'ভালবাস আমাকে? কতটা ভালবাস ? ... ?'
প্রশ্নবাণে বারবার জর্জরিত হয়েছি, মুখফুটে বলতে পারিনি কিছু। অথচ বলতে চেয়েছি কতকিছু। সেবার দু'সপ্তার কাজে দূরে গিয়েছিলাম। রাতগুলো যেন কাটতেই চাইতোনা। গলা উপচে বেরিয়ে আসতো কথা। সেই কথার ভেতর ইনিয়ে বিনিয়ে থাকতো তোমার শহস্র টন ওজনবিশিষ্ট প্রশ্নের উত্তর...
'... একটা প্রতীক্ষার কাল আর একটা বিলাসী কল্পনা ব্যাস্তানুপাতে সম্পর্ক বজায় রেখেছে। এ সম্পর্কেরও রয়েছে একটা আনন্দময় সমাপ্তি। এ আনন্দ ছোট-খাটো দু'টি মানুষের জন্যই কেবল প্রবল, অন্যের কাছে হয়তো বৈশিষ্টহীন। প্রতীক্ষার সুবিধা হলো, এটা শেষ হয়, অন্তত শেষ হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। আর বিলাসী কল্পনারও সুবিধা আছে, এটার কোন শেষ নেই। এর জন্ম হয়েছে শুধু বেড়ে যাওয়ার জন্যই। এ'দুটো সুবিধাই এখন আমার।'
'একটা ছাদ। চারটা দেয়াল। ছাদের নীচে অপেক্ষা। সময়কে অনুরোধ.. "একটু দ্রুত চলনা বাবা"। কথা না রাখার আনন্দে সময় ধীরে চলে।.. তবুও একটা সময়ের ক্ষন আসেই, স্থানিক দূরত্ব হয় তুচ্ছ, পরাভূত। দেখা দেয় দুটো স্বপ্নালু চোখ, দুটো কলিতে রাজ্যের স্বপ্নের আনাগোনা, কোমল হাত দুটোর অস্থিরতাও অনিবার্য সহনীয় হয়। কঠোর দু'টো হাত এগিয়ে যায় আলিঙ্গনে। আর কানেকানে বলে, এভাবেই বাঁচতে শেখ.. বলতো, আমরা শিখিনি বাঁচতে? "ধুকপুক" হৃদয়টার একটু বেশীই ব্যাস্ততা তখন, চারদিকে রক্তের যোগানটা একটু বেশীই দিতে হয়। মস্তিস্কের কোন এক রহস্যময় অংশে ঘটে গেছে ততক্ষনে ছোট্ট ঘটনা। কাজ হয় বিস্তর। কয়েক কোটি কোষ প্রবল অশান্ত হয় পরম শান্ত হওয়ার লক্ষ্যে। কালে বাড়ে শান্তি, তৃপ্তি, আনন্দ, সুখ। আর কমে চাপ, তাপ, দীনতা, রাগ, অভিমান। আসে দর্শন, "গ্রহটা মন্দ নয়!"। সময় চলে দ্রুত। আবার অনুরোধ করি, "সময়, একটু ধীরে চলনা বাবা"। একটু হেসে সময় দ্রুত গড়িয়ে চলে।'
'তুমি জান কখনও আমি ভাব-ভালবাসার কথা বলিনা, বলতে পারিনা আসলে। যে কথাগুলো কোন অজ্ঞাত উপায়ে বলা হয়েই যায় সেগুলোকে লিখে বা দলিল বানিয়ে কাজ কি। বরং যে কথাগুলো কোনভাবেই বলা হয়ে উঠেনা অথচ না বলারও শক্তি নেই সেগুলোই নাহয় বলে ফেলি। যেমন, তোমাকে বলা হয়নি তুমি আমার সুর, তোমাকে ছাড়া আমার সব গানই বন্ধ, একদম বেসুরো। বেসুরো জীবন কিভাবে চলে বলো। তোমার স্পর্শ আমার ভেতর তৈরী করে শত রাগিনী, যেভাবেই হোক সবসময়ই তুমি আমাকে কোননা কোনভাবে একটু ছুঁয়ে থেকো। কি থাকবেনা ছুঁয়ে, আমাকে বেসুরো হওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে?'