স্টিভ জবস
মোবাইলের দুনিয়ার একটি বিখ্যাত ব্র্যান্ড হলো অ্যাপেলের আইফোন। আর এ আইফোনের প্রতিষ্ঠাতা ও মার্কেটিং ম্যানেজার, স্টিভেন পল জবসের জন্ম ফেব্রুয়ারি ২৪, ১৯৫৫ সালে। অ্যাপল কম্পিউটারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং কম্পিউটার ও মনোরঞ্জন শিল্পে একজন নামকরা বিশ্ববিখ্যাত ব্যক্তি। জবস পিক্সার অ্যানিমেশন স্টডিওস-এর সাবেক সিইও। তিনি স্টিভ ওজনিয়াক এবং রোনাল্ড ওয়েনের সাথে ১৯৭০ সালে অ্যাপল কম্পিউটার প্রতিষ্ঠা করেন। জবস জন্মেছিলেন সান ফ্রান্সিস্কোতে এবং পরে পল ও ক্লারা জবস তাকে দত্তক হিসেবে গ্রহণ করেন এবং তাকে নামকরণ করা হয় স্টিভেন পল জবস। কিন্তু তার প্রকৃত পিতামাতা ছিলেন জোয়ান ক্যারোল এবং আব্দুল্লাহ ফাতাহ জান্দালি (সিরিয়া থেকে স্নাতকোত্তর করেন। পরবর্তীতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক হয়েছিলেন)। যারা পরবর্তীতে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন এবং তাদের ঘরে জবসের বোন সাহিত্যিক মোনা সিম্পসন জন্মান। জবস কুপারটিনো জুনিয়র হাইস্কুলে এবং হোমস্টিড হাইস্কুলে গিয়েছিলেন। তিনি প্রায়ই হিউলেট-প্যাকার্ড কোম্পানিতে লেকচারগুলোতে অংশগ্রহণ করতেন। যেখানে পরবর্তীতে তিনি গ্রীষ্মকালীন কর্মচারী হিসাবে স্টিভ ওজনিইয়াকের সাথে কাজ করেন। ১৯৭২ সালে তিনি হাইস্কুল শেষ করেন এবং রিড কলেজে ভর্তি হন। যদিও তিনি পরবর্তীতে কলেজ ছেড়ে দেন তার পরেও তিনি ক্যালিওগ্রাফিসহ আরও কিছু ক্লাসে যোগদান করেছিলেন। এই সম্পর্কে তার একটি উক্তি—‘যদি আমি ওই কোর্সে না যেতাম তবে ম্যাকের কখনোই বিভিন্ন টাইপফেস বা সামঞ্জস্যপূর্ণ ফন্টগুলো থাকত না।’ এই কোম্পানির আরও একটি ব্র্যান্ড হলো, অ্যাপলের কম্পিউটার। অ্যাপল কম্পিউটার যুক্তরাষ্ট্রের একটি ব্যক্তিগত কম্পিউটার, কম্পিউটার যন্ত্রাংশ ও সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। এটি প্রথম সফল ব্যক্তিগত কম্পিউটার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। এর সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের কুপার্টিনো নামক স্থানে অবস্থিত। ১৯৭৮ সালে ভোজনিয়াক একটি স্বল্প মূল্যের হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ তৈরি করেন যা নির্ভরযোগ্যতা অর্জন করে। এর স্পিড বেশি হওয়ায় অ্যাপল ২ কম্পিউটার অনেক নিবেদিতপ্রাণ প্রোগ্রামারদের পছন্দের কম্পিউটারে পরিণত হয়। এটি বাজারজাত করার পরপরই এর জন্য বোস্টনের দুজন প্রোগ্রামার ড্যান ব্রিকলিন ও বব ফ্রাংকস্টন ভিসি ক্যালক নামক একটি প্রোগ্রাম তৈরি করে যা হার্ড ডিস্ক ব্যবহারকে অনেক সহজ করে দেয়। ফলে অ্যাপলের হার্ড ডিস্কের বাজার বৃদ্ধি পায়। বিশেষত ১৯৯০ সালের পর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে এর ব্যবহার দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
বিল গেটস
