
কখনো বর্ষপুর্তির পোস্ট দিব, ভাবিনি। তার প্রথম কারন হচ্ছে, যেকোনও রকম বর্ষপুর্তি পালন করতে কিছুটা অনুৎসাহী আমি। অনেকে বেশ আয়োজন করে পালন করে। দেখতে ভালো লাগে। কিন্তু এভাবে পালন করবো –এমন আগ্রহ কখনো জন্মাতো না। তবু কি মনে করে এই পোস্টের অবতারণা, জানি না। দ্বিতীয় কারন হচ্ছে, আমি যে ব্লগে একটা বছর অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে পার করবো, পুরো এক বছর পর আমাকে এখানে খুঁজে পাওয়া যাবে- এমনটা ভাবিনি। এই এক বছরে বহুবার ‘ব্লগ ছেড়ে যাবো’–এমনটা ভেবেছিলাম। মাঝে দুই/এক বার সব পোস্ট ড্রাফটও করে ফেলেছিলাম। আবারো কি মনে করে যেন ফিরে এসেছি। হয়ত এই ফিরে আসাটাও সাময়িক। আবার মন চাইবে দূরে পালাতে, আবারো হারিয়ে যাবো।
'দূরদ্বীপবাসিনী' –এই নিকটা কেন নিলাম , এই প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে বেশ কয়েকবার। নজরুলের ‘দূরদ্বীপবাসিনী’ –গানটা অসম্ভব প্রিয়। সেই ভালো লাগা থেকেই এই নিক নেয়া। কার কাছে যেন শুনেছিলাম, মানুষের নামের সাথে নাকি বৈশিষ্ট্য বা গুণাগুণের একটা সম্পর্ক থাকে। জানি না কতটুকু সত্যি সেটা। তবে এই কথাটা যে কিছুটা ঠিক- এটা বুঝতে পারি আমার নিকের ক্ষেত্রে। 'দূরদ্বীপবাসিনী' আসলেই বোধ হয় অনেক দূরের কেউ। যখন ‘অন্য এক আমি’-র কথা ভাবি ,তখন পার্থক্যটা খুব ভালো বুঝতে পারি । সেই ‘অন্য আমি’-টা যতটা কাছের ছিল , এই দূরদ্বীপবাসিনী ঠিক ততটাই দূরের। একটা নাম বা নিক অদৃশ্য একটা কাঠামোকে উপস্থাপন করে। সেই একটা নাম হয়ত অনেক আপন, হারিয়ে গেলেও অনেকদিন পরে হয়ত কেউ কেউ খুঁজে যায়। আর অন্য নামটা দূরেই রয়ে যায় প্রায় সময়।
কেউ যদি জিজ্ঞেস করে, এই সময়টুকুতে ব্লগ থেকে তোমার প্রাপ্তি কি? হ্যাঁ, খাতা-কলমে যদি লাভ-ক্ষতির ব্যবসায়িক হিসেব কষতে বসা হয় তাহলে হয়ত কিছুই পাওয়া যাবে না। কিন্তু আমি যা পেয়েছি, খাতা-কলমে লিখে তার হিসেব মেলানো কঠিন। এখানে আমার মতই এক একটা নামের পিছনে এক একটা স্বত্ত্বা আছে, যাদের সাথে বন্ধনটা বন্ধুত্বের , শ্রদ্ধার , স্নেহের। হয়ত কোনও এক সময় যোগাযোগটা এভাবে আর থাকবে না, জীবনে হয়ত কখনও দেখাও হবে না, কিন্তু জীবনের একটা অংশ তো এইসব সম্পর্ক আলোকিত করে রেখেছিল-সেকথা কখনো ভুলবো না!
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০১২ দুপুর ২:৩৫