
ইনি বিলেত থেকে ভারতে আসেন ২০ বছর বয়সে। অর্থাৎ ১৭৭০ খৃষ্টাব্দে। ইংরেজদের মধ্যে সংস্কৃত শিক্ষার একটা বিশেষ ষড়যন্ত্র করতে সফল ও সক্ষম তিনি। তাঁর চেষ্টাতেই রটিয়ে দেয়া হয় তাঁরাই নাকি উদ্ধার করেছেন আসল ‘দুর্লভ গীতা’। ১৭৮৫ তে ইংলণ্ডে ছাপা হয় তাঁর ইংরাজী অনুবাদ। ভারতের নব্যদল এতে অবাক হয়- গীতা এমন এক দামী গ্রন্থ যা কুড়িয়ে পাওয়া হীরের মত। আর তা ইংলণ্ডে গিয়ে হাজির! আমরা তার মর্যাদাই বুঝলাম না। সুতরাং বৃটিশ সরকার সক্ষম হয় গীতা পড়বার বা জানবার একটা পিপাসা সৃষ্টি করতে। ১৭৭৯ খৃষ্টাব্দে স্যার উইলকিন্স সৃষ্টি করেন সংস্কৃত ব্যাকরণ। কিন্তু ব্যাকরণটা যদিও ‘ব্যাকরণ’ হয়নি তবুও ব্যাকরণ রচনা হয়েছে- এটাই একটা নতুন পদক্ষেপ। বাংলা ও পার্শী ভাষায় টাইপ তৈরি করেছিলেন। একটি গবেষণাগার তৈরির প্রয়োজন হয় যাতে থাকবে অনেক বই পুস্তক, মুদ্রা, পুঁথি প্রভৃতি আর প্রত্নত্ত্বের তথ্য। সেইজন্য ভারতের কলকাতায় তৈরি হয় ‘ এশিয়াটিক সোসাইটি’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান। যেটি পূর্বেই প্রতিষ্ঠা করে গেছেন বিচারপতি স্যার্ জোনস ১৭৮৪-তে। এইসব প্রচারের জন্য প্রয়োজন হয় একটি পত্রিকা। তাই ‘এশিয়াটিক রিসার্চেস’ নামে একটি পত্রিকারও সৃষ্টি হয়ে গেল সহজেই। ১৭৮৬ তে তাঁর দায়িত্ব পালন করে স্বদেশে ফিরে গেলেন তিনি। দেশে ফিরে একদল ইংরেজ পণ্ডিত নিয়ে ২২ বছর গবেষণা করে প্রকাশ করলেন আবার একটি সংস্কৃত ব্যাকরণ। দেখা গেল প্রথম ও দ্বিতীয় ব্যাকরণের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ!
ব্রাসি হেলহ্যাড Nathaniel Brassey Halhed (25 May 1751 – 18 February 1830)

বাংলায় তাঁর ছিল অগাধ পাণ্ডিত্য। প্রথমে তিনি বাংলা ভাষায় অনেকগুলো পুস্তক পুস্তিকা রচনা করতে সক্ষম হন। তাছাড়া একটি বাংলা ব্যাকরণ লিখেও নজির সৃষ্টি করেন তিনি। হুগলীতে স্থাপনা করেন একটা ছাপখানাও। তাঁর সৃষ্টি করা পুঁথি এবং এদেশের-ই সংগ্রহ করা পুঁথি সবই চালিয়েছেন প্রাচীন পুঁথি বলে। সেগুলো প্রচারের প্রাবল্যে এবং ক্রীত দালালদের দালালিতে মূল্যবান দলিল রূপে সমাদৃত হয়ে বৃটিশ মিউজিয়ামে রাখা হয়েছে যাতে যুগযুগ ধরে আগামী প্রজণ্মকে ধোঁকা দিয়ে বোকা বানানো যায়। এই নিপুণ নায়কের মৃত্যু ঘটে ১৮৩০-এ।
লর্ড মিন্টো Lord Minto (1751- 1814)

এঁও জন্মগ্রহন করে ১৭৫১ খৃষ্টাব্দে। ১৮০৭ হতে ১৮১৩ পর্যন্ত তিনি ছিলেন ভারতের বড়লাট। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল জর্জ এলিয়ট। ওলন্দাজের অধীনে থাকা জাভা দ্বীপের বার্টাভিয়া শহর দখল করেন লর্ড মিন্টো। তিনি অধিকার করতে সক্ষম হলেন কালঞ্জর দূর্গ। বুন্দেলখণ্ডে শান্তিস্থাপনের অভিনয় করেন তিনি। শিখরাজা রনজিৎ সিং এর সঙ্গে সন্ধি করেন। কিন্তু শিখরা বুঝতে পারেন যে ওটা সন্ধি ছিল না বরং ছিল দূরভিসন্ধি। কোল্হাপুর ও সামন্তবাড়ীর রাজাদের দস্যু সাজিয়ে দস্যু দমনের নাম করে ক্ষমতা চূর্ণ বিচুর্ণ করে দমন করেন তাদের। ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানিকে তাঁর সময়ে নতুন সনদ বা অধিকার প্রদান করা হয়। দেশীয় ভারতীয়দের লেখাপড়া শেখাবার জন্য কোম্পানির পক্ষ হতে এক লাখ টাকা দান, আর খৃষ্টান মিশনারী বা ধর্ম প্রচারকদের সরকারিভাবে সারা ভারতে বিনা বাধায় বা বিনা দ্বিধায় ধর্মপ্রচার মিন্টোর মূল্যবান অবদান। ইংরেজ সরকার তাঁকে লর্ড উপাধি দিতে কার্পণ্য করেননি। ১৮১৪ খৃষ্টাব্দে হয়েছিল তাঁর প্রাণবিয়োগ
স্যার জন আ্যনস্ট্রুদার ব্যারনেট Sir John Anstruther, 4th Baronet and 1st Baronet PC (27 March 1753 – 26 January 1811)

এঁও ছিল বড়মাপের বুদ্ধিজীবী। ভারতে তাঁকে সুপ্রীমকোর্টের প্রধান বিচারপতির পদ দেওয়া হয়েছিল। তিনিও বিচারের নামে ইংরেজ সরকারের অনুকূলেই তাঁর কর্তব্য করতেন। ওয়ারেন হেস্টিংসের মামলার সময় তিনি ছিলেন একজন এসেসর। পার্লামেন্টের সদস্যও হতে পেরেছিলেন তিনি। কলকাতা হাইককোর্টে তাঁর একটি প্রতিমূর্তি আছে। তিনিও ‘স্যার’ উপাধিপ্রাপ্ত একজন ব্যক্তিত্ব।
এদের চিনে রাখুন,একদিন এরাই আপনাদের ছিড়ে-খুঁড়ে খেয়েছিল (প্রথম পর্ব)
এদের চিনে রাখুন,একদিন এরাই আপনাদের ছিড়ে-খুঁড়ে খেয়েছিল (দ্বিতীয় পর্ব)
এদের চিনে রাখুন,একদিন এরাই আপনাদের ছিড়ে-খুঁড়ে খেয়েছিল (তৃতীয় পর্ব)
এদের চিনে রাখুন,একদিন এরাই আপনাদের ছিড়ে-খুঁড়ে খেয়েছিল (চতুর্থ পর্ব)
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ৮:২৬