somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আইএসআইএস কি সহিভাবে জিহাদ করছে? জঙ্গিদের সহী ইসলামী জিহাদ নিয়ে একটু অনুসন্ধানী পোস্ট পর্ব ২

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৩:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের পর্ব

সতর্কতা: এই পোস্টের কিছু কিছু লিংক এবং সে সম্বন্ধে ঘাটাঘাটি করতে চাইলে অবশ্যই ভিপিএন দিয়ে টর ব্রাউজার ইউজ করবেন। দেশে হয়তো এতটা নজরদারী করবে না কিন্তু দেশের বাইরে নিজ দায়িত্বে করুন। যদি আপনি প্রাকটিসিং মুসলমান হন তাহলে বিশেষ সতর্কতা গ্রহনের অনুরোধ রইলো


আত্মঘাতী জিহাদ:



আল কায়েদা, হিজবুল্লাহ বা আইএসআইএস যেভাবে আত্মঘাতী বোমা হামলা ঘটায় এই অপারেশনকে বলা হয় আমাদিয়া ইশতিশহাদি এবং এধরনের আক্রমনকে বলা হয় ইনঘিমাস। আমরা সচরাচর যখন কোনো আলেম ওলামাদের সাথে কথা বলি তখন তারা বলেন ইসলাম এটা বৈধ নয় এবং এই শব্দগুলো উচ্চারন করেন না। অথচ আপনি যখন এই শব্দগুলো জেনে একটু খোজ খবর নেবেন তখনি জানতে পারবেন দ্বীনের জন্য আত্মঘাতী হওয়া আসলেই ইসলামে বৈধ কিনা।
এখানে আইএসআইএস সমর্থিত দাওলাতেরএকটা চমৎকার সাক্ষাৎকার আছে যেটা আপনারা একবার পড়ে নিতে পারেন তাদের এই জঙ্গি আক্রমনের পেছনে কি বক্তব্য বিদ্যমান। আমি নীচে সেই বৈধতা বিষয়ক কোরান ও স হী হাদিসের দলিল পেশ করলাম এবং তার সাথে প্রচলিত আত্মহত্যা দিয়ে আসলেই ইনঘিমাস বা ফিদায়ী যুদ্ধে আমাদিয়া ইশতিশহাদির ব্যাখ্যা দেয়া যায় কিনা সে বিষয়েও আলোকপাত করার চেস্টা করলাম

কোরানের সূরা আল বুরূজ আয়াত নম্বর ৪-৮:

অভিশপ্ত হয়েছে গর্ত ওয়ালারা অর্থাৎ, অনেক ইন্ধনের অগ্নিসংযোগকারীরা; এবং তারা বিশ্বাসীদের সাথে যা করেছিল, তা নিরীক্ষণ করছিল।তারা তাদেরকে শাস্তি দিয়েছিল শুধু এ কারণে যে, তারা প্রশংসিত, পরাক্রান্ত আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল,

ক্বাথীরের তাফসীর অনুসারে, অতঃপর জনৈক বালককে হাজির করা হল। তাকে বলা হল তুমি তোমার দ্বীন ত্যাগ কর। সে প্রত্যাখ্যান করল। অতঃপর তাকে তার একদল লোকের হাতে দেয়া হল এবং বলা হল যে, এই বালককে অমুক পাহাড়ে নিয়ে যাও এবং পাহাড়ের একেবারে চূড়ায় উঠে যাবে। যদি সে তার দ্বীন ত্যাগ করে তাহলে ভাল, নতুবা তাকে পাহাড় হতে ফেলে দেবে । লোকেরা তাই করল। যখন তাকে নিয়ে তারা পাহাড়ের চুড়ায় পৌঁছে গেল তখন ঐ বালক দোয়া করল, হে আল্লাহ! তুমি যেভাবে চাও, আমার বিরুদ্ধে তাদের ব্যাপারে যথেষ্ট হয়ে যাও। অতঃপর পাহাড় প্রচণ্ডভাবে কেপে উঠল এবং ঝাঁকুনি দিল। এতে তারা সকলেই পাহাড় হতে পড়ে মারা গেল। বালক পায়ে হেঁটে বাদশাহর নিকট এল। বাদশাহ বলল, তোমার সাথে যারা গিয়েছিল তারা কোথায়? বালক বলল, তাদের হাত থেকে আল্লাহ আমাকে রক্ষা করেছেন। বাদশাহ আবার তার সৈনিকদের হুকুম দিল যে, এই বালককে একটি নৌকায় তুলে নাও, অতঃপর যখন সাগরের মাঝে চলে যাবে, তখন যদি সে দ্বীন ত্যাগ করে তাহলে ভাল, নতুবা তাকে সমুদ্রে ফেলে দাও। লোকেরা তাকে নিয়ে সমুদ্রের মাঝখানে চলে গেল। বালক বল, হে আল্লাহ! তুমি যেভাবে চাও, আমার বিরুদ্ধে তাদের ব্যাপারে যথেষ্ট হয়ে যাও। সঙ্গে সঙ্গে ঐ নৌকা উলটে গেল। ওরা সব মরে গেল। বালক হাঁটতে হাঁটতে বাদশাহর দরবারে চলে আসল। বাদশাহ বলল, ওহে! তোমাকে যারা নিয়ে গেল তারা কোথায়? বালক বলল, আল্লাহ তা'আলা তাদের হাত থেকে আমাকে রক্ষা করেছেন আর তাদের ধ্বংস করেছেন। এরপর বালক বলল, তুমি এভাবে চেষ্টা করে আমাকে মারতে পারবে না, যতক্ষণ না আমার পরামর্শ অনুযায়ী কাজ কর। বাদশাহ বলল কী সেই কাজ? বালক বলল, তুমি সব মানুষকে একটি বড় মাঠে জড়ো করবে এবং একটি উঁচু গাছে শুলিতে আমাকে চড়াবে,অতঃপর আমার তীরের থলি হতে একটি তীর বের করবে, এরপর তীরটিকে ধনুকের রশিতে লাগাবে। অতঃপর বলবে, 'এই বালকের রব আল্লাহর নামে তীর নিক্ষেপ করছি।' এভাবেই তুমি আমাকে হত্যা করতে পারবে। বাদশাহ তাই করল। সমস্ত মানুষকে একটি মাঠে জমা করল।অতঃপর বালককে গাছের শাখায় চড়ানো হল। এরপর বালকের তীরের থলি থেকে একটি তীর হাতে নিয়ে ধনুকের সাথে লাগালো। তারপর বলল, 'আমি এই বালকের রব আল্লাহর নামে তীর নিক্ষেপ করছি'। এই বলে তীর নিক্ষেপ করল। তীর গিয়ে বালকের মাথার একপাশে বিদ্ধ হল। অতঃপর বালক তার তীরবিদ্ধ স্থানে হাত রেখে মৃত্যু বরণ করল। এবং এভাবেই তার মৃত্যু ঘটল। এই ঘটনা দেখে লোকেরা বলে উঠল 'আমরা এই বালকের রব এর উপর ঈমান আনলাম। আমরা এই বালকের রব এর উপর ঈমান আনলাম।' বাদশাহকে তার লোকেরা গিয়ে জানাল, আপনি যা আশংকা করেছিলেন তাই হয়েছে, মানুষতো সব ইসলাম গ্রহণ করে ফেলেছে। বাদশাহ তার অনুসারীদের হুকুম দিলেন যে, প্রতিটি রাস্তার মুখে মুখে বিশালকার গর্ত তৈরি কর। বাদশাহর হুকুম অনুসারে প্রতিটি রাস্তার মুখে বিশাল আকারের গর্ত তৈরি করা হল এবং তাতে আগুন জ্বালানো হল। অতঃপর ঘোষণা করা হল 'যারা তাদের দ্বীন (ইসলাম) ত্যাগ না করবে তাদেরকে আগুনে নিক্ষেপ কর। তাই করা হল। এক পর্যায়ে এক নারীর পালা আসল। তার সঙ্গে ছিল তার দুধের শিশু। নারীটি যখন ইতস্ততঃ করছিল তখন তার দুধের শিশু মায়ের কোলে বসে বলল, 'মা তুমিও আগুনে ঝাপ দাও। নিশ্চয়ই তুমি হক্ব দ্বীনের উপর রয়েছো'

