রুদ্ধদ্বার সভাকক্ষে তিল ধারনের জায়গা নেই,
বিমর্ষ হয়ে বসে আছেন জাতির পিতা;
পাইপ টেনে চলেছেন চিরচেনা ভঙ্গিমায়,
তাঁর দুপাশে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল।
বাংলার সূর্যসন্তানেরা সকলেই আজ উপস্থিত,
তবুও কক্ষে পীন পতন নীরবতা।
হঠাৎ ভাষাশহীদদের উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধুর আকুতি-
"আপনারা কি কিছুই করবেন না?
যে ভাষার জন্য আপনারা................। "
"কাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবো? "
উঠে দাড়ালেন রক্তভেজা শার্ট পরা রফিক,
"নিজের সন্তানদের বিরুদ্ধে!"
'রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই' প্লাকার্ড হাতে
রফিকের কাঁধে কাঁধ মেলালেন সালাম-
"কি লিখব এই প্লাকার্ডে?
তোমরা বাংলা ভাষাকে ভুলে যেও না??"
"এভাবে সম্ভব নাহ্";টেবিল চাপড়ালেন নজরুল;
"ওরা জাতিসত্ত্বা ভুলে যাচ্ছে।"
"জাতিসত্ত্বা কি শেখানো যায়?"
অসহায় পিতার কন্ঠে আক্ষেপ,
"মাতৃভাষাকে ওরা হারিয়ে ফেলছে
স্মৃতিভ্রষ্ঠ রোগীর মত,নিজেদের অজান্তে;
আত্মোপলব্ধি ছাড়া এর কোনো ওষুধ নেই।"
বঙ্গবন্ধুর কাঁধে হাত রাখলেন রবীন্দ্রনাথ।
"কিন্তু,ভাষাকে ভুলে গেলে
সে জাতির অস্তিত্ব কতদিন?"
আর্তনাদে কেঁপে উঠল পিতার বজ্রকন্ঠ।
ঢং ঢং শব্দে রাত বারোটার ঘন্টা বাজতেই
উদভ্রান্তের মত দরজা ঠেলে ঢুকলেন
ডক্টর মুহাম্মাদ শহীদুল্লাহ;
"এভাবে চলতে থাকলে একশো বছর পর
বাংলা ভাষাকে খুঁজতে হবে দূরবীন দিয়ে ।"
"ওদের দায়িত্ব ওদেরকেই বুঝতে হবে,
আপনাদের যা করার আপনারা করেছেন।"
জলভর্তি গ্লাসটা এগিয়ে দিলেন সুভাষ চন্দ্র বসু।
দীর্ঘশ্বাস ফেলে তর্জনী ওঠালেন বঙ্গবন্ধু,-
"চলেন, সবাই শহীদ মীনারে ফুল দিতে যাই,
আমাদের এখন আর কিছুই করার নেই;
আজ একুশে ফেব্রুয়ারি।" (Devil)