১)
ইয়েল ইউনিভার্সিটির কয়েকজন গবেষক কসাই খানা থেকে ৩২টা শুয়োরের কাটা মাথা বিনে পয়সাতেই নিয়ে আসলো ল্যাবে।কসাই এগুলো ছয় ঘন্টা আগে কেটে গোস্ত ততক্ষনে বিক্রি করে ফেলেছে। মাথাগুলো ফেলেই তো দিবে, কিন্তু এত ভালো ইউনিভার্সিটির গবেষক যখন আব্দার করে তখন আর কি সে ফেলতে পারে। গবেষক সেই মাথাগুলোকে এনে তাতে অক্সিজেন ও প্লাটিলেট সমৃদ্ধ রক্ত ইনফিউজ করা শুরু করে। ব্রেনের কোষ কিছুক্ষন পরেই সতেজ হওয়া শুরু করে। কোষগুলো অক্সিজেন গ্রহন করছে এবং স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে আসছে। যদিও কিছু অংশ তখনও নিস্তেজ ছিলো, গবেষক সাহেব এ্যানোড ক্যাথোড দিয়ে দিলো শক! লে কাদিরা! সেগুলোও কাজ করা শুরু করলো। এখন আপনারা যদি মনে করেন শুয়োরের মাথাগুলো চোখ খুলে পিট পিট করে তাকিয়ে কান দুলিয়ে গান গাওয়া শুরু করছে সেটা ভুল। তবে ব্যাসিক ফাংশন শুরু করা মানে তার সাবকনশাস মাইন্ড বা চেতনা, যেটাই বলি, সেটা চালু হয়েছিলো। এবং সর্বোমোট ৩৬ ঘন্টা সেগুলোকে সজীব রাখার পর বন্ধ করে দেয়া হয়।
২)
বৈরাগ্যবাদ অনুসারে আপনি নীতি নৈতিকতার বাইরে কিছু করবেন না। আপনি একদিন মারা যাবেন, এটা যেমন সত্য তেমনি সত্য যতদিন বেচে থাকবেন আপনার জীবনে দুঃখ হাসি কান্না থাকবেই। হ্যালেনেস্টিক সময়ের রাজা অরেলিয়াস বিশ্বাস করতেন আপনি যদি ঈশ্বর বিশ্বাসী না হয়েও সৎ এবং নীতি নৈতিকতার মধ্যে জীবন পার করে দেন, তাতেও সমস্যা নাই।
অনেক জঙ্গি হুজুর অবশ্য ওয়াজে একটা দারুন চুটকি বলে শ্রোতাদের মুগ্ধ করতে সেটা হলো আপনি যদি বিশ্বাসী হয়ে মারা যান তাহলে মৃত্যুর পর ঈশ্বর না দেখেন কোনো ক্ষতি নেই। আর যদি থাকে তাহলে নগদে জান্নাতুল ফেরদৌস সাথে বেশ কিছু গেলমান (হুরের কথা উল্লেখ করলাম কারন টাদের সনদ হাসান)। আর যদি অবিশ্বাসী অবস্থায় মৃত্যুবরন করে ঈশ্বরের সামনে গিয়ে দেখেন উনি গুংনীড় হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছে, তাহলেই সেরেছে। এটাকে প্যাসকেলের ধাধা বলা হয়। তবে প্যাসকেল আমাদের আলোচনার মোটিভ না। এত বিশাল প্যাক প্যাক করার ইচ্ছেও নাই। বরংচ আমি সেই পুরোনো ধ্যান ধারনার অরেলিয়াসের কথাই বলবো যাকে বলা হতো হ্যালেনিস্টিক পিরিয়ডের শ্রেষ্ঠ সম্রাট। তিনি নিজেকে এতটাই যুক্তি ও নীতিবোধে আবদ্ধ করেছিলেন যে একসময় নিজেকে উদ্দেশ্য করে আস্ত বই লেখেন। সেখানে উল্লেখ করেন আমি কিসে বিশ্বাস করি বা কোন ধর্মের অনুসারী সেটা মূখ্য নয়। আমি যদি সৎ কাজ করে মারা যাই, আমার বিশ্বাস না থাকলেও ঈশ্বর আমাকে ভালোবাসবেন। কারন ঈশ্বর এতটা নিষ্ঠুর, অবিবেচক নন। তিনি জোর দিয়েছিলেন এমন কাজ করতে যার মধ্যে আনন্দ পাওয়া যায় তাও সীমার মধ্যে, এবং সবসময় মানুষের জন্য যা ভালো হবে সেটা করা উচিত।
