খেলাধুলা এবং রাজনীতি কি একসাথে মেশানো উচিত?? আমি বলি না। খেলাধুলা হইলো আনন্দের বিশয় আর রাজনীতি হইলো নীতিনির্ধারনের বিশয় দুইটা মোটেও এক করে দেখা ঠিক না। এতে খেলা যেমন বিতর্কিত হবে তেমনি রাজনীতিও রাজনীতি না হয়ে ঠাট্টা তামাসার বস্তু হিসাবে পরিনত হবে। সুতরাং আমার ভোট হইলো খেলাধুলা থাক খেলাধুলার মত, রাজনীতি থাক রাজনীতির মত।
আসেন একটা ঘটনা শুনি যদিও উপরেরটার সাথে কখনোই মিলবে না। ঢাকায় সঙ্গত কারনেই মেসে থাকি। আমাদের খাওয়া দাওয়ার তত্বাবধায়ন করেন বুয়া। যাকে আমরা খালা বলে সম্ভোধন করি। উনি একজন বয়স্ক অশিক্ষিত মহিলা। যিনি গুনতেও পারেন না আমাদের মিল কয়টা হবে। তো উনার সাথে মেসের কয়েকজন ফান করেন, বিশেষ করে খেলার সময়। গতকাকাল একজন জিজ্ঞেস করছে খালা আপনি কোন দলের সাপোর্টার আগামিকাল? আরেকজন বলে আরে উনি পাকিস্থানের সাপোর্টার। তখন আমাদের এই মুর্খ বয়স্ক খালা উলটো জিজ্ঞেস করেন?? আমার দেশ কোনটা বাংলাদেশ নাকি পাকিস্থান??
আসেন ব্যাখ্যা করি খালার ভুলগুলো কোথায়?? খালা এখানে খেলার ভিতর দেশ এবং রাজনীতি টেনে এনেছেন যা মহা ভুল! কারন আমরা বলেছি খেলার সাথে ঐগুলা কখনোই যায়না তায়না। তাহলে প্রমানিত যে খালাটা আসলেই মূর্খ!
আমি যদি খালারে কইতাম খালা আপনি দেখি মহা মূর্খ। তখন খালার প্রতিউত্তর কোনগুলো হইতো আসেন সেইটাও আলোচনা করি। তিনি মনে হয় বলতেন " আরে ছাগল যে খেলাটার জন্মই হইছে রাজনৈতিক উদ্দ্যশ্যে সেইখানে রাজনীতি খুঁজবি নাতো খেলা খুঁজবি কোন বুদ্ধিতে। খেলা যদি আনন্দের জন্যই খেল্বি তাইলে পাক-ভারতের লগে খেল্বি ক্যান? তোর দেশে কি মানুষের অভাব পড়ছে। যা নিজেরা নিজেরা খেলে আনন্দ নে নিষেধ করছে কেডা?? হুদাই টাকা নষ্ট সময় নষ্ট কইরা লাভ কি??" তারপরো গুয়ার্তামি করে যদি বলি খালা খেলা তো খেলায়? উনি হইতো বলবেন বাছা ছোটবেলায় স্কুল কলেজে পড়ার সময়, অন্য ক্লাস, অন্য স্কুল কিংবা অন্য গ্রামের সাথে খেলেছো কখনো?? যদি খেলে থাকো তাহলে তাদের কে হারায়া কি বলতা?? বলতা নাকি অমুক স্কুলের অমুক ক্লাসের টিমডারে হারাইছি! নাকি বলতা অমুক গ্রাম কিংবা অমুক স্কুলরে হারাইছি। সেই গ্রামে কাউরে দেখলে ওরে বলতে কিরে তোগো তো হারায়া দিলাম সেই ব্যক্তি দলের সদস্য না হলেও। কেনো বলতা যদি এটা শুধুই একটা খেলা হইতো। আগে বুঝতে হবে রাজনীতি কি? রাজনীতি হইলো একটা গোষ্ঠির একত্রে বেঁচে থাকার নীতি এক কথায় বলতে গেলে। আর খেলা হইলো সেই গোষ্ঠির লোকজনের বেঁচে থাকার আনন্দ উপকরন। সেটা যদি একান্তই গোষ্ঠির মাঝে থাকে তাহলে সেটা নিছকি খেলা। কিন্তু সেটা যদি গোষ্ঠির বাইরে অন্য কারো সাথে হয় সেটা নিছক খেলা থাকে না হয়ে যায় লড়াই। মান সম্মানের লড়াই। অন্যের থেকে ভালো সেটা প্রমাণ করার