গত বছরের আগের বছরের কথা। ক্লাস শেষ করে দুপুরের দিকে নবিনগরের বাসে চেপে বসলাম আমরা ৫/৬ জন। গন্তব্য ধামরাই এর রথের মেলা।
ছোটবেলায় মেলা মানেই বুঝতাম বিশাল খোলা মাঠে মাটির তৈরী হাতি-ঘোড়া, লাল নীল চুরি আর কদমা-বাতাসার সমাহার। সেই ছবিটাই মনের মধ্যে গেঁথে
ছিলো। এখন ঢাকা শহরের মেলার চেহারাই পালটে গেছে। ভাবলাম গ্রামের রথের মেলায় হয়ত ছেলেবেলার সেই অনুভুতির কিছুটা ছোঁয়া পাওয়া যাবে। যদিও
ধামরাই সেই অর্থে গ্রাম না।
বড় রাস্তায় বাস থেকে নেমে রিকশা নিলাম আমরা। মেলার জায়গায় পৌছে হতবাক। একি! এটা কি মেলা নাকি? মাঠ কই? একটা সরু রাস্তার দুই পাশে
ঝুপড়ি ঘরের মতো দোকান। সেই সব দোকানে যা পাওয়া যায় তা গাউছিয়া, নিউ মার্কেটে আরো কম দামে পাওয়া যায়। মনটাই গেলো খারাপ হয়ে।
তারপরো পুরো রাস্তার সবগুলো দোকানে ঘুরলাম। এক চুরিওয়ালির কাছ থেকে কাঁচের চুরি কিনলাম।
ঘুরতে ঘুরতে চোখে পড়ল নাগর দোলা। হুরমুর করে গিয়ে উঠলাম সবাই। কাঠের নাগর দোলা ঘুরতে শুরু করল। প্রথমে তো খুবি মজায় দুলছি। একটু পর
যখন গতি বাড়ল আমাদের প্রান হুহু করে উঠলো। এতো জোড়ে ঘূরছে যে মনে হচ্ছে এখনি ছিটকে যাব। গতি যখন সর্বোচ্চ তখন আমাদের অবস্থা ছেড়ে দে
মা কেঁদে বাঁচি। রোলার কোস্টার তো ফেল এর কাছে।
এক সময় থামল নাগর দোলা। আমাদেরও ফেরার সময় হয়ে গেছে। শুরুর মন খারাপ ভাবটা আর নেই। সেই ছোটবেলার পর এই প্রথম কাঠের নাগর দোলায়
উঠলাম। এই বা কম কি! ফেরার সময় ভরপেট ফুচকা খেয়ে বাড়ির পথ ধরলাম।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০