প্রশ্ন আসতে পারে এই যে নীতি নৈতিকতা ভালো মন্দ কে নির্ধারন করবে। ধর্ম না দর্শন? আবার ধর্ম ভেদে নীতি নৈতিকতার পার্থক্য দেখা যায়। আর নীতি নৈতিকতার উদ্ভবই বা কোথা থেকে? এর দায়বদ্ধতা কার প্রতি।
এগুলো খুব মৌলিক প্রশ্ন। দায়বদ্ধতা যদি নিজের সত্বার কাছে হয় তাহলে সেই সত্বাটা কোথায়? আমাদের দেহে? অবশ্যই। কারন আমার দেহ বিনে সত্বা যেন আলু ছাড়া সমুচা (নাহ!উদাহরন টা যুতসই হলো না, টক ছাড়া ফুচকা...ইয়াপ, এটাই যুতসই)। এবং আমাদের চিন্তা চেতনার বড় একটা অংশ বিশ্বাস দ্বারা পরিচালিত। তাহলে দেখা যাচ্ছে নীতি নৈতিকতা, সত্বা, বিশ্বাস, সত্য এগুলো বেশ নিবিড়ভাবে সম্পর্কযুক্ত।
তার আগে একটা উদাহরন দেই। দেখা গেলো রাস্তা দিয়ে এক সুন্দরী হেটে যাচ্ছে। চুলগুলো আকাশে উড়ছে। স্লিম ফিগার, কামিজের নীল সিল্কি কাপড়ে বোঝা যায় চামড়ার হলুদাভ সাদাটে রং। চোখে মুখে হাসি একবার কারো চোখে পড়লে হা হয়ে গিলতে হয় তার সৌন্দর্য। বলতে পারেন অসাম। এমন সময় বিপরীত দিক থেকে হোন্ডায় চড়ে দুজন যুবক তাকে পাশ কাটানোর সময় বোতল ভর্তি এসিড ছুড়ে মারলো এবং এসিডের বোতল পুরোটা খালি করে সেটা তার মুখেই ছুড়ে মারলো। অমনি কাচ ভেঙ্গে মেয়েটার মাথায় ঢুকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লো। কি বিভৎস!
ঘটনার এই বর্ননা সবার কাছে একরকম হবে না। যে ভিক্টিম সে বেচে নেই আর যদি বেচেই থাকতো তার বর্ননা এরকম হতো না। হুট করে কিভাবে কিযেন এসে মুখে পড়লো আর শরীরে জ্বলুনি শুরু হলো। অমনি কিছু একটা মুখে আঘাত লাগায় জ্ঞান হারালাম।
রাস্তার পাশে দাড়িয়ে থাকা মোল্লা বলবে খুল্লাম খুল্লা বেপর্দা মেয়ে মানুষ রাস্তায় ঘুরবে, ঠিক শাস্তি হইছে। দুটো ছেলে এসে মুখে কি যেন মারলো ব্যাস রুপ যৌবন গেলো কই। দুই দিনেরই দুনিয়া।
একটি শিশুকে জিজ্ঞেস করলে বলবে একটা আপু হেটে যাচ্ছিলো অমনি দুটো ছেলে এসে পানি মারলো তারপর কাচের বোতলটা মুখে মারতেই রক্ত বেরুলো।
আবার অফিসে যাওয়া কোনো যুবকের ভাষায় হঠাৎ একটা চিৎকার শুনেই দেখি মেয়েটিকে দুটো ছেলে আক্রমন করলো। তারপর তো রক্তারক্তি।
এলাকার মুরুব্বিকে জিজ্ঞেস করলে উত্তর পাবেন এলাকাতে বখাটেদের পরিমান বেড়ে গেছে। ঐ এসিডের দোকান খোলার সময়ই বুঝতে পেরেছি এমন কিছু হবে। আমি আগে থেকেই এলাকার মেয়েদের সাবধান করতাম, কে শোনে কার কথা। হলোও তাই। এসিড মেরে শেষ করে দিলো। দেশটা রসাতলে
এখানে ঘটনার মৌলিক পরিনতি একই থাকলেও একেকজনের বর্ননা একেকরকম এবং এগুলোর মধ্যে কিছু থাকে একটু প্রভাবান্বিত, একটু ক্ষোভ, একটু ক্ষেদ, একটু বিস্ময়ের মিশেল।
