জীবন কাওকে কতটা সুখী করবে তা নির্ভর করে মানুষটির দৃষ্টিভঙ্গীর উপর। স্বস্তির ব্যাপার হচ্ছে কঠিন হলেও দৃষ্টিভঙ্গী পাল্টানো যায়। যদিও কিছু দূর্ভাগা মানুষ তাদের দৃষ্টিভঙ্গী কখনও পাল্টাতে পারেনা। আর তাই চারপাশে অসুখী মানুষের এত ছড়াছড়ি।
অসুখী মানুষদের চোখের সামনে হয়তো একটা অদৃশ্য ছাকনী থাকে। চারপাশের যাকিছু শুভ, যাকিছু আনন্দের তার সবই আটকে যায় সেই অদৃশ্য ছাকনীতে। আর যাকিছু অশুভ তাই শুধু দেখতে পান তারা। অন্যের সুখ তাদের স্পর্শ করেনা, কোন একজনের সুখী হয়ে উঠাতে তাই সে সহায়কও হতে পারেনা। সে জানেনা নিজের সন্তানের জন্য কেনা কোক-এর ক্যানটি ফুটপাতে দাড়িয়ে থাকা বছর পাঁচেক বয়সী শিশুটির হাতে দিয়ে দিলে শিশুটির অবয়বে অনাবিল আনন্দের ছায়া দেখা দেয়, যে আনন্দের জন্ম পৃথিবীতে হয়নি!
কোলে থাকা নিজ শিশুসন্তানটি কাপড় ভিজিয়ে দিলে তারা বিরক্ত হননা, অথচ একই বয়সী অন্যের শিশুসন্তান কাপড় ভেজালে রাজ্যের বিরক্তি এসে ভীর করে। অথচ দুটো শিশুই একইরকম নিষ্পাপ। সকল শিশুই বিরক্তিহীন ভালবাসার দাবীদার, সবার কাছে থেকেই।
দুটো শিশুর ভেতর সুন্দরটির প্রতি ভালবাসা প্রায় আদিখ্যেতার পর্যায়ে চলে যায়, যদিও অসুন্দর শিশুটির ভেতরও ভালবাসা প্রাপ্তীর প্রত্যাশা একইরকম থাকে। এ অন্যায় বৈষম্যটি সে খুব অবাক বিষ্ময়ে শৈশব থেকেই অনুভব করে থাকে। সব শিশুর প্রতি বৈষম্যহীন ভালবাসা কি খুব কঠিন কিছু?
কালই আমাদের জীবনে আনন্দের উপলক্ষ্য হয়ে আসছে ঈদ। কতকিছুই না কিনছি আমরা আপনজনদের জন্য। অথচ চারপাশের কতশত শিশুর কাছে ঈদ কোন বাড়তি আনন্দ নিয়ে আসেনা, ঈদ তাদের কাছে অন্যসব দিনের মতই একটি দিন। আচ্ছা, ছোটছোট চার-পাঁচটি জামা কাপড়ের দাম কত, দেড় কি দু’হাজার? আমাদের অনেকের কাছেই তুচ্ছ একটা টাকার এমাউন্ট। অথচ এটাই ঈদের দিনটিতে ছোট্ট কিছু পথশিশুর অবয়বকে করে দিতে পারে উজ্জ্বল, আলো-ঝলমলে! তাইনা?
সবার জন্য ঈদ শুভেচ্ছা!