পাক জেনারেল নিয়াজি আত্মসমর্পন করছেন, ভারতীয় জেনারেল আরোরার কাছে। তার ধারে কাছে, স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিনিধি কেউ নেই। মুক্তিযোদ্ধা হায়দার ছিলেন, অতিথির মত। বাংলাদেশের পক্ষ্যেও কেউ কোন চুক্তি সাক্ষর করেননি। আমাদের ৩০ লক্ষ ভাইয়ের রক্ত আর কয়েক লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমের মুল্যে কেনা স্বাধীনতা এভাবেই ছিনতাই করা হয়েছিল।
আসল ঘটনা হলো - ১৯৭১ সালের ৬ই ডিসেম্বর পাকিস্থানে সামরিক সরকারের প্রধান জেনারেল ইয়াহিয়া ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করে। এদিকে বাংলাদেশে গনহত্যার বিরুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধে ভারত সবরকমের পরোক্ষ সহায়তা করলেও সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয়নি। কিন্তু ইয়াহিয়া খানের এই যুদ্ধ ঘোষনা ভারতকে সরাসরি অংশগ্রহনের সুযোগ এনে দেয়। এর ধারাবাহিতায় তৈরী হয় "ভারত বাংলাদেশ মিত্র বাহিনী"। তার ভারত বাংলাদেশ মিত্র বাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হন পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রধান জেনারেল জগজিৎ সিং আরোরা।
১৯৭১ সালে পাকিস্থানী বাহিনী আত্নসমর্পন করে - সেই আত্নসমর্পন দলিলে পাকিস্থানের পক্ষে স্বাক্ষর করে জেনারেল নিয়াজী আর ভারত-বাংলাদেশের পক্ষে স্বাক্ষর করে জেনারেল অরোরা। ( দলিলে নিয়াজীর স্বাক্ষরের নীচের লাইন দ্রষ্টব্য)
এই তথ্যকে যদি কেউ পাকিস্থানের ভারতের কাছে আত্নসমর্পন হিসাবে দেখাতে চায় আর বাংলাদেশের স্বাধীনতা হরন হিসাবে দেখে - এইটা প্রকৃত অর্থেই ইতিহাস বিকৃতি। যা পাকিস্থানীদের জন্যে স্বাভাবিক। কিন্তু যেখানে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ভারতের হাজার সৈন্য জীবন দিয়েছে আর মুক্তিযুদ্ধের সময়কালে ১ কোটি শরনার্থীর আশ্রয়সহ মুক্তিযুদ্ধাদের প্রশিক্ষন আর কুটনৈতিক সমর্থর ভারত আমাদের জন্যে যতটুকু করেছে তার প্রতি নূন্যতম কৃতজ্ঞতা বোধ না রেখে যারা বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কথা প্রচার করে এরা মুলত পাকিস্তানের দালাল রাজাকার-আলবদরদেরই অনুসারী।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে অক্টোবর, ২০০৮ ভোর ৪:৫৬