উইলিয়াম হেনরি গেটস বা বিল গেটস-এর জন্ম অক্টোবরের ২৮ তারিখ, ১৯৫৫ সালে। সর্বমহলে সুপরিচিত মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে। সেই সাথে তিনি এই কোম্পানির চেয়ারম্যান, সাবেক প্রধান সফটওয়্যার নির্মাতা, এবং সাবেক সিইও। তার আরও একটি পরিচয় হলো, তিনি শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের তালিকার প্রথম স্থানে আছেন। গত ১৩ বছর ধরে তিনি পৃথিবীর সর্বোচ্চ ধনী ব্যক্তি। তিনি ১৯৯৪ সালের ১ জানুয়ারি তারিখে মেলিন্ডা ফ্রেঞ্চ- কে বিয়ে করেন। ব্যবসা এবং অর্থনীতির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন ‘ফোরবিস’-এর দৃষ্টিতে এবারও মাইক্রোসফট কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান ৫০ বছর বয়স্ক বিল গেটস বিশ্বের ধনীদের শীর্ষ অবস্থানই ধরে রাখতে সমর্থ হয়েছেন। বিল গেটস এ নিয়ে একটানা ১৩ বছর ধরে বিশ্বের সেরা ধনীদের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করে রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। বিল গেটস সিয়াটল, ওয়াশিংটনে উচ্চ-মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম উইলিয়াম হেনির গেটস সিনিয়র, যিনি একজন প্রসিদ্ধ আইনজীবী (অবসরপ্রাপ্ত)। তার মা মেরি ম্যাক্সয়েল গেটস। গেটসের ক্রিস্টিয়েন নামে এক বড় বোন আর লিব্বি নামের এক ছোট বোন আছে। তার শৈশবে বাবা-মা তাকে আইনজীবী বানাতে চেয়েছিলেন। ১৩ বছর বয়সে তিনি লেকসাইড স্কুলে ভর্তি হন। এখান থেকে ১৯৭৩ সালে পাস করেন। তিনি স্যাট পরীক্ষায় ১৬০০-এর মধ্যে ১৫৯০ পান এবং ১৯৭৩-এর শুরুতে তিনি হাভার্ড কলেজে ভর্তি হন। তিনি তার ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই একটি কোম্পানি নিয়ে কাজ করে গেছেন, সেটি হলো আজ বিশ্বের বুকে জেগে থাকা একটি নামকরা ব্র্যান্ড মাইক্রোসফট। মাইক্রোসফট কর্পোরেশন, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি কম্পিউটার প্রযুক্তি কর্পোরেশন। এটি বিভিন্ন কম্পিউটার ডিভাইসের জন্য সফটওয়্যার তৈরি, লাইসেন্স দেওয়া এবং পৃষ্টপোষকতা করে থাকে। এটির সদর দপ্তর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের রেডমন্ড শহরে অবস্থিত। এদের সবচেয়ে জনপ্রিয় সফটওয়্যারগুলো হলো মাইক্রোসফট উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম এবং মাইক্রোসফট অফিস। ডেভেলপারদের জন্য মাইক্রোসফ্ট ভিজুয়াল স্টুডিও এবং মাইক্রোসফট এসকিউএল সার্ভার বেশ জনপ্রিয়। এদের প্রত্যেকটি সফটওয়্যারই ডেস্কটপ কম্পিউটার বাজারে প্রায় সর্বব্যাপী বিস্তার লাভ করেছে। এ ছাড়াও মাইক্রোসফট এমএসএনবিসি কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক, এমএসএন ইন্টারনেট পোর্টাল, মাইক্রোসফট এনকার্টা মাল্টিমিডিয়া বিশ্বকোষের মালিক। মাইক্রোসফট কম্পিউটার হার্ডওয়্যার যেমন মাইক্রোসফট মাউস এবং হোম এন্টারটেইনমেন্ট যেমন—এক্সবক্স, এক্সবক্স ৩৬০ এবং মাইক্রোসফট মিডিয়ারুম সেট-টপ বক্স প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। মাইক্রোসফটের অফিসে পল অ্যালেন ও বিল গেটস মেক্সিকোতে মাইক্রোসফট শুরু হলেও ১৯৭৯ সালের জানুয়ারির দিকে ওয়াশিংটনের বেলভূতে চলে আসে মাইক্রোসফট।
ল্যারি পেইজ