পরমসত্য এদের মুখে খুজতে গেলে একটু মুস্কিল হবে। দর্শনের ভাষায় পরম সত্য হলো সেই ঘটনা বা কথন যেটা সময় কাল পাত্র ভেদে অপরিবর্তনীয়। ইউক্লিডের জ্যামিতি যদি মনে থাকে তাহলে দেখবেন শুরু করার আগে বিন্দু, রেখা ও বৃত্তের রেফারেন্স টেনে আনা হয়েছে। এমনকি একটু এগুলে ত্রিভুজের যে প্রমানটা আসে সেটাও পরমসত্য। কারন আপনি মহাবিশ্বে যেখানেই যান দুটো বিন্দুর যোগফল সরলরেখা হবে। বাকালে নিশ্চয়ই তার চূড়া থাকবে এবং সেটা আর সরলরেখা থাকবে না। বাস্তবজীবনে সেটা পাওয়া যায় না।
তাহলে মানুষ যে এতকিছু বিশ্বাস করে এটা কি? প্লেটোর বই থেকে জানতে পারি সক্রেটিস মারা গেছে তার সমর্থনযোগ্য পরম বিশ্বাসের কারনে। যদিও আমি ব্যাক্তিগতভাবে মনে করি পাগলের ঘাড়ত্যাড়ামিতে অতিষ্ঠ হইয়া তখনকার লোকজন বাটাম দিছে, ভালো হইছে।
সমর্থযোগ্য পরম বিশ্বাসটা কি?
ঘটনা ১:মজনু ভাত খায়
ঘটনা ২: আমি ঘটনা ১ কে বিশ্বাস করি
ঘটনা ৩: আমার নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস আছে বলেই আমি ঘটনা ২ এর ওপর বিশ্বাস করি।
কথা হলো আমাকে যদি কাল পাগল হিসেবে ঘোষনা করা হয় বা চুরির ঘটনায় ফেসে যাই তাহলে উপরের ঘটনা ১ মিথ্যা হয়ে যাবে। কারন এই যে বিশ্বাস করার মূল চালিকাশক্তি এখানেই সমস্যা দেখা দিয়েছে।
আমি আগের পোস্টে দেখিয়েছিলাম রেনে দেকার্ত "এরগো কগিটো সামের" মাধ্যমে নিজের সত্বাকে কিভাবে প্রমান করেছেন এবং তারই ধারাবাহিকতায় তিনি প্রমান করলেন ঈশ্বর আছেন। সমস্যা হলো তার কয়েক দশক পর আইরিশ দার্শনিক হিউম প্রমান করে দিলেন আপনার যে সত্বাটা আছে সেটা কখনোই নির্ভুল নয়। তার মানে আপনি আসলে আছেন তার চেয়ে বড় কথা আপনি নিজের সম্পর্কে কতটুকু নিশ্চিত। যদি তাই হয় তাহলে এটাও প্রমান করা যায় ঈশ্বর নেই।
হিউমের এই ঘটনার পর দর্শন আবার সেই পুরোনো জায়গায় ফিরে আসলো। যদি বিশ্বাসটাকে এভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করি তাহলে এটা কি? তখন ভ্যান ডার ওয়ালশ নামের এক গনিতবিদের ডায়াগ্রাম দিয়ে অয়েলার সহ অনেকেই একটা ব্যাখ্যা দিলেন সেটা হলো সত্য ও বিশ্বাসের পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার কিছু অংশ জ্ঞান আর কিছু অংশ প্রায় পুরোপুরি অসমর্থযোগ্য পরম বিশ্বাস।
প্রায় পুরোপুরি অসমর্থযোগ্য পরম বিশ্বাস শুনতে একটু হেয়ালীপূর্ন মনে হলেও সোজা বাংলায় বলি সত্য মিথ্যার মিশেলে আপাতঃ একটা ধারনা। যদি আমরা এটা বুঝতে না পারি তাহলেও চলবে কিন্তু এতটুকু আলোচনায় আমরা এটা তো বুঝলাম যে পরম সত্যের মধ্যে যখনই বিশ্বাস জিনিসটা ঢুকে যায় তখনই সেটা আর পরমসত্য থাকে না।