এই হাদিসটি রিয়াদ আল সালেহীন এবং সহী মুসলিমে আছে। এই হাদিসে দেখা যায়, দ্বীনের স্বার্থেই এবং দ্বীনের কল্যাণের নিমিত্তেই এই বালকটি নিজেকে হত্যা করার উপায় বলে দিয়ে নিজেকে উৎসর্গ করেছিল। এটি নির্দেশ করে যে, দ্বীনের স্বার্থে এরকম আত্মোৎসর্গ বৈধ এবং এবং তা আত্মহত্যা হিসেবে বিবেচিত হয় না। জিহাদের জন্য আত্মহত্যাকে বলা হয় আমাদায়ী ইশতিশহাদী এবং এই টার্মটি প্রথম ইবনে তাইয়্যিমিয়া তার ক্বাইদা ফি-ই-ইনঘিমাস ফি ই আবু ওয়া হাল ইয়ুদাহ? নামক ৭৯ পৃষ্ঠার ফতোয়া সম্বলিত প্রবন্ধে এর ব্যাখ্যা করেন। এই আত্মঘাতী অপারেশনকে বলা হয় ইনঘিমাস। উল্লেখ্য এই প্রবন্ধে আত্মঘাতী অপারেশন বা ইনঘিমাসের দলিল সম্বলিত ব্যাখ্যা ও বিষদ আলোচনা থাকায় সংগত কারনেই অনলাইনে পাওয়া যাবে না। এর হার্ড কপি মিশরের লাইব্রেরীতে সংরক্ষিত আছে। ইনঘিমাসের ওপর পুরো একটা অধ্যায় আলোচনা করা হয়েছে ইবনে আল নাহাস আল ডুমিয়াতি রচিত মাশারী আল আশওয়াক ইলা মাসারি আল উশাক বইতে। যেহেতু এগুলো দুস্পাপ্য এবং সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত আমি এই বইয়ের লিখিত বিষয় গুলো এখানে তুলে ধরছি। তাইয়িমিয়ার আত্মঘাতী জিহাদ যাবার প্রথম দালিলিক ব্যাখ্যা শুরুই হয়েছিলো সুরা বুরুজের ঐ তাফাসীরটি দিয়ে। তারপর উনি উল্লেখ করেন নিম্নোক্ত হাদিসের:

**ইমাম আহমাদ ইবনে আব্বাসের থেকে তার মুসনাদে বর্ণনা করেছেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,"মিরাজের রজনীতে যে রাতে আমাকে ভ্রমণ করানো হয় আমি একটি মনোমুগ্ধকর সুঘ্রাণ অনুভব করলাম। আমি বললাম হে জিবরাঈল! এত সুন্দর এই ঘ্রাণ কিসের? জিবরাঈল বললেন, এ হল ফিরআউনের কন্যার চুল আঁচড়ানো বাদী এবং তার সন্তানদের সুঘ্রাণ। আমি বললাম, এর কারণ কি? জিবরাঈল উত্তর দিলেন, একদিন তিনি ফিরআউনের মেয়ের মাথার চুল আঁচড়াচ্ছিলেন ; হঠাৎ তার চিরুনিটি হাত থেকে পড়ে যায়। পড়ে যাওয়ার সময় তিনি বিসমিল্লাহ বলেন। এই দৃশ্য দেখে ফিরআউনের মেয়ে বলল, তুমি কি আমার পিতার নাম উচ্চারণ করেছ? তিনি বললেন, না তোমাদের পিতা নন, বরং আমার এবং তোমাদের পিতার যিনি রব (আল্লাহ)। ফিরআউনের মেয়ে বলল, বাবাকে এটা বলে দিব কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ বল। মেয়ে গিয়ে ফিরআউনকে বলে দিল। ফিরআউন তাকে ডাকল এবং বলল, আমি ব্যতীত তোমার কি কোন রব আছে? তিনি বললেন, অবশ্যই তোমার এবং আমার রব আল্লাহ। একথা শুনে ফিরআউন পিতলের বড় হাড়িতে আগুন গরম করতে বলল। যখন হাড়ি গরম হয়ে গেল, তখন ফিরআউন তাকে এবং সন্তানদের ঐ উত্তপ্ত হাড়িতে নিক্ষেপ করার নির্দেশ দিল। তিনি বলল, তোমার কাছে আমার একটি দাবী আছে। ফিরআউন বলল, কি দাবী বল। তিনি বললেন, আমি চাই যে, আমার ও আমার সন্তানদের হাড্ডিগুলো একটি কবরে একত্রে দাফন করবে। ফিরআউন বলল, হ্যাঁ, অবশ্যই এটি আমার প্রতি তোমার অধিকার। এরপর তার সামনে তার সন্তানদের একে একে প্রত্যেককে সেই হাড়িতে নিক্ষেপ করা হল। এক পর্যায়ে তার দুধের শিশুর পালা আসল। এই নারী এবার একটু যেন বিচলিত হলেন। তখন দুধের শিশুটি বলল, মা তুমি দ্রুত ঝাপ দাও, কারণ এই পৃথিবীর শাস্তি আখিরাতের শাস্তির তুলনায় একেবারেই তুচ্ছ। সঙ্গে সঙ্গে সে (নারী) তাতে ঝাপ দিল।