সফলদের স্বপ্নগাথা ইন্টারনেট জগতে সার্চ ইঞ্জিন গুগলকে কে না চেনে। ল্যারি পেইজ এই গুগলের উদ্ভাবক। আজ থেকে ১২ বছর আগে ১৯৯৮ সালে ল্যারি ও তার বন্ধু সার্জি ব্রিন মিলে গুগলের যাত্রা শুরু করেন। গুগলের স্বপ্নদ্রষ্টা লরেনস ল্যারি পেইজ ১৯৭৩ সালের ২৬ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০০৯ সালের ২ মে ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এই বক্তৃতাটি দেন। অনেক দিন আগের কথা। ১৯৬২ সালের সেপ্টেম্বর মাস। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সহশিক্ষা কার্যক্রম হিসেবে বিভিন্ন কাজ থাকত। তারই একটি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রান্নাঘরের দেয়াল ও ছাদ থেকে ময়লা পরিষ্কার করা। আর ওই ময়লা পরিষ্কার করতে গিয়ে মা ও বাবার পরিচয়। বাবা এই মিশিগানেই কম্পিউটার যোগাযোগ বিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। গুগলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেইজ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী হলে গুগলের আরও প্রভাব বাড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ল্যারি প্রধান নির্বাহী পদে বসার পর গুগলের বেশকিছু নতুন পণ্য এবং সেবা বাজারে আনার ঘোষণাও আসতে পারে। ৩৮ বছর বয়সী গুগল প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেইজ আগামী এপ্রিল থেকে গুগলের প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সিলিকনভ্যালি-ভিত্তিক তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষক ক্রিস ডিক্সন জানান, প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান নির্বাহী হবেন এটি নতুন কিছু নয়। অতীতের ইতিহাস বলে, প্রতিষ্ঠাতার প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে প্রতিষ্ঠানটি আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। অ্যাপলের প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ জবস এবং ইয়াহু প্রতিষ্ঠাতা জেরি ইয়াং এর অন্যতম উদাহরণ। তাদের পথেই হাঁটবেন ল্যারি। প্রতিষ্ঠার দীর্ঘদিন পর অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী হন স্টিভ জবস। তারই নেতৃত্বে অ্যাপল একে একে বাজারে আনে আইফোন, আইপড এবং সর্বশেষ আইপ্যাডের মতো পণ্য। ইয়াহুতে জেরি ইয়াংয়ের নেতৃত্বে বেশকিছু নতুন সেবা চালু হয়েছিল প্রতিষ্ঠানটির। ১৯৯৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিন একটি প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে গুগল প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৪ সালের ১৯ আগস্ট এটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয়। সময়ের সাথে নিত্যনতুন পণ্য ও সেবা যোগ করে গুগল প্রতিনিয়ত নিজেদের আকার ও উপযোগিতা বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। একই সাথে নতুন কোম্পানি কিনে নিজেদের সাথে একীভূতকরণ, ভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে অংশীদারিত্ব ও বিজ্ঞাপন জগতে নিজেদের অবস্থানকে সুদৃঢ়ীকরণের মাধ্যমে নিজেদের বহুমুখিতাকে সমৃদ্ধ করেছে। ফলে তথ্য খোঁজার পাশাপাশি বর্তমানে ইমেইল, সামাজিক নেটওয়ার্কিং, ভিডিও শেয়ারিং, অফিস প্রোডাক্টিভিটি প্রভৃতি বিষয়ে গুগলের সেবা রয়েছে।
