আজিজ মার্কেট নিয়া আমার জল্পনা কল্পনা বরাবরই বিদ্যমান ছিলো, কারন লোক মুখে শ্রবণ করিয়াছি যে ইহা জ্ঞানী গুণী এবং সমাজ ও রাজনীতি সচেতন ভদ্দরলোকদিগের তীর্থস্থান। তাই, আপন জ্ঞানের পরিধিকে জ্ঞানে রাখতঃ মনের ভুলেও কোন দিন উহার পথে পা দিবার সাহস করিয়া উঠিতে পারি নাই। কিন্তু কবি বলেছেন, "যেখানে যেতে তোর ভয়, ঐখানেই যেতে হয়" (কবি: রবীগুরু কবিন্দ্রনাথ পাকুর) তাহাই, কবি কথা কে সত্য প্রমাণিত করতঃ একদিন বিশেষ প্রয়োজনে হেথায় গিয়া উঠিলাম। যতই উপরের তালা সমূহে উঠিতে লাগিলাম ততই ভয় আমার মনোযগত কে অস্থির করিয়া তুলিলো। দেয়ালে দেয়ালে তথাকথিত "অজিজীয় কবিতা" এবং স্থানে স্থানে লম্বা চুল এবং কাধে "চারুকলা" থলে ঝুলন্ত কিছু অনাহারে অর্ধাহারে দিন যাপনরত যুবকগন কে দেখিলাম যাহারা তাহাদের একমাত্র খাদ্য() চা পান করিতেছিলেন। উহাদিগেরই একজন কে জিজ্ঞাসীলাম, "আতেল সন্মেলন খানি হচ্ছে কোথা?" সেই যুবক ও তাহার সঙ্গিদের মুখে কেমন যেন খুশির আভা ছড়াইয়া পড়িল। আমর স্বীয় বুক অনির্দিষ্ট কারন বশত দুরু দুরু করিয়া উঠিলো। ছিনতাই কারীর হস্থে পরিয়াছি ইহা অনুধাবন করত যখন দৌড় দেওয়ার নিমিত্তে মনস্থির করিয়া ফেলিয়াছি ঠিক তক্ষুনী যুবকগণের একজন বলিয়া উঠিলো "আতেল সন্মেলনে গমনের পুর্বে আপনাকে বুঝিতে হইবে "what do we mean by atel?" আজিজীয় যুবক এর পাশ্চাত্য ভাষায় দখল দেখিয়া আমি প্রীত না হইয়া পাড়িলাম না। বুঝিলাম, ইহারাও আতেল বৈ আর কিছু নহে। কিন্তু বিধিবাম! ততক্ষনে যুবক ত্রিগের (৩ জন) মধ্যে আতেলের সঙ্গা লইয়া বিরাট "ক্যাতা" লাগিয়া গিয়াছে। এক যুবক কে বলিতে শুনিলাম, "যাহারা আমদিগের মত আজিজ মার্কেট ও সংলগ্ন এলাকায় অর্ধাহারে ঘুর ঘুর করে এবং কড়া রোদেও ভাব দেখানোর নিমিত্তে কালো বর্ণের কাব্য সমৃদ্ধ পাঞ্জাবী ও লম্বা চুলের বাহার লইয়া ফালতু এবং ফাউল বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা তথা জ্ঞান ফলানোর চেষ্টায় রত থাকে এবং শুধুমাত্র মুখের বুলির মাধ্যমে দিন ও দুনিয়া বদলে ফেলিবে বলিয়া মনে করে, তাহারাই আতেল"
আমি ততোক্ষনে আতেলের সঙ্গা শ্রবণ করতঃ নিজ বিবেচনায় আতেলের সঙ্গা তৈয়ার করতঃ আতেল সন্মেলনের সন্ধানে বাহির হইলাম। শিঘ্রই সন্মেলনস্থল পাইয়াও গেলাম।
.................................
আর এভাবেই আমিও আজিজ সমাজের অন্তর্ভূক্ত হইলাম। লোক মুখে শুনিতেছি আজিজ মার্কেট ভাঙ্গিবার কর্ম শিঘ্রই শুরু হবে এবং ইহার বিরোধীতা করিয়া আতেল সমাজ আন্দেলনের ডাক দিবার পায়তারা ফ্রাই করিতেছে। আমি তাই অতি শিঘ্রই আমার তল্পিতল্পা গুছাইয়া আজিজ মার্কেটের "কমিউনিটি" হইতে পলায়নের তথা "ন দো জ্ঞারা" হইবার পথ খুজিতেছি। কারন দেশ ও জাতির উন্নয়নে আজিজ মার্কেট ও তৎসংলগ্ন আতেলগন যে কী ভূমিকা রাখিবে তাহা আমি এতদিনে বুঝিয়া উঠিতে সক্ষম হইয়া গিয়াছি।
বি: দ্র: আশার কথা হইল, গত ৫ বৎসর অত্র আজিজে থাকিয়া লাভের মধ্যে এই লাভ হইয়াছে যে, অর্ধাহারে থাকার দরুন এবং খাদ্য হিসেবে কেবল চা, সিগারেট এবং "বন রুটি" খাইবার ফলে আমার দেহ হইতে অতিরিক্ত ৭ কিলোগ্রাম চর্বি কমিয়া গিয়াছে এবং চুল ও দাড়ি কামানোর পয়সা তো বাচিয়াছেই, উপরন্তু চেহারায় একটি "বদ-খত" ভাব ফুটিয়া উঠিয়াছে যাহা ব্যাবহার করিয়া আমি আমার স্বপ্নের "গঞ্জিকা ব্যাবসায়" ভালো যশ কামাইতে পারিব বলিয়া আশা করি।
জয়তু আতেলগণ, জয়তু আজিজ মার্কেট..."
ও আজিজ, তুমি না থাকিলে কি যে হইতো...লও হে,লও সালাম,
আমি নইকো নাট্যাভিনেতা আযাদ আবুল কালাম