হাদিসটি সুনানে ইবনে মাজাহ তে বর্নিত এবং এখানে জঈফ বলা হলেও অন্যান্য হাদিস সংগ্রাহক ও তাফসীরকারক একে সহী রায় দিয়েছেন। তার মানে পূর্ববর্তী তাফসীর এবং এই হাদিসে নিজের দ্বীনের জন্য আত্মহত্যাকে জায়েজ বলা হয়েছে।

**সূরা বাকারার ১৯৫ আয়াতের তাফসীর অনুসায়ী আসলাম আবি ইমরান হতে বর্ণিত, "আমরা রোম শহরে ছিলাম। ওরা আমাদের উদ্দেশ্যে একটি বিশাল বাহিনী বের করল এবং মুসলমানদের থেকেও একটি বিশাল বাহিনী বের করা হল। মুসলিম বাহিনীর সৈনিকদের থেকে একজন ব্যক্তি অস্ত্র তুলে নিয়ে রোমানদের কাতারে ঢুকে পড়লেন। তখন কিছু লোক চিৎকার করতে লাগলেন যে, সুবহানাল্লাহ ! সে তো নিজেকে নিজের হাতে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। (এর দ্বারা তারা কুরআনের আয়াত, “তোমরা নিজেদের ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিও না।" এই আয়াতকে ইঙ্গিত করছিলেন।) তখন আবু আইয়ুব আনসারী দাঁড়িয়ে গেলেন এবং বললেন, "হে লোক সকল! তোমরা এই আয়াতের এই ব্যাখ্যা দিচ্ছ ! অথচ এই আয়াত নাযিল হয় আমাদের আনসারদের উদ্দেশ্যই । (ব্যাপারটা ছিল এই যে) যখন আল্লাহ তা'আলা ইসলামের বিজয় দান করে ইসলামকে মহিমান্বিত করলেন এবং ইসলামের সাহায্যকারীদের সংখ্যা অনেক হয়ে গেল, তখন আমাদের কিছু লোকেরা গোপনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম-কে না জানিয়ে বলতে লাগল যে, আমাদের সম্পদ তো বিনষ্ট হয়ে গেছে। আর এখন তো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা ইসলামের বিজয় ও সম্মান দান করেছেন , ইসলামের সাহায্যকারীও অনেক হয়েছে। সুতরাং এখন যদি আমরা আমাদের সম্পদ গুছানোর কাজে হাত দিতাম এবং আমাদের যে ক্ষতি হয়ে গেছে তা পুনঃগঠনে যদি মনোযোগ দিতাম ! তখন আল্লাহ তা'আলা তার নবীর প্রতি এ আয়াত নাযিল করে তার প্রতিবাদ করলেন,
وَأَنفِقُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَلَا تُلْقُوا بِأَيْدِيكُمْ إِلَى التَّهْلُكَةِ ۛ
"আর তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় কর এবং নিজেদের ধ্বংসের মাঝে নিক্ষেপ কর না। ”
সুতরাং এখানে যুদ্ধ ছেড়ে দিয়ে সংসার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাওয়া এবং সম্পদ পুনঃগঠনে আত্মনিয়োগ করাই ছিল ধ্বংস। যুদ্ধের ময়দানে শত্রু সেনাদের মাঝে ঢুকে পরা ধ্বংস নয়। এরপর আবু আইয়ুব আনসারী সব সময় যুদ্ধের ময়দানেই কাটাতেন এবং শেষ পর্যন্ত কুস্তুনতুনিয়ায় তার দাফন হয় । আবু দাউদ (৩/২৭) এবং আত তিরমিযী (৪/২৮০) (আত তিরমিযী এটিকে সহীহ রায় দিয়েছেন) এটি বর্ণনা করেছেন এবং আল- আলবানী তার "আস-সিলসিলাহ আস-সাহিহাহ" (১৩) এবং 'সহীহ আত তারগীব' (১৩৮৮) গ্রন্থে এটিকে সহীহ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আরও দেখুন আল ওয়াদি " আল-জামি আস সাহিহ' (৩/২০০, ৪/১২৬, ৩৫৭, ৩৮১, ৫/৪২২, ৪২৩, ৪৮২) এবং 'আস সাহিহ আল মুসনাদ' ( ১৪০,৩২৭) অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে ইবনে হাজাম এর 'আল মুহাল্লা' (৭/২৯৪) এবং ইবনে হাজার এবং 'আল ইসাবাহ' (৩/১২২) তে। আরও দেখুন ' ফাতহ আল বারী' (৮/৩৩-৩৪) । বায়হাকী-ও এটি অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং তা শুনানের অপর এক বর্ণনায় "এককভাবে আল্লাহর শত্রুদের ঊমিতে লড়াই করার অনুমোদন" শীর্ষক অধ্যায়ে শত্রু দলের বিরুদ্ধে একাকী অগ্রসর হবার বিষয়টি অনুমোদনের দলীল হিসেবে পেশ করেছেন, এমনকি যদি এর ফলাফল এমনও হয় যে, এর ফলে শত্রু তাকে নিশ্চিত মেরে ফেলবে।
এই হাদিসে আবু আইয়ুব আনসারী এই আয়াতের (সূরা আল-বাকারাহঃ ১৯৫) ব্যাখ্যা করেন যে, এটি তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, যে ব্যক্তি শত্রু ব্যূহ ভেদ করে ঠেলে এগিয়ে যায়, যদিও লোকদের মনে এই ধারণা হয় যে, সে নিজেকে ধ্বংস করেছে। সাহাবাগণ মৌনভাবে তার এই ব্যাখ্যাকে স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং গ্রহণ করেছেন।