জেফ বেজোস
বিখ্যাত ক্রয়-বিক্রয় সাইট আমাজন। যাত্রা শুরু করে জেফ বেজোসের হাত ধরে। জেফ বেজোস, আমাজন সাইটের প্রতিষ্ঠাতা যার জন্ম হয়েছিল ১২ জানুয়ারি। বর্তমানে তিনি এই প্রতিষ্ঠানটির ফাউন্ডার, প্রেসিডেন্ট ও চিফ এক্সিকিউটিভ পদে আছেন। তিনি পড়াশোনার পাঠ শেষ করেছিলেন প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি থেকে। পাশাপাশি পার্টটাইমার হিসেবেও কাজ করতেন। সেখান থেকেই তিনি তার ক্যারিয়ারের শুরু করেন। তিনি আমাজন প্রতিষ্ঠা করেন ১৯৯৪ সালে। ছোট একটি ব্যবসা ধারণা থেকেই জন্ম নেয় আজকের এই বিশাল প্রতিষ্ঠান আমাজন। কেনাকাটার জনপ্রিয় ওয়েবসাইট আমাজন ডটকম সম্প্রতি ১৫ বছর পূর্ণ করেছে। ১৯৯৫ সালে চালু হওয়া এ ওয়েবসাইট থেকে কেনা যায় প্রয়োজনীয় প্রায় সবকিছুই। আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস অনলাইনে কেনাকাটার সুবিধা নিয়ে চালু করেছিলেন ওয়েবসাইটটি। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফরেস্টারের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে অনলাইনে কেনাকাটা বেড়েছে ১১ শতাংশ এবং প্রায় ১৫ কোটি লোক নিয়মিত কেনাকাটা করছে। খাবার থেকে শুরু করে নানা ধরনের পণ্য কেনার ক্ষেত্রে আমাজনের রয়েছে ওয়ান ক্লিক শপিং-ব্যবস্থা। দিনে দিনে প্রায় সব ধরনের পণ্য কেনার জন্য ক্রেতারাই ঝুঁকছে অনলাইনে। বিলাস দ্রব্যের বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান বেইন অ্যান্ড কোম্পানির মতে, বিলাসবহুল নানা ধরনের পণ্য অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। অনলাইনে কেনাকাটায় আগ্রহী গ্রাহকদের ওপর পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, প্রায় ৮৩ শতাংশ গ্রাহক অনলাইনে পণ্য কেনাকাটার ক্ষেত্রে স্বস্তি বোধ করেন, কারণ অনলাইনে বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন হয় না, যেখানে দোকান থেকে কিনতে গেলে বিক্রেতার সঙ্গে অনেক কথা বলতে হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনলাইনে কেনাকাটার বড় অধ্যায়টি চালু হয়েছিল আমাজনের হাত ধরে। দীর্ঘ এ পথচলায় আমাজন সফল হয়েছে গ্রাহকদের অনলাইনে কেনাকাটার পূর্ণাঙ্গ সুবিধা দিতে। সফলভাবে ১৫ বছর পার করা আমাজন এ সেবা ধরে রাখতে অঙ্গীকারের কথাও জানিয়েছে। তবে এই সাইট নিয়ে কিছু বিতর্কও রয়েছে। প্রযুক্তি বিশ্বে অনেকদিন ধরেই জোর গুজব রয়েছে যে আমাজন অচিরেই স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট নিয়ে আসবে। সম্প্রতি আমাজন সিইও জেফ বেজোস এমন একটি প্রশ্ন কৌশলে এড়িয়ে গেলে এ ধারণা আরও প্রকট হয় যে খুব সম্ভবত এ বছরই আমাজন-এর স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেট বাজারে পাওয়া যাবে। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে ট্যাবলেট এবং স্মার্টফোনই হচ্ছে প্রযুক্তি জগতের ভবিষ্যত্। এ ছাড়াও তারা ট্যাবলেট এবং স্মার্টফোনে খুব সহজেই বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের জন্য ডিভাইসগুলোর দাম কম রাখতে পারে।
