১)
হিটলার অজ্ঞেয়বাদী না নাস্তিক এটা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও ইসলামের প্রতি অনুরক্ততা বেশ চোখের পড়ার মতো ছিলো। ব্যাক্তি পর্যায়ে আরব মুসলিমদের বর্বর এবং নীচু জাতের মনে করলেও তিনি মোহাম্মদের একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন এবং প্রায়ই বলতেন তুরের যুদ্ধে মুসলিমরা জিতলে জার্মানরা একটা ভালো ধর্ম পেতো যার ফলে সাত আসমান থেকে আসা রহমতের কৃপায় হয়তো একদিন পুরো বিশ্ব তাদেরই কুক্ষিগত হতো। সে হিসেবে ক্রিষ্চিয়ানিটি কুসংস্কারাচ্ছন্ন অর্থহীন ধর্মই বলা যায়। ইসলামের প্রতি তার এমন অনুরাগের কারনে তৎকালীন প্যালিস্টিনিয়ান নেতা আমির হুসেইনী সাহেব ছুটে এসেছিলেন জেরুজালেম তথা প্যালেস্টাইনকে ব্রিটিশ শাসন থেকে অবমুক্ত করতে এবং ইহুদীদেরকে হত্যা করে তাদের সম্পত্তির ওপর আরব মুসলমানদের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করতে। তখনও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়নি এবং হিটলার প্রস্তুত ছিলেন না ব্রিটেনের সাথে সরাসরি বৈরী সম্পর্ক গড়ে তুলতে, যদিও মিশরের মুসলিম ব্রাদারহুড সমর্থিত আমিন আল হুসেইনি বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার প্রাক্কালে ঠিকই জার্মানীতা গিয়ে এসাইলাম বোগল দাবা করে হিটলারের এসএস পার্টির সদস্যপদ বাগিয়েছিলেন।
হিটলার সারা বিশ্বে ঘৃনিত নাম হলেও ততকালীন ভারত উপমহাদেশের অনেক প্রভাবশালী নেতা তার সমর্থনে ছিলেন। সেক্ষেত্রে সুভাষ চন্দ্র বোসের নাম উল্লেখ করা যায়। আমার দাদু জীবিত থাকতে বলতেন সুভাষ চন্দ্র বোস এখনোও বেচে আছেন, তিনি তার লাল বাহিনী নিয়ে ফিরে আসবেন এবং আবারও সবকিছু ঠিক করে দেবেন। দাদাজান ৯০ দশকের শেষের দিকে মারা যান। যদি সুভাষ চন্দ্র বোস ফরবুশার প্লেন ক্রাশে বেচেও যেতেন তাহলেও তার বয়স হতো তখন ১০০ এর কাছাকাছি। জানি না সুভাষ চন্দ্র বোসকে বুকে নিয়ে এখনো সেই প্রজন্মের কেউ বেচে আছে কিনা, তবে এটা ঠিক দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলার ছিলেনভারত উপমহাদেশে একজন রকস্টার। ব্রিটিশদের ভয়াবহতম ক্রুঢ়তর দুঃশাসন হিটলারকে হিরো বানাতে সাহায্য করেছিলো। হিটলারের সাথে সুভাষের খবর পত্রিকায় বেরোবার সাথে সাথে দিল্লি, পান্জ্ঞাব, কলকাতায় তার একটা কপির জন্য মারামারি পর্যন্ত হয়েছিলো। এমনকি তার পরের মাসেও সেই বিশেষ সংখ্যা পুনঃমুদ্রন করে উচ্চমূল্যে কলকাতার মোড়ে মোড়ে বিক্রি হয়েছিলো। যখন সাবমেরিনে চড়লেন তখন সবাই দিন গোনা শুরু করলো এই বুঝি ভারতবর্ষ স্বাধীনতার মুখ দেখবে, লালবাহিনী আসছে। সে সময়ের উত্তেজনা, দেশপ্রেমের যে আবেগ সেটা লিখে বোঝানো মুস্কিল।
