somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

২০১১ বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সাফল্য নিয়ে জিওফ্রে বয়কটের সন্দেহ ও আমার কয়েকটি কথা

০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৯:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কয়েকদিন আগে শন পোলক বলেছিলেন যে বাংলাদেশ কিন্তু বিশ্বকাপে যে কোন সময় যে কোন দলকে বিপদে ফেলতে পারে।তাঁর এই কথাটা পড়ে আমার খুব ভালো লেগেছিল।মনে হয়েছিল এখন বড় বড় ক্রিকেটাররাও বাংলাদেশকে সম্মান দিতে শিখেছেন যেটা তাঁরা মূলত করতেন বাংলাদেশের সাথে কোন সিরিজ খেলার সময়;কেবলমাত্র সৌজন্যতাবোধের কারণে।যদিও বিশ্বকাপও একটা টুর্নামেন্ট,কিন্তু অতীতে এ আসরে বাংলাদেশকে নিয়ে প্রতিপক্ষরা ততটা চিন্তা করত না এবার যতটা করছে।এ থেকে স্পষ্টতই বোঝা যায় বাংলাদেশ ইমপ্রোভ করেছে।

২০১১ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত, সাউথ আফ্রিকা, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, ইংল্যান্ড ও ওয়েষ্ট ইন্ডিজ।এদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত দুর্বল আয়ারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডের বিপক্ষেই বাংলাদেশ জয় পাবে, অন্য কোন টিমের সাথে পেরে উঠবে না – ২০০৮/০৯ সালেও এমনটা ভাবা হত,এমনকি ২০১০ সালের মাঝামাঝি সময়েও।কিন্তু ইংল্যান্ডকে ১টিতে ও নিউজিল্যান্ডকে টানা ৪টিতে হারানোর পর দৃশ্যপট পালটে যায়।এখন মনে করা হচ্ছে বাংলাদেশকে ২০১১ বিশ্বকাপে যে কোন দলকে হারাতে সক্ষম, বিশেষ করে সাউথ এশিয়ার বাইরের দলগুলোকে।

দৈনিক কালের কন্ঠ – তে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে স্থান পাওয়া খেলোয়াড়দের যে প্রতিবেদন ছাপা হচ্ছে, তাতে খেলোয়াড়েরা বলছেন যে তারা কমপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে পারবে।এ ব্যাপারটি বড় নয়,আসল কথা হচ্ছে খেলোয়াড়দের মধ্যে এখন আত্মবিশ্বাসটা চলে এসেছে যে তারা যেকোন ম্যাচ জিতে নিতে পারে যদি তারা ভালো করে খেলে।এ বিশ্বাসটা আগের বিশ্বকাপে তেমন প্রবলভাবে ছিল না এবার যেমনটা আছে।এই আত্মবিশ্বাস অর্জন করা অনেক সাধনার ব্যাপার যা আমাদের ক্রিকেটাররা কিছুটা আয়ত্ত করেছে।ব্যাপারটা খুব আশাব্যঞ্জক,তাই না?

এবার আসি আসল কথায়।আজকের কালের কন্ঠে দেবাশিষ দত্তের নেয়া একটা সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছে।এই ভারতীয় সাংবাদিকের (আমি ঠিক শিওর নই এ কোন দেশের।কেউ জানলে বলে দেবেন প্লিজ) নেয়া প্রত্যেকটা সাক্ষাৎকারই আবার বেশ গোলা বারুদে ঠাসা থাকে :P ।আমি তাই তার ছাপা এসব প্রতিবেদনগুলো পড়ি আর উত্তেজিত হবার চেষ্টা করি!যদিও বেশিরভাগ সময় ব্যর্থ হই,কিন্তু তবুও পড়ি।

আজকে তার ছাপা সাক্ষাৎকারের মূল বক্তা ছিলেন জিওফ্রে বয়কট,ইংল্যান্ডের সেরা ক্রিকেটারদের একজন।সাক্ষাৎকারের মূল বিষয় ছিল ২০১১ বিশ্বকাপ;কে ফেভারিট, কে জিততে পারে ইত্যাদি ইত্যাদি।তিনি এসব প্রশ্নের উত্তরে প্রথমে বলেন ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান।পরে প্রশ্নকর্তা ১ নাম্বার দলের কথা মনে করিয়ে দিলে তিনি দিলেন এক হাস্যকর যুক্তি, “বয়স বাড়ছে ত,তাই ভুলে গিয়েছিলাম।”হাঃ হাঃ!!যারা কিনা গত তিনটি বিশ্বকাপ জিতেছে, যারা ইংল্যান্ডকে অ্যাশেজে হারার পর ওয়ানডেতে তুলোধুনো করছে (প্রমাণ আজকের ম্যাচটি ) এবং যারা কিনা ওয়ানডের ১ নাম্বার দল,তাদের কথাই তিনি ভুলে গেলেন!কি কথা বললেন তিনি!

যাই হোক, অষ্ট্রেলিয়াকে নিয়ে লেখার জন্য আমি এই পোষ্ট দিচ্ছি না।তাই এ প্রসঙ্গ বাতিল।

দেবাশিষ দত্ত তার সব প্রশ্ন শেষে বয়কটকে জিজ্ঞেস করেন, “তার মানে আপনি যা বলছেন তার সারমর্ম হল, আলটপকা কোন দেশ চ্যাম্পিয়ান হবে না এবারও।সেই ঘুরে ফিরে অষ্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড কিংবা উপমহাদেশের কোন দেশই চ্যাম্পিয়ান হবে?”