তাহলে নীতি নৈতিকতা সরাসরি বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কযুক্ত কারন কোনটা ভালো কোনটা মন্দ এটা ধারন করতে হলে আপনাকে বিশ্বাসের জায়গায় নিতে হবে। নীতি নৈতিকতার অর্থ দার্শনিক মতেও নড়েবড়ে হয়ে গেলো। এখন কি হবে? সেক্ষেত্রে নীশে একটা প্রস্তাবনা দিলেন। প্রতিটি মানুষের আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে নিজের জীবন অতিবাহিত করার অধিকার আছে এবং সেটার জন্য যে সুখের প্রয়োজন সেটা নির্ধারন করা যায় সে কোন কাজে সুখ/আনন্দ পান। কিন্তু সে কাজগুলো যেনো অন্যের ক্ষতির কারন না হয়। এক্ষেত্রে প্রশ্ন আসতে পারে যে কাজটা আমার জন্য ভালো সে কাজটা অন্যের ক্ষতি বয়ে আনতে পারে। তার মানে যিনি ভালো কাজ করেন তিনি খারাপ কাজটিও করছেন। সেক্ষেত্রে সমাজের বিচারপতি তারা হয়ে যাবেন সবচে ভয়ংকর কারন তারা একই সাথে ভালো আবার মন্দ এবং তারা ইচ্ছে বা অনিচ্ছে সত্বেও একটা ভয়াবহ সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবেন। তখন আপনাকে বেছে নিতে হবে কোন কাজগুলো পরম কল্যানকর এবং যেটা আপনি আমি যেই করি সেটা সর্বক্ষেত্রে কল্যানকর হবেই। এরকম সম্মিলিত কল্যানকর কাজগুলোকে রেফারেন্স ধরে একটা গোষ্ঠির মানদন্ড/ন্যায়দন্ড নির্ধারন করা গেলে গড়ে তোলা যাবে আদর্শ একটা ব্যাবস্থা। এখন আপনার মনে আরো প্রশ্ন জাগতে পারে এই মানদন্ড বা স্কেলিং কিভাবে নির্ধারন করবো।
রেনেসার পর থেকেই বৈজ্ঞানিক ফ্রেমওয়ার্কগুলো এভাবেই তৈরী করা হয়েছে। অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানই হলো বিজ্ঞান এবং সেক্ষেত্রে যিনি বছরের পর বছর আবহাওয়া জমির মাটি এবং বাজার পরিস্থিতি দেখে ফসল ফলানোর সিদ্ধান্ত নেন এবং তার পরিচর্যা করেন সেই কৃষকও একজন বিজ্ঞানী। তাকে যদি একটা ব্যারোমিটার দিয়ে শিখিয়ে দেয়া হয় কিভাবে প্রেসার দেখে বৃষ্টির পূর্বাভাস দেয়া যায় তাহলে সে বলে দিতে পারবে আগামী দিনে কি করতে হবে। এবং আরেকটু গানিতিক জ্ঞান ও সুপার কম্পিউটারে বসিয়ে দিলে পুরাই অসাম। সে আগামি ছয় মাসের পূর্বাভাস নিয়ে নিশ্চিন্তে একটা ফ্লোচার্ট করবে। বিজ্ঞানের এই অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান দিয়ে শুধু অতিতের বর্ননা এবং ব্যাখ্যা ভিন্ন আঙ্গিকে দেখার সাথে সাথে ভবিষ্যতে কি হতে পারে সে ব্যাপারেও বেশ নিখুত একটা ধারনা পেতে পারি।
তার মানে এখানে দেখা যাচ্ছে বিশ্বাসের অবস্থানটা পরিবর্তিত হয়ে ফলাফল সমূহ সত্যের দিকে বেশী ধাবিত হচ্ছে যদিও তা পরম নয়।
সেক্ষেত্রে আমরা এটা কি বলতে পারি না বিশ্বাস নিজেও একটা মরিচিকা এবং এর ওপর ভিত্তি করে কেউ যদি অন্ধবিশ্বাসী হয় তাহলে সেটা কি পরিমান ভয়াবহ পরিনাম ডেকে আনবে?
