somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নতুন টাকার পাঁচকথা

২৯ শে অক্টোবর, ২০০৮ দুপুর ১২:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১.
ভাই টাকাটা ভাংতি হবে?
দোকানদার রাগত দৃষ্টিতে প্রশ্নকর্তার দিকে তাকালনে। তারপর গর্জন করে উঠলেন, ইস! শখ কত? পাঁচশ টাকাই ভাংতি হয় না আবার উনি এসেছেন এক হাজার টাকা নিয়া।
আসলেই। ভাঙতির বড় আকাল। ভাংতি নিয়ে কত যে হয়রানির মধ্যে পরতে হয় তা আমাদের প্রত্যেকেরই জানা।
আপনি একটি নোটের পরিবর্তে কয়েকটি নোট নিয়ে যাবেন এটা যেন কারোই সহ্য হয় না।
ভদ্রলোক আর এক দোকানে চেষ্টা করলেন তিনি। তিনি অতি উদার মানুষ। হাসি মুখে দুটি কচকচে ৫০০ টাকার নোট ধরিয়ে দিলেন।
কিন্তু রিকশা ভাড়া তো মাত্র দশ টাকা।
বোঝাই যাচ্ছে এই মিনি ফিকশন গল্পটা একটি এক হাজার টাকার নোট বিষয়ক গল্প।

২.
বাজারে নতুন এক হাজার টাকার নোট এসেছে। আমার মত অনেকেই এই বস্তুটি দেখার জন্য উদগ্রীব। আসলেই তাহলে ১০০ টি ওই টাকার নোটে এক লাখ টাকা হবে! এবং সেই টাকা মানিব্যাগেও রাখা যাবে!১০০ খানা নোট রাখাই যায়। কি মজা! এক লাখ টাকা নিয়া ঘুরলেও এখন কেউ টের পাবে না। অল্প নোটে এখন অনেক জিনিস কেনা যাবে।

আগে দেশের সর্বোচ্চ একটি নোটে নোটে পাঁচশ চকলেট পাওয়া যেত। এরপর সর্বোচ্চ সেই নোটে এক হাজার চকরেট পাওয়া যাবে। বাচ্চালোক তালিয়া। আগে বাবার পকেট থেকে অনেকগুলি নোট সরাতে হত, তাতে ধরা পরার চান্সও ছিল বেশি। এখন থেকে অল্পতেই কাম সারা যাবে। বাজারে এক হাজার টাকার নোট আনাটা তাই খুবই ভালো একটা উদ্যোগ।

৩.
আমরা বাচাল জাতি। কথা বলবই। এবং প্রতিটি ব্যপারেই আমাদের একটা মতামত থাকা চাই। সেটা ভাল উদ্যোগই হোক আর খারাপ উদ্যোগই হোক। অনেকেই তাই বলাবলি করছে, জনগনের উপর ভার কমাতেই সরকার এমন উদ্যোগ নিয়েছে। লাইনটা শুনে মনে হয় তারা যেন সরকারের প্রশংসাই করছে। আসলে কাহিনী ভিন্ন। তারা যা বলতে চাচ্ছে সেটা খুলেই বলি। আজকাল আপনি যাই কিনতে যান না কেন কোনটাতেই হাত লাগাতে পারবেন না। দামের কারণে।

আপনি কাড়ি কাড়ি টাকা নিয়ে বাজারে যাবেন আর অপেক্ষাকৃত কম ভারি ভারি জিনিস নিয়ে বাড়ি ফিরবেন। তাদের বক্তব্য আপনার কাড়ি কাড়ি টাকা বহন করতে কষ্ট হয়, তাই সরকার আপনার প্রতি সহানুভুতিশীল হয়ে এক হাজার টাকার নোট বাজারে এনেছে। এখন আপনার টাকা বহন করার কষ্ট অনেক কমে গেল।

৪.
আমাদের এলাকায় একবার এক সংসদ সদস্য প্রার্থি ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে এসে বেশ হৈচৈ ফেলে দেন। বলাই বাহুল্য তিনি সেবার নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হন। তার মূল জাদুর কাঠি ছিল ঐ হেলিকপ্টার। যেখানে অন্য প্রার্থিরা স্থল পথে যাতায়াত করেন সেখানে তিনি উইড়া উইড়া যাতায়াত করেন। ভোট তো পাবেনই? শো অফে তো সেই এগিয়ে।

