বৃষ্টি মানে তোর পায়ের ছাপ, আমার এক চিলতে বারান্দায়। শব্দ মানে তোর বাঁধভাঙ্গা হাসি। একদিন ভীড় ঠেলে হাটতে গিয়ে হঠাত পদদলিত দোলনচাঁপা দেখে বলেছিলি, তোর চাই। জানিস, আমার ছাদে দোলনচাঁপা ছাড়া আর কিচ্ছু নেই!
তুই আসবি বলে অনন্তকাল আমি দাঁড়িয়ে থাকতে পারি শেষ শেষ ট্রেনের অপেক্ষায়। তুই আসবি বলে পথ আগলে রাখতে পারি আবির রাঙ্গা সন্ধ্যায়। তোর গালের টোলে এঁকেছি আমি সংশপ্তক। কোন এক নীলফড়িং এর ডানায় পাঠিয়ে দিয়েছিলি তোর চুলের সুবাস- পাখা নিংড়ে ফড়িংটাকে রক্তাক্ত করেছি! ক্যানো অন্য কেউ পাবে তোর স্পর্শ?
তোর উত্তরীয়ের ভাজে ভাজে লুকিয়ে থাকে কার্তিকের সুঘ্রাণ। রাত ভোর হলে সলাজ অবগুন্ঠন খুলে মুক্ত করে দিস জোনাকপরীর দল। ঐ মেঘের নীলে তোর নিজস্ব আকাশ, পাখির ডানায় রোদের প্রতিসরণে তোর আজন্ম কৌতুহলী চোখ উন্মনা হয়ে যায়! রোদজ্বলা দীঘির জলে সে যেন কার ছবি আঁকে আনমনে!
বিশ্বাস কর এখনো চোখেমুখে লেগে আছে তোর গন্ধ, তোর স্পর্শ! তোর কথা কানে বাজছে এখনো পাললিক বাঁশির সুর হয়ে। কাজল চোখের পাতায় রাত্রি নামুক, অবশ প্রহরে ঘুম ভাঙ্গাবো ইন্দ্রজালে! তোর নিঃশ্বাস টেনে ভরে নিতে চাই ফুসফুস, আমি তোর রক্তে মিশে যেতে চাই আজন্ম পরজীবি হয়ে। জাগতিক সব কষ্টেরা ফুল হয়ে যাক প্রতিটা চন্দ্রাহত রাতে!
এখনো আলো জ্বালি নিঃসীম আঁধারে, তোর মুখছবি চোখে ধরে নিতে- শিরায় শিরায় তোর হাসির ঝংকার! জলনিক্বণের সলিলকেলি দেখি সারাটা দুপুর। তুই আছিস বলেই পাখিঘুম- তুই আছিস বলেই নিহিলিশ আয়োজন মিথ্যে লাগে। আটপৌরে বিকেলে জানালা খুলি জলপরী দেখবো বলে! আলতা আঁকা সে পায়ের ছাপ মিলিয়ে দেখার ইচ্ছে ছিলো যেন জন্মান্তরের।
তোকে একলা পেয়ে জ্বালাতন করেছে বলে শাসিয়ে দিয়েছি আমি উত্তুরে হাওয়াকে! তোর দিকে চোখ তুলে চেয়েছে বলে উপড়ে ফেলেছি সূর্য্যের চোখ! দুচোখে রাজ্যের আঁধার নিয়ে বসে আছি, তুই আসবি নীল আলোর সারথি হয়ে।
তোর চুলে কালচে নীরদ নাচে, ঠোটের কোণে হাসে গাংচিল। তোর হাতের রেখায় আমি গড়েছি দেবলোক। প্রায় সন্ধ্যায় পকেট হাতড়ে খুজে বের করি তোর আমার একান্ত অর্ণব। না আসিস যদি, একদিন আমি ঠিক ডুব দেবো ঐ অতল জলে- আর খুঁজে পাবি না।
কোন কোন সকালে যদি খুব একা লাগে, খুজে নিস আমাকে তোর মায়াবী চোখের সুগভীর কার্নিশে...
© দি ফ্লাইং ডাচম্যান
সেপ্টেম্বর ২০১৩
সলিলকেলি কথাটা হাসান মাহবুব ভাইয়ের কাছ থেকে ধার করেছি!