**মুআজ ইবনে আফরাহ বললেন, "হে আল্লাহর রসূল ! কোন কাজ আল্লাহকে হাসায় ? ” রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, "বর্ম ব্যতীতই কারও শত্রুর মধ্যে ঢুকে যাওয়া। একথা শুনে তিনি তার শরীর হতে লোহার পোশাক খুলে ফেলে দিলেন এবং লড়াই শুরু করে দিলেন এবং এমন অবস্থায়ই তিনি শহীদ হয়ে যান।" এটি ইবনে আবি শায়বাহ এর 'মুসান্নাফ' (৫/৩৩৮)। এবং অন্য একটি বর্ণনায়, 'বদরের দিন যখন লোকেরা যুদ্ধ করার জন্য উপনীত হল, আউফ ইবনে আল হারিস বললেন, “ হে আল্লাহর রসূল! আল্লাহকে বান্দার কোন কাজটি হাসিয়ে থাকে?” তিনি উত্তর দিলেন 'তিনি যখন তার বান্দাকে কোন বর্ম ব্যতীত শত্রুর ভিতরে ঢুকতে দেখেন। অতঃপর আউফ ইবনে আল হারিস তার বর্ম ফেলে দিলেন এবং তিনি এগিয়ে গেলেন এবং শহীদ হিসেবে মৃত্যুবরণ না করা পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে গেলেন। আশ শাওকানি তার 'নাইল আল আওতার' (৭/২১২) এবং ইবনে হাজার তার 'আল-ইসাবাহ' (৩/৪২) গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন।

**আনাস বিন মালিক এর সূত্রে বর্ণিত আছে যে, এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, “ইয়া রসূলুল্লাহ ! আমি যদি মুশরিকদের ব্যূহ ভেদ করে ঠেলে ভিড়তে ঢুকে যাই এবং যদি আমার মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত লড়াই করে যাই আমি কি জান্নাতে যেতে পারব ?” নবী সাল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তর দিলেন, হ্যাঁ !। অতঃপর লোকটি মুশরিকদের ব্যূহ ভেদ করে ভেতরে ঢুকে গেল এবং তার মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত লড়াই করে গেল ।" হাকীম কর্তৃক বর্ণিত। ইমাম আশ-শাওকানীর 'নাইল আল আওতার' (৭/১২১) দ্রষ্টব্য।

ওপরের দুটি হাদীস থেকে এটিই প্রমাণিত হয় যে, জিহাদের অপারেশনের এমন বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য বা নীতি রয়েছে যেখানে এটি মোটামুটি নিশ্চিত যে, এতে কেউ কেউ নিহত হবে এবং এই বিশেষ নীতি অনুসারে এমন কিছু বৈধ যা সাধারণ অবস্থায় নিষিদ্ধ।

**আরও বর্ণিত আছে যে, ওহুদের দিনে উমর ইবনে খাত্তাব তার ভাই যায়েদ বিন খাত্তাবকে বললেন যে,"আমার ভাই ! তুমি আমার বর্ম নাও। " যায়েদ উত্তরে বললেন, "আমি সেই শাহাদাত কামনা করি যা তুমিও কামনা কর । ” সুতরাং তারা উভয়ই সকল বর্ম পিছনে রেখে দিল।” আত তাবারানীর কর্তৃক বর্ণিত এবং আল হায়সামির '' শাহাদাতের পরে' অধ্যায়ে 'মুজমা আজ-জাওয়ায়ীদ' গ্রন্থে বর্ণিত। এবং আল-হায়সামি বলেন, তাবারানী দ্বারা বর্ণিত এবং বর্ণনাকারী নির্ভরযোগ্য "। ইবনে আবদিল বার এর "আল-ইসতিয়ার” দ্রষ্টব্য।


সূরা আহযাবের ২৩ নম্বর আয়াতে আছে," মুমিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে। তাদের কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষা করছে। তারা তাদের সংকল্প মোটেই পরিবর্তন করেনি।"

ক্বাথিরের তাফসীর
এবং সহী বুখারী ও মুসলিম অনুসারে আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন যে, আমার চাচা আনাস ইবনু নাদর বদরের যুদ্ধে অনুপস্থিত ছিলেন। (যার জন্য তিনি খুবই দুঃখিত হয়েছিলেন।) অতঃপর তিনি একবার বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! প্রথম যে যুদ্ধ আপনি মুশরিকদের বিরুদ্ধে করলেন তাতে আমি অনুপস্থিত থাকলাম। যদি (এরপর) আল্লাহ আমাকে মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে হাজির হওয়ার সৌভাগ্য দান করেন, তাহলে আমি কী করব আল্লাহ তা অবশ্যই দেখাবেন (অথবা দেখবেন)।’ অতঃপর যখন উহুদের দিন এল, তখন মুসলিমরা (শুরুতে) ঘাঁটি ছেড়ে দেওয়ার কারণে পরাজিত হলেন। তিনি বললেন, ‘হে আল্লাহ! এরা অর্থাৎ সঙ্গীরা যা করল তার জন্য আমি তোমার নিকট ওযর পেশ করছি। আর ওরা অর্থাৎ মুশরিকরা যা করল, তা থেকে আমি তোমার কাছে সম্পর্কহীনতা প্রকাশ করছি।’

অতঃপর তিনি আগে বাড়লেন এবং সামনে সা‘দ ইবনু মু‘আযকে পেলেন। তিনি বললেন, ‘হে সা‘দ ইবনু মু‘আয! জান্নাত! কা‘বার প্রভুর কসম! আমি উহুদ অপেক্ষা নিকটতর জায়গা হতে তার সুগন্ধ পাচ্ছি।’ (এই বলে তিনি শত্রুদের মাঝে ঝাঁপিয়ে পড়লেন এবং যুদ্ধ করতে করতে শাহাদত বরণ করলেন।) সা‘দ বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! সে যা করল, আমি তা পারলাম না।’ আনাস (রাঃ) বলেন, ‘আমরা তাঁর দেহে আশীর চেয়ে বেশি তরবারি, বর্শা বা তীরের আঘাত চিহ্ন পেলাম। আর আমরা তাকে এই অবস্থায় পেলাম যে, তাকে হত্যা করা হয়েছে এবং মুশরিকরা তাঁর নাক-কান কেটে নিয়েছে। ফলে কেউ তাঁকে চিনতে পারেনি। কেবল তাঁর বোন তাঁকে তাঁর আঙ্গুলের পাব দেখে চিনেছিল।’ আনাস (রাঃ) বলেন যে, আমরা ধারণা করতাম যে, (সূরা আহযাবের ২৩নং) এই আয়াত তাঁর ও তাঁর মত লোকদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে।‘মু’মিনদের মধ্যে কিছু আল্লাহর সঙ্গে তাদের কৃত অঙ্গীকার পূরণ করেছে, ওদের কেউ কেউ নিজ কর্তব্য পূর্ণরূপে সমাধা করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষায় রয়েছে। ওরা তাদের লক্ষ্য পরিবর্তন করেনি।’’