২)
"আকাশ নীল"- এটা কি সত্য না মিথ্যা? আপনি যদি মাদাগাস্কারের ঘন জঙ্গলে গিয়ে একজন আদিবাসীকে জিজ্ঞেস করেন অথবা আমেরিকার নিউইয়র্কের মেট্রোপলিটনে বেড়ে ওঠা কোনো মেট্রো-বয়কে জিজ্ঞেস করলেও একই উত্তর পাবেন। আকাশ নীলই হয়। মেঘের রং যাই থাকুক, আকাশ নীল।
কিন্তু একজন এস্ট্রোনমার তা বলবে না বা যিনি জ্যোতির্বিজ্ঞান বা পিওর ফিজিক্সে পড়ছেন তার কাছে আকাশ কখনোই নীল নয়, বরংচ আকাশ বলতে কিছুই নাই, শুধুই শূন্যতা। পৃথিবীর সকল সত্যই আপেক্ষিক এবং সেটা ব্যাক্তি পর্যায়ে হতে পারে বা গোষ্ঠি পর্যায়ে। এবং এই আপেক্ষিকতার সাথে খুব নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত আপনার অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান বা মনোজাগতিক দর্শন। আসুন আরেকটু ব্যাখ্যা করি:
ক) গানিতিক বিষয়ে সংখ্যাগত বিষয় নিয়ে তর্ক করার সুযোগ নেই।আপনি যখন গননা করে ফলাফল বের করতে পারেন তখন সেটা নিয়ে তর্কের সুযোগ থাকে না কারন গননাগত ব্যাপারটা সবার সামনে দৃশ্যমান। গনিতের মূল ভিত্তিই তো গননা, তাই না?
খ) বিজ্ঞান আপনার পর্যবেক্ষনলব্ধ জ্ঞানের ওপর নির্ভরশীল। পর্যবেক্ষন হতে প্রাপ্ত তথ্য সংগ্রহ করে তার ওপর একটা সিদ্ধান্ত উপনীত হওয়ার প্রক্রিয়া স্বতঃসিদ্ধ তত্ব দাড় করাতে সাহায্য করে। সেক্ষেত্রে পর্যবক্ষনলব্ধ জ্ঞানের বিপরীতে আপনার তর্ক করার সুযোগ নেই। এর বাইরে যে কিছু হতে পারে তার সম্ভাবনা ক্ষীন ও হাস্যকর।
গ) ধর্মে ঈশ্বরের অস্তিত্ব সম্পুর্নই বিশ্বাসের ওপর। এর বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে যাবতীয় জাগতিক নিয়ম কানুন প্রতিষ্ঠিত এবং ঈশ্বর নিয়ে তর্ক করার সুযোগ কখনোই হবে কারন এটা একটা স্বতঃসিদ্ধ বিশ্বাসের ভীত। ঈশ্বরের অস্তিত্বকে অস্বীকার করার মানে হলো আপনি নিজের অস্তিত্বকে অবিশ্বাস করছেন যেটা হাস্যকর। কারন আপনি আমার সামনে দাড়িয়ে। তাই ধর্মগত দিক থেকে ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে তর্ক করা অসম্ভব।
ঘ) অর্থনীতিতে পন্যের বাজারমূল্যকে পরম হিসেবে ধরা হয় যেখানে টাকাই হলো সব।
ঙ) রন্ধনশিল্পে স্বাদ জিনিসটাই সব। আমি যতকিছু ভালো জিনিস দিয়েই রাধেন না কেন স্বাদ না হলে এটা রাবিশ এবং ডাস্টবিনে ফেলে দেয়ার যোগ্য।
সত্যের এই রূপটি আমরা সার্বজনীন হিসেবে দেখতে পারি কারন আমরা যখন চেনা জানা পরিবেশে খাপ খাইয়ে নেই তখন সত্যের স্বরূপ খুজতে গিয়ে কিছু মানদন্ড বা স্বতঃসিদ্ধ ভিত্তি দাড় করাই এবং এই ভিত্তি দিয়েই জাগতিক সবকিছু বিচার করি। সত্য এভাবেই কাজ করে। সমস্যা হলো সত্যের স্বরূপ যদি এভাবেই কাজ করে তাহলে হোচট খায় কেন? বিশ্বাস হচ্ছে না? তাহলে আসুন দেখে নেই সত্যের অপর রূপটি কি।
