আসিফ মহিউদ্দীন মুক্তি পেলেও প্রতিবাদ-সংহতি সমাবেশ জরুরী। একজন ব্লগার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের পক্ষে একটি লেখা লিখবেন ও সংহতি সমাবেশের আয়োজন করবেন আর তার জন্য তাকে ডিবি অফিসে ডেকে নিয়ে আটকে রাখা হবে, পারিবারিক মুচলেকা নিয়ে ছাড়া হবে.. এই ফ্যাসিবাদী আচরণের তীব্র প্রতিবাদ হওয়া জরুরী। ফ্যাসিবাদের বৈশিষ্ট সম্পর্কে লিখতে গিয়ে ড.লরেন্স ব্রিট যে ১৪টি বৈশিষ্টের কথা উল্ল্যেখ করেছিলেন তার একটি হলো:
“বুদ্ধিবৃত্তি ও শিল্প সাহিত্যের প্রতি বিবমিষা: ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা এবং একাডেমিশিয়ানদেরকে শত্রু হিসেবে ধরা হয় এবং শিল্প-সাহিত্যে মুক্তচিন্তার প্রকাশকে সরাসরি আক্রমণ করা হয়।“
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বেসরকারিকরণের ধান্দা ও তার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গড়ে ওঠা আন্দোলনে সংহতি সংগঠিত করতে গিয়ে ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীনের ডিবি পুলিশের কাছে আটক হওয়া- এই দুই ঘটনা ১১ নম্বর বৈশিষ্টটির সাথে খাপে খাপে মিলে যায়।একদিকে উচ্চশিক্ষাকে দু:স্প্রাপ্য কর, বেসরকারি করণ কর, বাণিজ্যিকীকরণ কর অন্যদিকে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের গলা টিপে ধর। এই ততপরতাই তো চালাচ্ছে রাষ্ট্র। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দোষ তারা শিক্ষাকে পণ্য বানানোর বিরুদ্ধে রুখে দাড়িয়েছে আর ব্লগার অনলাইন অ্যাক্টিভিষ্ট আসিফ মহিউদ্দীনদের দোষ তারা এই শিক্ষা রক্ষার লড়াইয়ে সংহতি জানিয়েছে। এই দুটি ঘটনাই ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা নিজেদের শিক্ষাজীবন রক্ষা করার আন্দোলনে নেমে গোটা বাংলাদেশের শিক্ষাব্যাবস্থা বাণিজ্যিকরণের বিরুদ্ধে নেতৃত্বের কাতারে দাড়িয়ে গেছে আর ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন ও তার সহ-ব্লাগার অ্যাক্টিভিষ্টরা সেই লড়াইয়ে সংহতি প্রকাশ করতে গিয়ে আজকে বাংলাদেশে মুক্তিচিন্তা-মুক্তিবুদ্ধি সহ বৃহত্তর জনগণের পক্ষে দাড়ানোর সর্বশেষ অবশিষ্ট জায়গাটির অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে সামনে চলে এসেছেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বাণিজ্যিকরণের ধান্দা যেমন আলাদা কোন ঘটনা নয়, কুমিল্লা-কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সহ সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বাণিজ্যিকীকরণের ধান্দারই অংশ, তেমনি তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সংহতি জানানো আসিফ মহিউদ্দীন সহ ব্লগার অ্যাক্টিভিষ্টদের লড়াইটাও কেবল কয়েকজন ব্লগারের বিষয় হিসেবে সীমাবদ্ধ থাকছে না। বন্ধুরা খেয়াল করেন, বাংলা ভার্চুয়াল ব্লগ কিন্তু ভার্চুয়াল রিয়্যালিটির মধ্যে সীমাব্ধ থাকেনি, সবসময়ই দেশ ও দশের বাস্তব সমস্যায় নাক গলিয়েছে-শুধ ভার্চুয়ালি নয়, শুধু লেখা লেখি করে নেয়- একেবারে সরাসরি রাস্তায় নেমে। এখন এই রাস্তায় নেমে আসার ফলে, নিজেদের স্বাধীন গণতান্ত্রিক মতপ্রকাশের ফলে যদি আসিফ মহিউদ্দীনের মতো অ্যাক্টিভিষ্টদের রাষ্ট্রের ফ্যাসিস্ট আক্রমণের শিকার হতে হয় এবং যদি আমরা আমাদের ততপরতার মাধ্যমে, মতামত গঠনের ক্ষমতার মাধ্যমে সময় মতো নিজেদের শক্তি সামর্থ্য’র জানান দিতে না পারি, যদি রাষ্ট্রকে স্পষ্ট সিগনাল দিতে না পারি যে মতামত প্রকাশের জন্য, প্রতিবাদ প্রতিরোধের জন্য কাউকে এভাবে আসিফ মহিউদ্দীনের মতো আটক করে রাখা, ভয়ভীতি দেখানো,হয়রানি করার ফ্যাসিবাদী ততপরতাকে আমরা সহ্য করব না, তাহলে ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ব্যাবস্থা কিন্তু আমাদেরকে আরো পেয়ে বসবে।
কাজেই সহ-ব্লগার বন্ধুগণ, আমাদের কাধে এখন একাধিক দ্বায়িত্ব চলে এসেছে- একদিকে শিক্ষা বাণিজ্য প্রতিরোধ এবং অন্যদিকে ব্লগিং-মুক্তচিন্তা প্রকাশের শেষ আশ্রয়স্থল এই ব্লগিংকে রক্ষা করা। ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীনকে হয়রানির প্রতিবাদ এবং সেই সাথে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বাণিজ্য প্রতিরোধ আন্দোলনের সংহতি প্রদান- এই দুটো আজ একসূত্রে গাথা।
আসুন, বন্ধুগণ, রাস্তায় নেমে আসুন- সময় হয়েছে এবার আমাদের নিজেদের শক্তির জানান দেয়ার।
দেখা হবে, আজ একটু পর, শাহবাগ মোড়ে, বিকাল ৪টায়।
১. ০২ রা অক্টোবর, ২০১১ দুপুর ২:৪০ ০
আসিফ সাহেবের ধর্ম বিদ্যেশী মনোভাব ও তার নগ্ন প্রকাশভঙ্গীর জন্য অনেক আছেই তার শ্রীঘর দর্শন অত্রাবশ্যকীয় ছিল। অথচ ঘটেছে ঠিক উল্ট পশিশ তাকে শাসিয়েছে ছাত্র আন্দোলনে সমপৃক্ত হবার জন্য।
তার মুক্তির পর এখন আবার আয়োজন কারা হচ্ছে প্রতিবাদ সভা ! এক জন বিতর্কিত ব্যাক্তিকে 'জাতে তোলার' এই আপ্রাণ শেষ্টা না করলেই কী নয় ?
তার মক্তির দাবীতে আমিও গলা মিলিয়েছি কিন্তু প্রতিবাদ সভায় তার গুণকৃর্তনকরে তাকে 'ধর্ম নিয়ে আরো বেশী টানাটানি' করেতে উৎসাহ দিতে চাই না।