কিন্তু প্রশ্ন আসতে পারে ইসলামে তো আত্মহত্যা নিষিদ্ধ এবং ঘোরতর গুনাহের কাজ আবার উপরোক্ত দলিলে যুদ্ধে ময়দানে নিজের জীবনকে এভাবে উৎসর্গ করছে নবী মোহাম্মদের সামনেই এবং নবী মোহাম্মদ তাতে উৎসাহ দিচ্ছেন এবং সে সমর্থনে কোরানের আয়াত ডাউনলোড দিচ্ছেন। ঘটনার পরিস্কার হবে যেসব আত্মহত্যা সম্বলিত বিধি নিষেধ আছে তার কিছু উল্লেখ করে আসল কারন যাচাই করার চেস্টা করি।

*‘তোমরা নিজেদের হত্যা কোরো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়ালু। আর যে ব্যক্তি সীমা লঙ্ঘন কিংবা জুলুমের বশবর্তী হয়ে এরূপ করবে, তাকে খুব শিগগিরই আগুনে দগ্ধ করব।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ২৯-৩০) এই আয়াতের তাফসীর অনুযায়ী কেউ যদি বিষ খেয়ে বা পাহাড়ের ওপর থেকে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করে তাহলে জাহান্নামে তার জন্য কঠিন সাজা বিদ্যমান। এছাড়া কেউ যদি অবিচার ও বিবাদের সূত্রপাতে আত্মহত্যা করে সেটাও আল্লাহ ক্ষমা করবেন না

** আবু হুরায়রা সূত্রে বর্ণিত, নবী মোহাম্মদ ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি নিজেকে পাহাড় থেকে নিক্ষেপ করে হত্যা করবে, সে জাহান্নামে যাবে। সব সময় সে সেখানে অবস্থান করবে। সব সময় তা থেকে পতিত হতে থাকবে। আর যে ব্যক্তি বিষপানে আত্মহত্যা করবে, দোজখেও তার হাতে বিষ থাকবে। সেখানেও সে তা পান করতে থাকবে এবং চিরকাল সেখানে থাকবে। আর যে ব্যক্তি অস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যা করবে, সেরূপ অস্ত্র দোজখেও তার হাতে থাকবে। সর্বক্ষণ সে নিজের পেটে ওই অস্ত্র দ্বারা আঘাত করতে থাকবে এবং সর্বক্ষণ এরূপ করতে থাকবে।’ (বুখারি শরিফ, হাদিস : ৫৪৪২, মুসলিম শরিফ, হাদিস : ১০৯)

** আবু হুরায়রা সূত্রে বর্ণিত, নবী মোহাম্মদ ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো বস্তু চিবিয়ে আত্মহত্যা করে, সে জাহান্নামেও তা চিবাতে থাকবে এবং সব সময় নিজেকে ধ্বংস করতে থাকবে। আর যে ব্যক্তি নিজেকে গর্ত ইত্যাদিতে নিক্ষেপ করে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামেও সেভাবেই করতে থাকবে। আর যে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামেও সেরূপ করতে থাকবে।’ (বুখারি শরিফ, হাদিস : ১২৯৯, মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৯৬১৬)

** সাবেত ইবনে জাহ্হাক সূত্রে বর্ণিত,নবী মোহাম্মদ ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো বস্তু দ্বারা আত্মহত্যা করবে, সে চিরদিন জাহান্নামের আগুনে ওই বস্তু দ্বারা শাস্তি পেতে থাকবে।’ (বুখারি শরিফ, হাদিস : ৫৭৫৪, মুসলিম শরিফ, হাদিস : ১১০)

** জুন্দুব সূত্রে বর্ণিত, এক হাদিসে নবী মোহাম্মদ ইরশাদ করেছেন, “তোমাদের আগের লোকদের মধ্যে এক ব্যক্তি আঘাতের ব্যথা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তি সম্পর্কে বলেন, ‘আমার বান্দা নির্ধারিত সময়ের আগেই তার নিজের জীবনের ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সুতরাং আমি তার জন্য জান্নাত হারাম করে দিলাম’।’’ (বুখারি শরিফ, হাদিস : ৩২৭৬, মুসলিম শরিফ, হাদিস : ১১৩)

** জাবের ইবনে সুমরা বলেন, ‘নবী মোহাম্মদ-এর সামনে এমন একজন লোকের লাশ আনা হলো, যে তীরের মাধ্যমে আত্মহত্যা করেছে। নবী মোহাম্মদ তার জানাজা পড়েননি।’ (মুসলিম শরিফ, হাদিস : ৯৭৮)

এখন উপরোক্ত সকল হাদিস বা আয়াত ঘাটলে দেখা যায় এসব আত্মহত্যার সবই পার্থিব দুঃখ কস্ট হতাশা এবং দৈহিক ও মানসিক বেদনার মুক্তির জন্য কেউ আত্মহত্যা করে। কারন সবগুলো আত্মহত্যার ব্যাপারগুলোতে এসব অনুষঙ্গ বিদ্যমান।

কিন্তু ইনঘিমাসের জন্য আমাদিয়া ইশতিশাদী অর্থাৎ দ্বীনের পথে আত্মঘাতী হামলার ব্যাপারে খোদ নবী মোহাম্মদ এটাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ের শাহাদাত বরনের সাথে তুলনা করেছেন। কিন্তু যারা পার্থিব দুঃখ কস্ট বা মৃত্যুযন্ত্রনা লাঘবের জন্য আত্মহত্যার পথ বেছে নেন সেটাকে বলা হয় আল ইন্তিহার যেটা আসলেই কবিরা গুনাহ।



এরকম আরো বহু দলিল দেখানো যাবে যেখানে দ্বীনের রাস্তায় আত্মঘাতী হওয়া ইসলামে অতীব প্রিয় একটা ব্যাপার এবং এই ব্যাপারে চার মাযহাবের প্রধান ইমাম সাহেবের বক্তব্য গুলো দেখি তাহলে ব্যাপারটা আরো সরল হয়ে যাবে।

হানাফী মাযহাবের গোড়ার দিকের ইমাম ইবনে আবিদীন বলেন যে “ কোন ব্যাক্তির একাকী যুদ্ধ করার ব্যাপারে কোন ধরণের প্রতিবন্ধকতা নেই, এমনকি যদিও সে মনে করে যে, সে নিশ্চিত মৃত্যুবরণ করবে, যতক্ষণ সে কিছু না কিছু অর্জন করে – (শত্রুকে) হত্যা কিংবা আহত করা কিংবা পরাজিত করার মাধ্যমে – এবং তা এ কারণে যে, উহুদের দিনে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এর সম্মুখেই বেশ সংখ্যক সাহাবাকে এরূপ করতে দেখা গেছে এবং তিনি এজন্য তাদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। যদি কোনক্রমে সে জানে যে সে তাদের কোনই ক্ষতি সাধন করতে পারবে না, তখন তার জন্য আক্রমণ করার বিষয়টি অনুমোদনযোগ্য নয়, কেননা তা দ্বীনকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে কোন অবদানই রাখতে পারে না।” [হাশিয়াহঃ ৪/৩০৩
আশ-শারখাসি প্রসঙ্গত বলেন, “এটিই আপাতত বলা যায় যে, এক্ষেত্রে আবশ্যক বিষয়টি হল শত্রুর ব্যুহে তার ঝাঁপিয়ে পড়া অবশ্যই কুফফারদের ক্ষতি সাধন করবে। (যদি বিষয়টি এমন হয়, তবে তা অনুমোদনযোগ্য)” [শারহ আশ-শিয়ার আল-কাবীরঃ ১/১৬৩-১৬৪]