মাইকেল ডেল
১৯৬৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে জন্মগ্রহণকারী মাইকেল ডেল-এর প্রধান পরিচয় তিনি ডেল কম্পিউটারের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী। ১৯৮৪ সালে তার কোম্পানি যখন যাত্রা শুরু করে তখনো তিনি ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের ছাত্র। তার অবিশ্বাস্য অগ্রগতির অন্যতম কারণ তার পণ্যসামগ্রী (ডেল কম্পিউটার) কিছুটা কম দামে সরাসরি ক্রেতার হাতে পৌঁছানোর কৌশল গ্রহণ। ফলে দ্রুত তিনি বাজার দখল করতে সক্ষম হন। মাত্র ২৪ বছর বয়সেই তিনি আয় করেন ২৫৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ‘ফোর্বস’ ম্যাগাজিনের সর্বশেষ হিসাব মতে তার বর্তমান সম্পত্তি প্রায় ১৩.৫ বিলিয়ন ডলার! বর্তমানে বিশ্বের ৩৪টি দেশে ডেল-এর অফিস রয়েছে এবং এখানে কাজ করছে প্রায় ৩৬ হাজার কর্মী। বর্তমান কম্পিউটার ইন্ডাস্ট্রিতে মাইকেল ডেল সবচেয়ে বড় সেবা প্রদানকারী নির্বাহীর একজন। স্ত্রী সুসান এবং চার সন্তানের জনক ডেল-এর অন্যান্য অর্জনও কম নয়। তিনি অর্জন করেছেন দ্য টাইটেল অব দ্য এন্টারপ্রেণার। এ ছাড়া পি-সি ম্যাগাজিনের জরিপে ম্যান অব দ্য ইয়ার, বিজনেস উইক-এর বিবেচনায় ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত ছিলেন সেরা ২৫ ব্যবস্থাপকের তালিকায়। স্ত্রী সুসানকে সঙ্গে নিয়ে মাইকেল ডেল প্রতিষ্ঠা করেছেন—‘মাইকেল এন্ড সুসান ডেল একাডেমি’-যেখানে পিশেষভাবে শিশুদেরকে সহায়তা দেওয়া হয়। ২০১০ সালের এই পর্যন্ত যুক্তরাজ্য এবং ভারতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে (অলাভজনক) প্রায় ৫৩০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এই ফাউন্ডেশন থেকে। মাইকেল ডেল, একাডেমি অব অ্যাচিভমেন্ট-এর এক সাক্ষাত্কারে তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘আপনাকে অবশ্যই এ ব্যাপারে (সফলতার জন্য) উত্সাহী থাকতে হবে।’ ২০০৫ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের নির্বাচনী তহবিলে ডেল এবং সুসান দম্পতির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মিলে প্রায় আড়াই লাখ ডলার দিয়েছিল যা ছিল ওই সময়কার সর্বোচ্চ বৈধ অনুদান। ক্যারিয়ারের শুরুতে অনেক অনেক ঝামেলার মধ্য দিয়ে নিজের ভিতটি গড়ে তোলেন। যেমন, ড্যান ব্রাউন তার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন হাইস্কুলের ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে। পরবর্তী সময়ে নিজের মেধায় তিনি বিখ্যাত হয়েছেন, সুনাম কুড়িয়েছেন সাহিত্যিক হিসেবে। ডেল কম্পিউটার কর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মাইকেল ডেল। তিনি শুরুতে একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টের ডিশওয়াশার হিসেবে কাজ করে ঘণ্টায় পেতেন আড়াই ডলার। পরবর্তী সময়ে নিজের মেধা আর সৃষ্টিশীলতা দিয়ে গড়ে তুলেছেন ডেল কম্পিউটার কর্পোরেশনের মতো বিশ্ববিখ্যাত প্রতিষ্ঠান।