এন্টি-সত্য) গননাকৃত ফলাফলকে গানিতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করা সম্ভব নয় কিন্তু আপনি তত্ব দিয়ে সেটার আলাদা ব্যাখ্যা দাড় করাতে পারেন। সেক্ষেত্রে গননা করার মতো সক্ষমতা আপনাকে ভুলে যেতে হবে।
এন্টি-সত্য) ধর্মে ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে তর্ক করার সুযোগ নেই কিন্তু এটাকে খুব স হজেই বিজ্ঞেন দিয়ে ভুল প্রমান করা যায়। সেক্ষেত্রে আপনাকে বিশ্বাস আগে হারাতে হবে।
এন্টি-সত্য) আরো বাস্তবিক ভাবে ব্যাখ্যা করতে যাই সংখ্যা ও বর্নগত ব্যাপারটা কম্পিউটার প্রোগ্রামিং আরো বড় দ্বন্ধের সৃষ্টি করে। যদি আপনি ১ সংখ্যাটিকে char অথবা int দিয়ে সঠিক ভাবে কম্পাইল করতে না পারেন লো লেভেল ল্যাঙ্গুয়েজে তাহলে আপনার মেশিন সেটাকে বার বার error bug বা কম্পাইল ইরর হিসেবে দেখবে।
এন্টি-সত্য) দর্শন শাস্ত্রে আপনি যেকোনো কিছু নিয়েই তর্ক করতে পারেন। এজন্যই আপনার কাছে মনে হবে দর্শন নিয়ে লেখাপড়া করাই অর্থহীন। কিন্তু একটা কথা না বললেই নয় যে এই আদি শাস্ত্রটি থেকে যা কিছু জানার ছিলো তা ইতিমধ্যে জ্ঞানের অন্যান্য শাখায় তার কার্যকারিতাকে কাজে লাগিয়ে বহু দূর চলে গেছে।
তার মানে দেখা যাচ্ছে পরম সত্য আসলেই বিতর্ক সাপেক্ষ এবং বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই। অস্তিত্ব যেটা আছে সেটা হলো আপেক্ষিক সত্যের গ্রহনযোগ্যতা। আপনি যে সত্যকে গ্রহন করলেন তা কতটুকু কাজে দেবে অথবা তার ব্যাপ্তি কতটুকু। ডেখা গেলো অপর একজনের কাছে সত্যের রূপটি আরো উৎকর্ষময় কারন তার আছে সত্যকে প্রতিষ্ঠার করার ক্ষমতা, নীরিক্ষা করার উপায়, সে সত্য দিয়ে প্রভাবিত করার ক্ষমতা, অনুযোজন-বিয়োজন এবং ফলাফলের পুনরাবৃত্তি।
৩)
অনেকেই জিজ্ঞেস করেন বিগ ব্যাং এর আগে কি ছিলো। পদার্থবিজ্ঞান এখনো প্রমানিত উত্তর দিতে পারেনি তবে কিছু গানিতিকভাবে কিছু সম্ভাবনার কথা বলে মহাজাগতিক পর্যবেক্ষন ও পার্টিক্যাল ফিজিক্স অনুযায়ী। দর্শন আবার এ বিষয়ে অনেকটা পাঠকনির্ভর গভীরতম ধারনা দেয়।
গত শতাব্দীর ৩০-৪০ এর দশকে কার্ট গোডল নামের বিখ্যাত ম্যাথমেটিশিয়ান ও ফিলোসোফার অধিবিদ্যার যুক্তি দিয়ে প্রমান করে ছাড়লেন যে ঈশ্বর আছে এবং এটা সত্য।
তার ইনকমপ্লিটনেস থিওরেম অনুযায়ী "কোনো কিছুর চারপাশে বৃত্ত আঁকা হলে নিজেকে ব্যাখ্যা করার সামর্থ্য রাখে না যতক্ষন না ঐ বৃত্তের পরিধির বাইরে থাকা কোনো কিছু দিয়ে তাকে ব্যাখ্যা করা না যায়- বৃত্তের বাইরের এই একটা কিছু যা তোমাকে ধরে নিতে হবে আছে কিন্তু প্রমান করতে পারবে না"
