somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি নস্টালজিক পোষ্টঃ যে সিনেমাটা কাঁদিয়েছিল এখনো কাঁদায়

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১১ বিকাল ৫:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যে সিনেমাটা কাঁদিয়েছিল এখনো কাঁদায় । খুব ছোটবেলায় টিভিতে দেখেছিলাম সিনেমাটা । দেখার আগেই শুনেছিলাম এর বেদনাদায়ক কাহিনি । এই সিনেমা বাংলা সিনেমার সুবর্ন সময়ের প্রতিনিধিত্ব করে এখনো । কাহিনি , অভিনয় সবই অসাধারণ ছিল তখনকার সিনেমাগুলোতে তাই মনে করিয়ে দেয় বারবার । একজন পুরোনো সময়ের মানুষের কাছে যদি জিজ্ঞাসা করা হয় আপনার জীবনে দেখা সবচেয়ে বেদনাদায়ক একটা সিনেমার নাম বলুনতো? সে নিঃসন্দেহে এই সিনেমাটার নাম বলবে । এই সিনেমাটা দেখে কাঁদেনি বা দুঃখবোধ জন্ম হয়নি এমন লোক পাওয়া দুস্কর । যেখানে অভিনেতাদের অনবদ্য অভিনয়, পরিচালকের পরিচালনা, কাহিনিকারের কাহিনি প্রস্ফুটিত হয়েছে সাবলীলভাবে । সেই সিনেমাটার নাম "ছুটির ঘন্টা"

স্কুল বলেন, কলেজ বলেন কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় অথবা চাকরিজীবী সবাই ছুটির জন্য প্রতিক্ষা করেন অধীর আগ্রহে প্রতিটা সময়, প্রতিটা ক্ষন । যতই বহুল প্রতিক্ষিত ছুটির দিন এগিয়ে আসে ততই অন্যরকম আনন্দে সবার মন ভরে থাকে , মাথায় গিজ গিজ করে ছুটির দিনগুলো কাটানোর জন্য বহুরকম পরিকল্পনা । একজন বাচ্চা ছেলের জন্য এটা একটু বেশি আনন্দের বিশেষ করে যারা স্কুলে পড়ে । ছুটির দিনে দুষ্টমিতে মেতে উঠার উপলক্ষ্যে তারা বুভুক্ষের ন্যায় অপেক্ষা করে দিনের পর দিন । কবে স্কুল ছুটি হবে ? কবে নানা বাড়ি যাবে? মেতে উঠবে দুষ্টমিতে ? তার জন্য যে অপেক্ষা করছে নানা বাড়ির ফলের গাছগুলি । অপেক্ষা করছে দুষ্টমিতে মেতে উঠার উপকরন সহজ সরল নদী । এটাই এই সিনেমার মুল উপজীব্য ।

খোকন নামের ছেলে যে স্কুলের দপ্তরি চাচার কাছে খোকাবাবু, স্বপ্ন আঁকে আসন্ন ছুটি নিয়ে । সেই স্বপ্নগুলোর করুণ মৃত্যু ঘটে, স্কুলের লম্বা ছুটির প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত বাথরুমে আটকা পড়ে ।
সিনেমাটা শুধু দুঃখের কাহিনিতে আবর্তিত নয় । হেসে উঠতে হবে স্কুলের বাংলা স্যার (এ টি এম শামসুজ্জামান) এর কথা বলার স্টাইল এবং শুদ্ধ খাটি বাংলা বলা দেখে কিংবা সুরত আলীর বোকামি দেখে । ভালবাসা জেগে উঠতে পারে দপ্তরি (রাজ্জাক) এবং আঙ্গুরীর (শাবানা) খুটখাট ঝগড়া আর অভিমানী হয়ে উঠা দেখেও । তবে এসব সব ভুলে যেতে হবে, খোকাবাবুর হারিয়ে যাওয়ার পর থেকেই ।
চোখে জল এনে দেবে খোকাবাবুর আকুতি, অভিমান, ক্রোধ আর পরাজীত হওয়া দেখে । পানি, কাগজ এবং শেষ পর্যন্ত কমোডের পানি খেয়ে একজন ধনীর দুলাল কিংবা একটা ছোট বাচ্চার বেঁচে থাকার চেষ্টা দেখে যে কোনো কঠিন হৃদয়ের মানুষ ও কেঁদে উঠবে নির্দ্বিধায় ।

একদিন ছুটি হবে
অনেক দূরে যাব
নিল আকাশে
সবুজ ঘাসে
খুশিতে হারাব

একদিন ছুটি হবে
অনেক দূরে যাব
নিল আকাশে
সবুজ ঘাসে
খুশিতে হারাব

যেখানে থাকবেনা কোনো বাঁধন
থাকবেনা নিয়মের কোনো শাসন(২)

পাখি হয়ে উড়ব
ফুল হয়ে ফুটব(২)

পাতায় পাতায়
শিশির হয়ে
হাসি ছড়াব

একদিন ছুটি হবে
অনেক দূরে যাব
নিল আকাশে
সবুজ ঘাসে
খুশিতে হারাব

অজানা পথে
অচীন দেশে
ঝর্ণাধারা হয়ে
যাব ভেসে

ওহো ওহ ওহ

তারা হয়ে উঠব
মেঘ হয়ে ভাসব
লুকোচুরি খেলার ছলে
লুকিয়ে রব

একদিন ছুটি হবে
অনেক দূরে যাব
নিল আকাশে
সবুজ ঘাসে
খুশিতে হারাব ।।

খোকাবাবুর স্কুলের অনুষ্ঠানে গাওয়া গান তার জীবনে এত মর্মান্তিকভাবে মিলে যাবে সেটা হয়ত কেউ কল্পনাও করেনি ।

বর্তমানঃ অনেকদিন বাংলা সিনেমা দেখা হয়না । একটা সময় ছিল শুক্রবারের জন্য অধীর আগ্রহবোধ করতাম । একটা সময় ছিল নতুন সিনেমার জন্য হলের দিকে চেয়ে থাকতাম । এখন আর আগ্রহবোধ করিনা । এখন সিনেমার কাহিনি গুলো একই আবর্তে ঘুরপাক খায় । সেরকম অভিনেতা বের হয়নি বা দর্শকেকে সিনেমার মাঝে নিয়ে যাওয়ার মত অভিনেতা পরিচালক দেখিনা । এটাই বর্তমানের বাস্তবতা । ফিরে আসুক স্বর্ণালি সময় বাংলা সিনেমার । বৈচিত্রে ভরপুর হয়ে উঠুক আমাদের সংস্কৃতি সেই কামনা করি ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১১ বিকাল ৫:০২
২৪টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×