আবু বকর আল জাসসাস আশ-শায়বানির মত উদ্ধৃত করে উল্লেখ করেন যে, “যদি সেরকম হয় (যেমন দ্বীনের কোন উপকার না হওয়া অথবা কুফফারদের ক্ষতি না হওয়া), তাহলে তার উচিত নয় নিজ সত্তাকে ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করা, কেননা এতে দ্বীনের কিংবা মুসলিমদের কোন কল্যাণ নিহিত নেই। কিন্তু যদি তার নিজ সত্তাকে উৎসর্গ করার মধ্যে দ্বীনের কিংবা মুসলিমদের কল্যাণ নিহিত থাকে, তাহলে এটি একটি সম্মানজনক ব্যাপার, যে বিষয়ে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা সম্পর্কে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন…।” [আহকাম আল কুরআনঃ ৩/২৬২-২৬৩] ।

এবং আবু হানিফার ছাত্র আশ-শায়বানির এই রায় এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।

ইমাম মালিক ইবনে আনাস অনুসারী ইমাম আল কুরতুবী উল্লেখ করেন ইবনে খুওয়াইজ মানদাদ বলেন, “কোন ব্যক্তির পক্ষে একাকী ১০০ জন কিংবা আরও বেশি শত্রু দলকে আক্রমণ করার ক্ষেত্রে … দুইটি বিষয় সামনে আসেঃ “যদি সে নিশ্চিত থাকে যে, সে তার আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুকে হত্যা করবে এবং নিরাপদ থাকতে পারবে, তাহলে এটি ভাল; অনুরূপভাবে সে যদি যৌক্তিক বিচারে নিশ্চিত থাকে যে সে নিহত হবে, কিন্তু শত্রুর ক্ষতি সাধন করবে কিংবা ধ্বংস বয়ে আনবে কিংবা মুসলিমদের জন্য কল্যাণকর কিছু বয়ে আনবে, তাহলেও এটি অনুমোদনযোগ্য।” [তাফসিরে কুরতুবিঃ ২/৩৬৪] ।

ইমাম আশ-শাফিয়্যি এর অনুসারী আল মুতী (রহীমহুল্লাহ) এর আল মাযমু’র সমাপ্তিতে আমরা দেখতে পাই, “যদি কুফফারদের সংখ্যা মুসলিমদের দ্বিগুণ হয় এবং তারা পরাজয়ের আশংকা না করে, তখন দৃঢ়তার সাথে দাঁড়িয়ে থাকা তাদের জন্য বাধ্যতামূলক … আর যদি তাদের এই সম্ভাবনা হয় যে, তারা ক্ষতির সম্মুখীন হবে, তখন তাদের দুটি সম্ভাব্য পথ রয়েছেঃ

১. তারা ফিরে যেতে পারে, এই আয়াতের ভিত্তিতে, “……… এবং তোমরা নিজেদের হাতে নিজেদের ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ কর না।” (২:১৯৫)
২. তারা পিছু না হটে অটল থাকতে পারে, এটিই সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং তা এই (৮:৪৫) আয়াতের উপর ভিত্তি করে “হে মুমিনগণ! তোমরা যখন কোন দলের সম্মুখীন হবে তখন অবিচলিত থাকবে ……।”

এ কারণে যে, মুজাহিদরা যুদ্ধ করে হত্যা করার জন্য অথবা নিহত হবার জন্য। যদি কুফফারদের সংখ্যা মুসলিমদের সংখ্যার দ্বিগুণের বেশি হয়, সেক্ষেত্রে তারা পিছু হটতে পারে। যদি তারা এ বিষয়ে প্রত্যয়দীপ্ত থাকে যে, তারা ধ্বংস হয়ে যাবে না, তখন এটিই উত্তম যে, তারা অনমনীয় থাকবে যাতে মুসলিমরা ধ্বংসপ্রাপ্ত না হয়ে যায়। আর যদি তাদের এই সম্ভাবনা জন্মে যে, তারা ধ্বংস হয়ে যাবে, তখন দুটি উপায় রয়েছেঃ তখন পিছু হটার এক ধরণের বাধ্যবাধকতা তৈরী হয়ে যায় আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার এই (২:১৯৫) আয়াতের মাধ্যমে, “…এবং তোমরা নিজেদের হাতে নিজেদের ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করো না” পিছু হটার বিষয়টি মুস্তাহাব, তবে বাধ্যতামূলক নয়, কেননা যদি তারা নিহত হয়, তারা শাহাদাতের মাধ্যমে বিজয়ী হবে।” [আল-মাজমুয়াঃ ১৯/২৯১]

সূরা বাকারা ১৯৫ আয়াতে ,"আর ব্যয় কর আল্লাহর পথে, তবে নিজের জীবনকে ধ্বংসের সম্মুখীন করো না। আর মানুষের প্রতি অনুগ্রহ কর। আল্লাহ অনুগ্রহকারীদেরকে ভালবাসেন।"


ইমাম আল গাজালি (রহীমাহুল্লাহ) বলেন, “এই বিষয়ে কোন মতানৈক্য নেই যে একজন মুসলিম একাকীই কুফফারদের ব্যুহে আক্রমণ করতে পারে, যদিও সে জানে যে সে মারা যাবে। শাহাদাতের পূর্ব পর্যন্ত যেমন কুফফারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা যেমন অনুমোদনীয়, এটিও সেরূপ অনুমোদনযোগ্য, কেননা এটি সৎকাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু যদি সে জানে যে, তার আক্রমণ কুফফারদের কোন ক্ষতি সাধন করবে না – ঠিক যেন অন্ধ ও পঙ্গু একটি লোক নিজেকে শত্রুর সামনে নিজেকে নিক্ষেপ করল। এরূপ ক্ষেত্রে এটি করা হারাম এবং এটি আত্ম-হনন সংক্রান্ত আয়াতের সাধারণ আওতার অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়; বরং সামনে অগ্রসর হওয়ার বিষয়টি তখনই কেবল অনুমোদনযোগ্য, যখন সে শত্রুকে হত্যা না করা পর্যন্ত নিজে নিহত হবে না (অথবা শত্রুর ক্ষতি করতে পারবে না) অথবা সে যখন নিশ্চিত থাকবে যে, মৃত্যুর ব্যাপারে তার এই তাচ্ছিল্য কুফফারদের নৈতিক মনোবল ভেঙ্গে দেবে এবং কুফফারদের মধ্যে এই আতঙ্ক ছড়িয়ে দেবে যে, তার মত বাকী মুসলিমদেরও মৃত্যুর কোন ভীতি নেই এবং তারা আল্লাহর রাস্তায় শাহাদাতকেই ভালবাসে।” [ইতকাফ আস-সাদাহ আল-মুত্তাকিন শারহ ইহইয়া উলুম আদ-দ্বীনঃ ৭/২৬]