ওপরের কথাটা হেয়ালী মনে হলেও কনসেপ্ট টা খুব সহজ। বাজার থেকে একটা বাইসাইকেল কিনে আনলেন এবং তার পাশে একটা বৃত্ত আঁকলেন। এখন এই বৃত্তের অভ্যন্তরে থাকা কোনো কিছু দিয়ে বাইসাইকেল নিজেকে ব্যাখ্যা করতে পারবে না। কারন এটিকে যেই ফ্যাক্টরী বা কোম্পানী বানিয়েছে সেটা বৃত্তের বাইরে এবং এটি আপনি কোনোদিন দেখে নাও থাকতে পারেন। এটা ছাড়া বাইসাইকেলটি নিজেকে প্রকাশ বা নিজের সামর্থ্য আপনার সামনে তুলে ধরতে পারবে না। তার মানে বাইসাইকেলটির পরিচিতি তার বৃত্তের বাইরে আছে যেটা আপনি চাক্ষুষ দেখছেন না।
আপনি যদি বিজ্ঞানের ছাত্র হয়ে থাকেন তাহলে ইউক্লিডিয়ান উপপাদ্য শুরু করবার আগে আপনাকে কিছু স্বতঃসিদ্ধ মেনে নিয়েই শুরু করতে হয়েছিলো যেগুলোর কোনো প্রমান ছিলো না কিন্তু সেগুলো স্বতঃসিদ্ধ ধরে নিয়েই আপনাকে এগুতে হয়েছে। অপ্রমানিত, যদিও শব্দটা অদ্ভুত শোনায়, স্বতঃসিদ্ধ এই ইউক্লিডিয়ান জিওম্যাট্রির জন্য একটা অসম্পূর্নতা এবং ঠিক সেভাবেই যদি এই পুরো মহাবিশ্বকে ইউক্লিডিয়ান জিওম্যাট্রি বা বাইসাইকেল দিয়ে চিন্তা করেন তাহলে এই দার্শনিক যুক্তিগত অসম্পূর্নতা বেশ প্রকোটভাবেই ধরা দেয়।
গোডল তার এই তত্ব প্রমান করবার জন্য তিন শব্দের একটা বাক্য তুলে ধরেছেন যেটিকে আমরা একটা ধাধা হিসেবে ধরতে পারি:
আমি মিথ্যা বলছি।
এই বাক্যটি একটা ধাধা এবং সেল্ফ কন্ট্রাডিক্টরী। কারন আপনার বক্তব্য সত্য হলে আপনি মিথ্যাবাদী নন কিন্তু আপনি মিথ্যা কথা বলছেন। আবার আপনার বক্তব্য মিথ্যা হলে এটা নিজের সত্যবাদীর রূপটা ধরিয়ে দিচ্ছে।
গোডল সাহেব আইনস্টাইনের খুব ভালো বন্ধু ছিলেন এবং আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ব যেখানে টাইম ট্রাভেল তত্বকে প্রত্যাখ্যান করে দেয় সেখানে এই গোডল সাহেব তার আপেক্ষিক তত্ব দিয়ে ক্লোজ টাইম কার্ভেচার বা সিটিসি দিয়ে অতীতে যাবার উপায় বাতলে দেন। অনেকে বলতে কালুজা ক্লেইন তত্ব দিয়েও এটা করা সম্ভব কিন্তু সেটা মাত্রাগত একটা সম্ভাবনা। গোডল সাহেবের সিটিসি এর জন্য মাত্রার কোনো দরকার হয় না। তখন আইনস্টাইন থিওরি অব এভ্রিথিং নিয়ে বেশ মাথা ঘামাচ্ছিলেন এবং তার একমাত্র হাতিয়ার ছিলো কালুজা ক্লেইন থিওরী। সেসময়েই গোডেল ঈশ্বর সম্পর্কিত অধিবিদ্যাগত যুক্তি পেশ করলেন যেটাকে বলা হয় আর্টিফিসিয়াল ইন্টালিজেন্সের প্রথম ধাপ। যদিও অনেক ট্যুরিং মেশিনের নাম বলবেন, মূলত চার্চ ট্যুরিং লজিক ছিলো গোডেলের ইনকমপ্লিট থিওরীরই একটা সিস্টেম্যাটিক প্রায়োগিক রূপ।
গোডেলের যুক্তি অনুসারে:
* কোনো কিছু ঘিরে একটা বৃত্ত আকলে এর বাইরে কিছু থাকবেই যা আমাদের ধরে নিতে হবে আছে কিন্তু প্রমান করা যাবে না।