সামনের নির্বাচন সেই জাদুর কাঠি হবে বোধ হয় এক হাজার টাকার নোট। পরিবহনে সহজ আর অল্পতেই কাজ সারা যাবে। সরকারকে টাকার ডিস্ট্রিবিশনের জন্য সরকারি ভাবে আর কিছুই করতে হবে না। জনগনের টাকা আপনা আপনিই জনগনের হাতে পৌঁছে যাবে।

৫.
তবে এক হাজার টাকার নোট আসায় আমি ব্যক্তিগত ভাবে শঙ্কিত।
আমার প্রায়শই টাকা হারায়। এক একটা নোট হঠাৎ করে খুঁজে পাই না। মানি ব্যাগে রাখি কিন্তু ঠিক জানি না কেমন করে এদের পা গজায়। আপনা আপনি তারা উধাও হয়ে যায়।
আরে যাবি ব্যাটা যা। সারক্ষণ মানি ব্যাগের মধ্যে থাকিস, দম বন্ধ দম বন্ধ লাগতেই পারে। গেলি না হয় একটু হাওয়া খেতে। কিন্তু ফিরে তো আসবি! কিন্তু বিশ্বাস করুন বন্দি জীবন শেষে তারা মুক্তির আনন্দে আর ফিরে আসে না। আর আমাকে যায ফাসিয়ে। পরিবারের কাছে কথা শুনতে শুনতে হয়। সব দোষ নাকি আমার! আমার এ্যাবসেন্ট মাইন্ড..আমার কোন কান্ডজ্ঞান নেই, ইত্যাদি ইত্যাদি।
আবারও তো নোট হারাব।
আর তা যদি হয় এক হাজার টাকার নোট??!!
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ট্রাম্প ভাইয়ের প্রেসিডেন্সিয়াল টিমের সদস্য এর মধ্যে এই তিন জন সদস্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

লিখেছেন অতনু কুমার সেন , ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৮

প্রথম জন হলো: জেডি ভান্স, উনি মেবি ভাইস প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। ভদ্রলোকের বউ আবার ইন্ডিয়ান হিন্দু। ওনার নাম উষা ভান্স। পেশায় তিনি একজন অ্যাডভোকেট।

দ্বিতীয় জন হলো বিবেক রামাস্বামী। এই ভদ্রলোক আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

দেশে ইসলামি আইন প্রতিষ্ঠা করা জরুরী?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:০২



বিশ্ব ইসলামের নিয়মে চলছে না।
এমনকি আমাদের দেশও ইসলামের নিয়মে চলছে না। দেশ চলিছে সংবিধান অনুযায়ী। ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে চললে পুরো দেশ পিছিয়ে যাবে। ধর্ম যেই সময় (সামন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসল 'আয়না ঘর' থাকতে রেপ্লিকা 'আয়না ঘর ' তৈরির প্রয়োজন নেই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৭ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩৮


স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের জুলুম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ৫ই আগস্ট সর্বস্তরের জনতা রাস্তায় নেমে এসে। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘ ১৫ বছরের শাসন আমলে অসংখ্য মানুষ কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি হাজার কথা বলে

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৩:৫৩

আগস্টের ৩ তারিখ আমি বাসা থেকে বের হয়ে প্রগতি স্মরণী গিয়ে আন্দোলনে শরিক হই। সন্ধ্যের নাগাদ পরিবারকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়ি রেখে এসে পরদিনই দুপুরের মধ্যেই রওনা হয়ে যাই। আগস্টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। নিজের বানানো টেলিস্কোপ দিয়ে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৮ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯






ঢাকায় নিজের বাসার ছাদ থেকে কালপুরুষ নীহারিকার ছবি তুলেছেন বাংলাদেশি অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার জুবায়ের কাওলিন। যে টেলিস্কোপ দিয়ে তিনি এই ছবি তুলেছেন, সেটিও স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×