এর ফলাফল কেবল তাৎপর্যপূর্ণই নয়, বিস্ময়করও বটে; একজন মুজাহিদ তার প্রভুর নিকট নিজেকে বিক্রয় করার পর প্রাচ্যে এবং পশ্চাতে আল্লাহর শত্রুদের মাঝে যে ব্যাপক ভীতি ও আতংক উদ্রেক করে, তা সীমালঙ্ঘন ও কুফরের প্রাসাদকে কাঁপিয়ে তুলে। সকল প্রশংসা কেবলমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলারই জন্য।

ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের অনুসারী ইমাম ইবনে কুদামাহ বলেন,

“যদি শত্রুর সংখ্যা মুসলিমদের সংখ্যার দ্বিগুণের বেশি হয় এবং মুসলিমরা বাহ্যিকভাবে জয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত থাকে, তখন এই সুযোগের জন্য দৃঢ়তা অবলম্বনই উত্তম; কিন্তু যদি তারা পিছু হটে তবে তাও অনুমোদনযোগ্য। এজন্য যে, তারা নিজেদের ধ্বংসের মধ্যে নিক্ষেপ করতে বাধ্য নয় ….. এই বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে যে, যদি তারা বাহ্যিকভাবে বিজয়ের ব্যাপারে নিশ্চিত থাকে, তাহলে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে মোকাবিলা করাই তাদের জন্য বাধ্যতামূলক। কিন্তু তারা যদি পরাজয়ের ব্যাপারেও বাহ্যিক দিক থেকে নিশ্চিত থাকে, সেক্ষেত্রে তাদের কৌশলগত পিছু হটাই পছন্দনীয়- কিন্তু যদি তারা দৃঢ় এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞা থাকে, তাহলে তাও তাদের জন্য অনুমোদনযোগ্য, কেননা, তাদের শাহাদাতের একটি লক্ষ্য আছে; আবার হতেও পারে যে তারাই বিজয়ী হয়েছে। যদি তারা বাহ্যিকভাবেই নিশ্চিত পরাজয়ের মুখে থাকে, এমন অবস্থা তৈরী হয় যে, তারা দাঁড়িয়েও থাকতে পারে আবার কৌশলগত পিছু হটতেও পারে, সেক্ষেত্রে শাহাদাতের মর্যাদা অর্জনের লক্ষ্যে দৃঢ়চিত্ত থেকে লড়াই চালিয়ে যাওয়াই অধিক পছন্দনীয়; বিশেষত; এই আশায় (আল্লাহর সন্তুষ্টি), কেননা, তারা তো বিজয়ও অর্জন করতে পারে।” [আল মুগনিঃ ৯/৩০৯]

শাইখ আল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যা বলেন, “মুসলিম কর্তৃক তার সহীহ নাবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে এর সম্পর্কে বর্ণিত আছে যে, ঐ ছোট বালকটি স্বয়ং নিজেকেই হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ‘মাসলাহাহ‘ (কল্যাণ) দ্বীনকে উচ্চকিত করে রাখার ‘মাসলাহাহ‘ (কল্যাণ) এর জন্য। এজন্য চার ইমামই মুসলিমদের এই অনুমোদন দিয়েছে যে, শত্রু ব্যুহে ঢুকে পড়লে শত্রুরা হত্যা করবে- এরকম জেনেও মুসলিমরা কুফফারদের ব্যুহে ঢুকে পড়তে পারবে। তারা এই বিষয়টিকে অনুমোদন দিয়েছেন এজন্য যে, এতে মুসলিমদের কল্যাণ নিহিত রয়েছে …।” [মাজমু আল ফাতাওয়াঃ ২৮/৫৪০]

নিশ্চিত ও অবধারিত মৃত্যু দুটি ক্ষেত্রেই এককভাবে শত্রুব্যুহে ঢুকে পড়ার বিষয়টিতে উলামারা তাদের পরিষ্কার অনুমোদন দান করেছেন। এর সাথে অধিকাংশ আলিমগণ এই অনুমোদনের জন্য কিছু শর্ত আরোপ করেছেনঃ
১. নিয়্যত
২. শত্রুর ক্ষতিসাধন
৩. শত্রুকে ভীত- সন্ত্রস্ত করা
৪. মুসলিমদের ঈমান উজ্জীবিত করা

আল কুরতুবি এবং ইবনে কুদামাহ খালিছ নিয়্যত নিয়ে শত্রু ব্যুহে ঢুকে পড়ার বিষয়টিকে অনুমোদন দিয়েছেন, এমনকি এতে যদি কোন শর্ত পূরণ না হয়, কেননা, শাহাদাতের আকাঙ্ক্ষা একটি বৈধ বিষয় (মাশরু’)। যেহেতু অধিকাংশের ব্যাখ্যাতেই শাহাদাতমূলক অপারেশনের ক্ষেত্রে বড় কোন শর্তাধীন বিষয় যুক্ত নেই, সেহেতু উল্লেখিত মতটিই প্রণিধানযোগ্য। অধিকাংশই তাদের শর্তগুলো শারীয়াহগুলো সাধারণ নীতির আওতায় উল্লেখ করেছেন। কিন্তু সাধারণ কোন নীতির আলোকে বিশেষ কোন নীতিকে সীমিত করা যায় না। তবে এটা ঠিক যে ফিদায়ী অপারেশনের এই কাজটিতে যদি কোন কল্যাণ না থাকে বা মুসলিম বা মুজাহিদদের কোন সুবিধাই তৈরী না করে, তাহলে তা পরিচালনা করা উচিত নয় কিংবা সেক্ষেত্রে এর চর্চাও কাঙ্ক্ষিত নয়। কিন্তু শরীয়া আইনের অনুমোদনের মূলনীতি থেকে ফিদায়ী অপারেশনের ব্যাপারটি আলাদা। কেননা, দৃঢ় কোন ভিত্তি ছাড়াই শাহাদাতের আকাঙ্ক্ষাকে বিষয়টিকে নিরুৎসাহিত করা একটি অন্যায়। অনুরূপভাবে, অন্য কোন বিকল্প উপায়ে মুসলিম বা মুজাহিদদের কল্যাণ হতে পারে, এমন উপায় বাদ দিয়ে কেবল স্বীয় কল্যাণের নিমিত্তে শাহাদাতের উপায় অবলম্বন করাও ঠিক নয়।