* আমাদের মহাবিশ্বকে সসীম ধরে নিলে এর মধ্যে থাকা ম্যাটার, এনার্জী, স্পেস এমনকি ১৩.৮ বিলিয়ন বছর, এই সময়টিও সসীম।
* এই মহাবিশ্বের সবকিছু নিজেকে পরিপূর্ন ভাবে ব্যাখ্যা করতে পারছে না এবং এর পরিসীমার বািরে যাই থাকুক না কেন সেটা অসীম। তাই সংজ্ঞানুসারে তার চারপাশে বৃত্ত আকা সম্ভব না।
* যদি গোডলের তত্বানুসারে সবকিছু ঘিরে বৃত্ত আকি, তাহলে এর বাইরে থাকা সেই অসীম একটা কিছু নিশ্চয়ই কোনো ম্যাটার বা এনার্জী বা স্পেস টাইম দিয়ে তৈরী কিছু নয় কারন সকল ম্যাটার এনার্জী এবং সময় বৃত্তের মধ্যে। তার মানে সেই অসীম কিছু বস্তুহীন।
* বৃত্তের বাইরে থাকা সেই কিছু একটা নিশ্চয়ই কোনো সিস্টেম না অর্থাৎ সে কোনো যন্ত্রপাতির অংশ বা কোনো কিছু দিয়ে সৃষ্টি নয়। যদি তাই হতো তাহলে আমরা তার চারপাশ দিয়ে একটা বৃত্ত আঁকতে সমর্থ হতাম। এবং মহাবৃত্তের বাইরে থাকা সেই কিছু একটা অদৃশ্যই হবে।
* ঐ অদৃশ্য এবং অসীম জিনিস কোনো কারন ছাড়াই একটি কার্যকারন এবং যদি তাই না হতো তাহলে আমরা এর প্রভাবকে বৃত্তের অভ্যন্তরে ঢুকাতে পারতাম।
* আমরা যদি আবিষ্ট যুক্তি প্রয়োগ করি:
মহাবিশ্বের ইতিহাস ঘেটে জানা যায় ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে জগতিক তথ্যের শুরু হয়েছে। এটা অনেকটা জেনেটিক কোডের মতোই যা মূলত প্রতীকি এবং অবস্তুগত। কিন্তু এই তথ্য আসলো কোথা থেকে? নিশ্চয়ই তথ্যের আবিস্টকরন বাইরে থেকে করা হইছে কারন ম্যাটার এনার্জী বা সময়ের নিজস্ব ধর্ম বা আচারে এই তথ্য ব্যাপারটি সংযুক্ত নয়।
তার মানে এই যে জেনেটিক কোডের উতপত্তী কোনো বুদ্ধি সম্পন্ন সত্বার মাধ্যমেই ডিজাইন করা।
* তার মানে এই বৃত্তের বাইরে যাই আছে সেই সত্বার বুদ্ধিমত্তা আছে।
এভাবেই ঐশ্বরিক সত্বার সংজ্ঞা অধিবিদ্যার যুক্তিতে প্রমান করেছিলেন কুর্ট গোডেল।
(আবিস্টকরন তথ্যের উদাহরন হিসেবে বলা যায় আপনাদের এলাকায় যে একমাত্র নাপিত আছেন তিনি সবার চুল কাটেন। কিন্তু তার চুল কে কাটে?)
**যদিও গোডলের এই ঈশ্বর সম্পর্কিত তত্বের একটা সূক্ষ্ম সমস্যা আছে। সেই সমস্যাটা কি? এটা পাঠকদের ওপর ছেড়ে দিলাম।
উত্তর এই পোস্টে
তার চেয়ে বড় কথা দর্শনে আপনি সবকিছু নিয়েই তর্ক করতে পারেন। পরম সত্য বলে যেমন কিছু নেই তেমনি দর্শনে পরমভাবে প্রমানিত বলে কিছু নেই।
ফুড ফর থট!!!!
হ্যাপী ব্লগিং।
রেফারেন্স:
১) Incompleteness: The Proof and Paradox of Kurt Gödel (Great Discoveries) – by Rebecca Goldstein
২) Hitler's Religion: The Twisted Beliefs that Drove the Third Reich – by Richard Weikart