স্কুলে শ্রেণিকক্ষে পড়ানোর ফলে পুঁথিগত বিদ্যাই মননগত বিদ্যাতে পরিণত হবে। শিক্ষার প্রারম্ভ তো পুঁথি দিয়েই শুরু করতে হয়। তাছাড়া পুঁথিতেই সব লেখা আছে। শিক্ষকের হাত ধরে, শিক্ষাগুরুর তত্ত্বাবধানে সেই পুঁথিগত বিদ্যা খুব সহজে মননগত হয়। শুধুমাত্র শিক্ষকদের শিক্ষাদানের মাধ্যমে।
আমি যদি নিজে নিজে কোন বই পড়ি সেটা হল পুঁথিগত বিদ্যা। আর আমাকে যদি কেউ সেই বই অনুসারে বলে বা বুঝিয়ে দেয় সেটা হল মননগত। শিক্ষক যদি শ্রেণিকক্ষে না পড়ায় তাহলেও শিক্ষার্থী পড়ে নিচ্ছে। তাহলে তা হয়ে যাচ্ছে পুঁথিগত বিদ্যা। যেহেতু শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে পড়াচ্ছে না তাই এই পুঁথিগত বিদ্যা মননগত হচ্ছে না। এই পুঁথিগত বিদ্যা মননগত করতে না পারলে সমাজের অবক্ষয় অবশ্যম্ভাবী। দায়িত্ব শিক্ষকের।
বোধ জন্মানোর পরে মানুষের জীবনে একটা সময় তো পুঁথি নিজেই শিক্ষক হয়ে যায়। পুঁথিকে সাথে করে কত প্রাজ্ঞ বিজ্ঞ ব্যক্তি চরিত্রগতভাবে অনিন্দ্য সুন্দর হয়ে গেছেন। তার মানে পুঁথিই তখন মননগত।
কিন্তু বোধ জন্মানোর আগে শিক্ষক বা শিক্ষাগুরু থাকা দরকার। সেই সাথে শিক্ষা দেওয়াও জরুরী। মননগত শিক্ষা দেওয়া জরুরি।
সেইজন্য সমস্ত অবস্থানে শিক্ষক জরুরী। প্রতিভা যতই থাক, যত বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন হোক সঠিক অবস্থানে, সঠিক দিশায় এবং সঠিক শিক্ষকের হাতে না পড়লে প্রতিভা বিনষ্ট হতে সময় লাগে না। খেলাধূলা, নাচ, গান, আঁকা, আবৃত্তি ইত্যাদি প্রতিভা প্রস্ফুটিত হওয়ার ক্ষেত্রেও শিক্ষক বা শিক্ষাগুরু জরুরী।
এবং সেই শিক্ষা দিতে হবে সঠিক স্থানে। খেলাধূলা শেখাতে হবে খেলার মাঠে, নাচ শেখাতে হবে নাচের ক্লাসে, গান গানের প্রতিষ্ঠানে, আঁকা আঁকার পরিবেশে এবং স্কুলে শ্রেণিকক্ষে। না হলে হবে না। অন্য কোথাও (যেমন টিউশন) ছড়িয়ে ছিটিয়ে শিক্ষা হয়তো নেবে, প্রতিভা বুদবুদের মত হয়তো ফুটে উঠবে কিন্তু মানুষের মত মানুষ হবে না। স্পোর্টম্যান স্পিরিট পাবে না। শেখাকে মননগত করতে পারবে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:০৮