৩.
ন্যানোটেকনোলজী যেভাবে এগুচ্ছে এবং এআই যেভাবে সব কিছু দখল করে নিচ্ছে তাহলে দেখা গেলো একদিন আমি এমন মেশিন বানালাম যে কিনা আমার মতোই ভাবতে পারে, নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং নিজের বংশবৃদ্ধি করতে পারে। তাহলে যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে গেলে তার আত্মা কি ঘুরে ঘুরে বেড়াবে? কখনোই না।
বায়োলজির ভাষায় সিন্থেটিক লাইফ অথবা কগনিটিভ সেন্স প্রখর করে আমার ক্লোন রোবট বানালাম। সেটা অবিকল আমার কাজটাই করছে, আমার মতোই স্বপ্ন দেখছে, মেয়ে পটাচ্ছে। হঠাৎ কোনো কারনে রোবটটি মারা গেলো। এখন তার আত্মা কি আকাশে ঘুরে ঘুরে বেড়াবে?
অবশ্যই না, কারন সে যন্ত্রের তৈরী। আচ্ছা আমার রোবট টিকে যদি আমি সিন্থেটিক বায়োলজীর কল্যানে রক্তে মাংসে ইনভিট্রো করি তাহলে? তাহলে সে মারা গেলে তার আত্মা কি উড়ে উড়ে বেড়াবে?
৪.
পর্তুগীজ একজন দার্শনিক ছিলেন নাম ইউরিয়েল দি কস্তা। ভদ্রলোক ক্যাথোলিক হলেও দর্শনের বই পড়ে বুঝতে পারলেন আত্মা বলে কিছু নেই। এ নিয়ে বেশ কিছু প্রবন্ধ লিখলেন। তখনকার সময়ে চার্চের প্রভাব বেশী থাকায় পর্তুগাল বেশিদিন থাকতে পারলেন। পাড়ি জমালেন নেদারলয়ান্ডে এবং একটা চশমার দোকনে কাজ শুরু করলেন। তখন তিনি জানলেন ইহুদীদের রাব্বিনিক স্যাক্ট তার এই চিন্তাধারায় বিশ্বাসী। তারা মনে করে আমরা সবাই জড় পদার্থের তৈরী এবং মরে গেলে আমাদের এখানেই সমাপ্তি হবে এবং আত্বারও নাশ হবে। যদিও এই স্যাক্টের দার্শন একটু জটিল কিন্তু এর মধ্যে কিছু অসামন্জস্য থাকায় কিছুদিন পর এটিও ত্যাগ করলেন।
৫.
ওপরে চারটা প্রবন্ধের পয়েন্ট হলো পরম সত্য আমরা যদি নিজের মতো করে পর্যবেক্ষন এবং পর্যালোচনা করতে চাই তাহলে ভুল হবে। এর জন্য দরকার এমন যুক্তি যেটার মানদন্ড সুনির্দিষ্ট কিছু দ্বারা পরিমাপযোগ্য। এবং তার ফলাফল যেনো মানব সমাজের কাজে লাগে সেক্ষেত্রে বিজ্ঞান বা অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানের সমন্বয় প্রয়োজন। এখানে দার্শনিকদের ভৌগলিক অবস্থা, তাদের জীবনধারনের ইতিহাস, কই হাগলো, কই পাদলো এগুলো অমূলক। আমাদের বুঝতে হবে প্রতিটা সত্যের পেছনে লুকিয়ে থাকা অন্তর্নিহিত বানী। হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসা বিশ্বাস প্রয়োজন নয় যে আমাদেরকে তা অনুসরন করতে হবে। আমাদের দরকার হলো পরমসত্যের ব্যাখ্যা সঠিক ভাবে তুলে ধরা, তাহলেই দ্বন্ধ থেকে দূর থাকতে পারবো।
আর তখনি আপনার মাথায় হাত বুলিয়ে বলবে,"ডুগতিগ পইক্কা" মানে বুদ্ধিমান ছোকড়া!