এক পাহাড়ী মেয়ের গল্প বলি। সবুজ-সুন্দর পাহাড়ঘেরা দেশটায় ছিল তার বাস। উপত্যকায় বাড়ি তার, ছোট্ট কুঁড়েঘর। ভোরবেলাতে তার ছোট্ট ঝুড়িটা নিয়ে ফুল কুড়াতে যায়। সেই ফুলে ঘর সাজায়। কখনো কখনো ছোট্ট পাহাড়টার অন্য পাশে ঘুরতে যায়। সারাদিন পাখি, ফুল, প্রজাপতির সাথে গল্প শেষে ফিরে আসে বাড়ি। সন্ধ্যায় ঘরে ছোট্ট ঘরটার কুলুঙ্গিতে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখে। আর সেই প্রদীপে আলোকিত ঘরটার বাহিরে, বারান্দাটায় বসে সারারাত সে তারা গোনে।
এক ভোরে তার ঘরের সামনে এসে থামে এক পথিক। দীর্ঘ পথ যাত্রায় ক্লান্ত সে। ক্লান্ত পথিককে সাদরে বরণ করে নেয় অতিথি হিসেবে। পথিক একজন শখের পর্যটক। দূর পাহাড়ের ঐ পাশে যে সমতল দেশ, সে দেশের ছোট্ট শহরের এক বণিক সে।তবে নামেই বণিক, শখ তার দেশে দেশে ঘোরা। বাউন্ডুলে জীবনেই সুখ তার। ঘর ছেড়ে তাই দেশ-বিদেশের পথে পথিক হয়ে যায় সে। তার দেশের গল্প শোনায় পাহাড়ী মেয়েকে। পথিকের গল্প শুনতে শুনতে বিভোর হয়ে যায় মেয়ে। গল্পশেষে বিকেল বেলায় পথিক আবার নামে পথে। হাঁটতে হাঁটতে দিগন্তরেখায় মিশে যায় তার চিহ্ন।
অদ্ভুত, অদেখা সেই দেশটায় মন পড়ে থাকে পাহাড়ী মেয়ের । যাবার আগে পথিক বলে গিয়েছিল পথের ঠিকানা। দক্ষিণের পাহাড়ের ওপাশে আছে একটা বন। সে বনের গভীরে প্রবেশ করলে দুটো পথ। ডানে গেলে ঐ প্রান্তে পড়বে একটা নদী। আর বামের পথ ধরে গেলে শেষ মাথায় আছে সেই ছোট্ট-রঙিন শহর।
পরদিন ভোরে সে তার ছোট্ট ঝুড়িটা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে সেই দেশের উদ্দেশ্যে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জুন, ২০১২ বিকাল ৪:৫১