লড়াই। দেখিয়ে দেওয়ার লড়াই। এখন তুমি যদি কউ যে এটা তো প্রতিহিংসা মুলক হইয়া গেলো, আমি বলি গোষ্ঠিগত বাঁচতে হলে কিছুটা প্রতিহিংসা থাকতেই হয়। কিছুটা আত্মকেন্দ্রিক হতেই হয় নতুবা সার্বভৌমত্বে দরকার কি?? একসাথে থাকলেই হয়। এখন কথা হইলো একসাথে কি থাকা যায়? বাঁচা যায়?? আমি বলি সমমনা হলে যায় নতুবা ধ্বংস হতে হয়। ভিন্ন ভিন্ন জাতী কখনৈ একত্রে থাকতে পারে না এখন পর্যন্ত পারে নাই। যদি পারতামি তাইলে পলাশি আইতো না, ৪৭ আইতো না, ৫২ আইতো না, ৭১ আইতো না। ২০১২ তে এসে সিমান্তে গুলি চলতো না। তখন আমি মিনমিন কইরা যদি বলি "পাকিরা/ভারতীয়রা আমাগো ধর্ম ভাই!" তখন তো খালা মনে হয় উচ্চস্বরে হেসে বলতো ওরে বলদ আপন ভাই স্বার্থের জন্য সইরা যায় আর এ তো তোর ধর্ম ভাই। স্বার্থ ছাড়া তো হেরা তোর দিক ফিরেও তাকাইবো না। ওরা যদি সত্যিই ভাই হইতো, সত্যি ধর্ম মানতো, সত্যি ধর্ম নামক জিনিষটার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকতো, ভ্রাতৃত্ববোধের প্রতি ভালোবাসা থাকতো, তবে ৩০ লক্ষ্য শহীদ হতোনা, ২ লক্ষ্য মা বোনকে লজ্জায় ডুবাইতো না। ফেলানিকে সিমান্তে ঝুলিয়ে রেখে বলতোনা চোরাকারবারি। বলতোনা পৃথিবীর সমস্ত পানি আমাদের। তোদের প্রতি যদি সত্যিই মায়া থাকতো তবে পৃথকিকরনের প্রয়োজনি পড়তোনা। ধর্ম যদি পালনি করতে হয় তায়লে নিজ দেশে কর। নিজ দেশের জন্য কর।
এর পরেও কিছু ছাগল খেলারে শুধুই খেলা মনে কইরা কাল পাকিদের দ্বারা স্বপ্নদোষে আক্রান্ত হবে। তাদের বলি, অন্য দেশরে হারায়লে আমাদের দল, পৈশাচিক আনন্দ লাভ করি আর সেটা যদি হয় পাক/ভারত তাইলে আরো বেশি। আপ্নে আমারে পিশাচ কইবার পারেন আমার আপত্তি নাই। ওগো ব্যাপারে আমি পিশাচই, কারন ওরাও আমাদের ব্যাপারে পিশাচ। পিশাচের সাথে ভালো মানুষ হইয়া রক্ত দিয়া লাভ নাই, কামড়াইতে আইলে কামড় দিবো হয় মরবো নতুবা জিতবো। এখন কইতে পারেন তাইলে যুদ্ধ করি না ক্যান। আমি বলি দেশে কি সবাই সৈন্য, নাহ গুটিকয়েক। সেই গুটিকয়েকের সাথে আছি থাকবো, সে যে যুদ্ধই হোকনা কেনো। সেটা পরাজয়ে হোক আর বিজয়ে। পরাজয়ে তাদের মতন বিষন্ন হবো, বিজয়ে গলা ফাটিয়ে মিছিল করবো। আপনার যদি ভালো না লাগে তাইলে চুপ থাকে সামনে আইসেন না নতুবা চুপিচুপি উল্লাস করেন গিয়া এদেশের মানুষ আর যাই হোক বিশ্বাসঘাতকদের মন রাখে, ঘৃণা পুষে রাখে তাদের জন্য। সেটা নিজামী, গোলাম আজম, মীরজাফরদের নাম শুনলেই বুঝতে পারার কথা।
আরো দুইটা মনে করিয়ে দেওয়া পোষ্টঃ
জাগো বাঙ্গালী... কাল পেয়ারের পাকিস্তানের খেলা। - আলিম আল রাজি
পাকিস্তান ক্রিকেট টিম কে কি আমরা সাপোর্ট করতে পারি? (একটি প্রাসঙ্গিক রিপোস্ট) - লিটল হামা
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০১২ ভোর ৫:০৫