এখানে একটা কথা বলি।দেবাশিষ দত্ত কি ওয়ানডেতে কখনো ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ জিততে দেখেছে?মনে হয় দেখেছে!আমরা আবার মুখ্যুসুখ্যু মানুষ,কিছুই বুঝি না!!:P :P ;) ;)

তার প্রশ্নের জবাবে বয়কট বলেন, “এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি এমনই।জিম্বাবুয়ে, বাংলাদেশ, ওয়েষ্ট ইন্ডিজ হুট করে দু – একটা ম্যাচ জিতবে ঠিকই; তবে এ দেশগুলো চ্যাম্পিয়ান হবে ,এ কথা কেউই বলছে না।বলেছে কি কেউ?”

আমি এই মহান ক্রিকেটারের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, “হ্যাঁ জনাব, বলেছে।ওয়েষ্ট ইন্ডিজের এক ক্রিকেটার (রিচি রিচার্ডসন) বলেছেন যে ওয়েষ্ট ইন্ডিজ এবার বিশ্বকাপ জিততেই পারে!”

আরো কিছু কথা আছে।সেগুলো ইনভাটেড কমার মধ্যে না লিখে এখানে বলি।

আমি নিজেও খানিকটা কনফিউজড ছিলাম কয়েকদিন আগে যে এবার বোধহয় বাংলাদেশ আয়ারল্যান্ড আর নেদারল্যান্ড ছাড়া অন্য দলের বিপক্ষে জিততে পারবে না।কিন্তু এখন বয়কটের এ কথা শুনে মনে হচ্ছে বাংলাদেশের জেতা উচিৎ।হ্যাঁ,জেতা উচিৎ।কারণ এখন সময় এসেছে বয়কটের মত উঁচু মানের ক্রিকেটারদের ধারণা পালটে দেবার।অনেক সহ্য হয়েছে,আর না।নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এত বড় সাফল্য ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দেশের মাটিতে এত ফাইটের পরও যদি কেউ বলে “বাংলাদেশ হুট করে ম্যাচটি জিতে গেল”,তাহলে আর থাকা যায় না।

আমি তাই বলছি শুধু এই বিশ্বকাপে না,বছরের বাকি সিরিজগুলোতেও জিতে দেখাতে হবে বাংলাদেশকে।আমি জানি সিরিজ জেতাটা অনেক কঠিন, বিশেষ করে বিদেশের মাটিতে;তবুও বলছি অন্তত একটা হলেও ম্যাচ জেতার অভ্যাস গড়ে তোলো তোমরা সাকিব বাহিনী।কারণ একমাত্র নিয়মিত ম্যাচ জিতলেই বয়কটের মত লোকদের মুখ বন্ধ করা যাবে।যদি না জিততে পারো,তবে তারা আরো চান্স পেয়ে যাবে,যা সত্যিই হতাশাজনক।

আমি চাই তোমরা তাদের একেবারে ‘বয়কট’ করে ফেল!চিরদিনের জন্য!!

কি, পারবে ত ?
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:১৭
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পার্বত্য চট্টগ্রাম- মিয়ানমার-মিজোরাম ও মনিপুর রাজ্য মিলে খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনের চক্রান্ত চলছে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০১


মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা ভ্রমণ করেছেন । সেখানে তিনি ইন্ডিয়ানা তে বক্তব্য প্রদান কালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী chin-kuki-zo দের জন্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনে আমেরিকার সাহায্য চেয়েছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাসান মাহমুদ গর্ত থেকে বের হয়েছে

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১২


যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল হাসান মাহমুদের সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে। আমি ভাবতেও পারি নাই উনি এতো তারাতারি গর্ত থেকে বের হয়ে আসবে। এই লোকের কথা শুনলে আমার গায়ের লোম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দারিদ্রতা দূরীকরণে যাকাতের তাৎপর্য কতটুকু?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:১৮



দরিদ্র দূরীকরণে যাকাতের কোনো ভূমিকা নেই।
যাকাত দিয়ে দারিদ্রতা দূর করা যায় না। যাকাত বহু বছর আগের সিস্টেম। এই সিস্টেম আজকের আধুনিক যুগে কাজ করবে না। বিশ্ব অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখস্তান.....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:১৫

শেখস্তান.....

বহু বছর পর সম্প্রতি ঢাকা-পিরোজপু সড়ক পথে যাতায়াত করেছিলাম। গোপালগঞ্জ- টুংগীপাড়া এবং সংলগ্ন উপজেলা/ থানা- কোটালিপাড়া, কাশিয়ানী, মকসুদপুর অতিক্রম করার সময় সড়কের দুইপাশে শুধু শেখ পরিবারের নামে বিভিন্ন স্থাপনা দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের বিয়ের খাওয়া

লিখেছেন প্রামানিক, ০৫ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৮


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

১৯৬৮ সালের ঘটনা। বর আমার দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই। নাম মোঃ মোফাত আলী। তার বিয়েটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। বাবা ছিলেন সেই বিয়ের মাতব্বর।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×