ে গেছে।
আমি অপরবাস্তব ২-এর সাফল্য কামনা করি। আগামী বছর অপরবাস্তব ৩ সম্ভবত এরকম অনাকাঙ্ক্ষিত বিতর্ক ছাড়াই বের হবে, সেই আশাবাদ ব্যক্ত করি।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সকাল ৮:৩৩