আমাদের চারপাশে এমন অনেক অজানা নায়ক আছেন যারা সমাজ ও জনগণের কল্যাণের জন্য চুপচাপ কাজ করছেন কোনোরকম স্বীকৃতি বা পুরস্কারের লোভ ছাড়া। এই ধরনের এক অনুপ্রেরণামূলক মানুষ হলেন করিমুল হক।
৫০বছর বয়েসী করিমুল হক পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার ধলাবারী গ্রামের মানুষের জন্য 'বাইক-অ্যাম্বুলেন্স-দাদা'। একজন চা শ্রমিক হয়ে ওঠেন একমাত্র আশার আলো আশেপাশে গরিব গ্রামবাসীদের কাছে। তিনি দুর্বল এবং অসুস্থ রুগীদের তার মোটরবাইকে করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
অনেক বছর আগে, করিমুল তার অসুস্থ মাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাবার জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স খুঁজে পান নি এবং সময়মত চিকিৎসা সহায়তা না পাওয়ায়,তার মা মারা যান । এই ঘটনার পর করিমুল সিদ্ধান্ত নিলেন যে তিনি অ্যাম্বুলেন্সের সুবিধা অভাবের কারণে কোনও ব্যক্তিকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে যেতে দেবেন না।
১৪বছর আগে, অ্যাম্বুলেন্স হিসাবে তার বাইক ব্যবহার করার ধারণাটি তার কাছে এসেছিল যখন তার সহকর্মী অসুস্থ হয়ে পড়ে। যেহেতু অ্যাম্বুলেন্স তৎকালে পাওয়া কঠিন তাই করিমুল সময় নষ্ট না করে রোগীকে তার পিঠে বাঁধেন এবং বাইকে করে তাকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। তার সহকর্মী সময়মত চিকিৎসার ফলে বেঁচে যান। এই ঘটনার পর করিমুল পুরোদমে "বাইক-অ্যাম্বুলেন্স" সেবা চালু করেন।
করিমুল পশ্চিমবঙ্গের ডুয়ার্স অঞ্চলের ধলাবারি গ্রামের আশেপাশের ২০টি গ্রামের মানুষের পরিত্রাতা হয়ে ওঠেন যেখানে কোনও সড়ক, বিদ্যুৎ, মোবাইল টাওয়ার এবং অন্যান্য মৌলিক সুবিধা নেই। এই বেল্টের বেশিরভাগ গ্রামবাসীই চা বাগান এ দৈনিক মজুরির শ্রমিক বা ছোট কৃষক।নিকটতম হাসপাতাল এখান থেকে 45 কিলোমিটার দূরে। তিনি আনুমানিক ৩০০০-৩৫০০ জন লোককে সম্পূর্ণ বিনা খরচায় তার "বাইক-আম্বুলেন্স" পরিষেবা দিয়ে এসেছেন।
শুধুমাত্র তার "বাইক-অ্যাম্বুলেন্স" সেবা দেওয়ায় নয়, করিমুল স্থানীয় ডাক্তারদের কাছ থেকে "first aid" পদ্ধতি শেখার পরে গ্রামবাসীদের প্রাথমিক চিকিত্সার দেওয়া শুরু করেন। তিনি নিয়মিত ব্যবধানে স্থানীয় এলাকায় স্বাস্থ্য ক্যাম্প পরিচালনা শুরু করেন।
করিমুল মাসে ৪ হাজার টাকার কম পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেন, কিন্তু সব চ্যালেঞ্জের সত্ত্বেও তার "বাইক-এ্যাম্বুলেন্স" চালিয়ে যেতে চান। তার উপার্জনের বেশিরবাগ দরিদ্রদের ওষুধ এবং বাইকের জ্বালানির জন্য ব্যয় হয়।
তিনি তার গ্রামের জন্য একটি আধুনিক স্বয়ংসম্পূর্ণ অ্যাম্বুলেন্সের স্বপ্ন দেখেন। তার এই সমাজসেবার স্বীকৃতিস্বরূপ ভারত সরকার তাকে
"পদ্মশ্রী" পুরস্কারে ভূষিত করেছেন।
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট
অফটপিক-
৭ দিনের মাথায় আমাকে সেফ ঘোষণা করার জন্য মডারেটর কে ধন্যবাদ জানাই।
সবাইকে আমার অন্যান্য পোস্টগুলি পড়ে দেখার জন্য আমন্ত্রন জানাই।
জনপ্রিয় একনায়ক থমাস শঙ্কর (১৯৪৯ -১৯৮৭ )
একজন নারী যিনি সবজি বিক্রি করে একটি হাসপাতাল নির্মাণ করেছেন।
একজন ডাক্তারের মৃত্যু
মহৎপ্রাণ মহারাজা দিগ্বিজয় সিং জাদেজা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও পোল্যান্ড
সত্যিকারের প্রেমের না বলা গল্প ( true love )
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে মে, ২০১৮ সকাল ৯:৪৭