অবশেষে সূরা তওবার ১১১ নম্বর আয়াত বর্ননা করে পোস্টের যবনিকা টানছি যদিও আরও ব হু কোরানিক তাফসীর ও হাদিস সাথে বিভিন্ন মাযহাবের স হস্র আলোচনা পড়ে রয়েছে যেগুলো বর্ননা করলে এই পোস্টের দৈর্ঘ্য শুধু বড়ই হবে।

আল্লাহ ক্রয় করে নিয়েছেন মুসলমানদের থেকে তাদের জান ও মাল এই মূল্যে যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত। তারা যুদ্ধ করে আল্লাহর রাহেঃ অতঃপর মারে ও মরে। তওরাত, ইঞ্জিল ও কোরআনে তিনি এ সত্য প্রতিশ্রুতিতে অবিচল। আর আল্লাহর চেয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষায় কে অধিক? সুতরাং তোমরা আনন্দিত হও সে লেন-দেনের উপর, যা তোমরা করছ তাঁর সাথে। আর এ হল মহান সাফল্য।

এই আয়াতের তাফসীরে উল্লেখ আছে যে শিমর বিন আতিয়্যাহ এর বয়ানে আছে তারা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করবে এবং তারা হয় নিহত হবে নতুবা হত্যা করবে। এর মানে হলো হয় তারা মৃত্যু বরন করবে স্বেচ্ছায় অথবা শত্রুদের প্রানসংহার করবে বা দুটোই, তাহলেই জান্নাত তাদের হবে।

উপসংহারে একটা কথা বলবো কয়েক বছর আগে মৌলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদির নেতৃত্বে ১ লক্ষ আলেম সই করেছিলেন ফতোয়া দিয়ে যে আত্মঘাতী হওয়া ইসলাম বৈধ নয়। সমস্যা হলো একানে ১ নম্বর প্রশ্নের উত্তরে সূরা মায়ীদাহর যে আয়াতটির কথা উল্লেখ আছে সেটা পুরোপুরি সঠিকভাবে বর্ননা করেননি। একটা আয়াতের আংশিক তুলে দেয়া ইসলামে মানা, এতে গুনাহ হয়। আর এর পরের অন্যান্য প্রশ্নের উত্তরে যেসব কথা বলা হয়েছে তা অনেকটা ফিল্মি এবং যেসব হাদিস ও ঘটনার রেফারেন্স দেয়া হয়েছে সেসব দলিল আত্মঘাতী জিহাদীরা কখনোই তাদের পক্ষের দলিল হিসেবে উপস্থাপন করেন না বরংচ ব্যাক্তিগত ও দুনিয়াবী স্বার্থে আত্মহত্যা ও ত্রাস বা ফিৎনা সৃষ্টি করা যে অবৈধ সেটা তারাও মেনে নিয়েছেন। সমস্যা হলো আপনি যখন জঙ্গি জিহাদীদের বিরুদ্ধে ফতোয় দিবেন তখন যুক্তি হিসেবে তাদের দেয়া দলিল গুলো খন্ডানো উচিত। কিন্তু আপনি সেসব না খন্ডিয়ে সেসব দলিলের ধারে কাছে গেলেন না, যেটা আমার কাছে আই ওয়াশ ছাড়া কিছুই নয়।

বরংচ যতক্ষন না সব আলেম ওলামারা মিলে ইনঘিমাস, আমাদিয়া ইশতিশাদী, ফিদায়ীর অভিযান বিষয়ক ব্যাপার গুলো নিয়ে মুক্ত ভাবে আলোচনা না করবেন ততদিন যারাই জসিমউদ্দিন রাহমানী, লাদেন বা তাইয়িমিয়ার ফতোয়া শুনবে ততই তারা আকৃষ্ট হবে এবং জঙ্গিবাদে জড়াবে। ইসলামে যেহেতু আত্মঘাতী ব্যাপারটা আছে সেহেতু তা মেনে নিয়ে এটাকে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে নিরাপদ ও শর্তসাপেক্ষে নিয়ন্ত্রন করলে সারা পৃথিবী অশান্তির হাত থেকে বাঁচবে।

চলবে...................
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৯ ভোর ৬:২৯
২৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মপোলব্ধি......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:৫১

আত্মপোলব্ধি......

একটা বয়স পর্যন্ত অনিশ্চয়তার পর মানুষ তার জীবন সম্পর্কে মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায়। এই বয়সটা হল পঁয়ত্রিশ এর আশেপাশে। মানব জন্মের সবকিছু যে অর্থহীন এবং সস্তা সেটা বোঝার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি !

লিখেছেন হাসানুর, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩২



হঠাৎ ইলিশ মাছ খেতে ইচ্ছে হল । সাথে সাথে জিভে ..জল... চলে এল । তার জন্য একটু সময়ের প্রয়োজন, এই ফাঁকে আমার জীবন থেকে নেয়া ইলিশ মাছের কিছু স্মৃতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছে এটা ১০০% নিশ্চিত। আমেরিকায় ইতিহাসে মহিলা প্রেসিডেন্ট হয়নি আর হবেও না।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৩

আর এস এস সহ উগ্র হিন্দুদের লিখে দেওয়া কথা টুইট করেছে ট্রাম্প। হিন্দুদের ভোট-আর ইন্ডিয়ান লবিংএর জন্য ট্রাম্পের এই টুইট। যার সাথে সত্যতার কোন মিল নেই। ট্রাম্প আগেরবার ক্ষমতায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ট্রাম্প জিতলে কঠোর মূল্য দিতে হবে ইউসুফ সরকারকে?

লিখেছেন রাজীব, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪২

ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক মন্তব্যে বাংলাদেশের মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। ৫ তারিখের নির্বাচনে ট্রাম্প জিতলে আরেকবার বাংলাদেশের মিষ্টির দোকান খালি হবে।

আমি এর পক্ষে বিপক্ষে কিছু না বললেও ডায়বেটিসের রুগী হিসেবে আমি সবসময়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×