প্রথম পরিচয়েই মেজাজটা বিগড়ে দিল হিশাম এল-মাসরি। ২০০৮ সালের কোনো এক সকাল । জ্যাকসন স্টেট ইউনিভার্সিটির ডাইনিংয়ে বসে খোশগল্প করছিলাম সদ্য পরিচিত বন্ধুদের সাথে । এর মধ্যে দশাসই শরীর নিয়ে হাজির হিশাম । আমার বাংলাদেশি পরিচয় শুনে হিশাম বলল-
''পাংলাডিচ ?! মুসলিম ? '' (বাংলাদেশ-কে বিদেশীরা ''ব্যাংলাডেশ'' বলে জানতাম, কিন্তু এমন অদ্ভূত নাম জীবনে শুনিনি !!!! )
''হুম্ ! মুসলিম । '' হাসিমুখে জবাব দিলাম
''হাওএভার ; তোমরা অবশ্য সেকেন্ড ক্লাস মুসলিম !'' দুম করে মন্তব্য করে বসল হিশামের বাচ্চা ।
''মানে কী? '' দাঁতে দাঁত চেপে কৈফিয়ত চাইলাম ।
''মানে হচ্ছে তোমরাতো অরিজিনাল আরব না, ইসলামও পাইসো দশ-বিশ হাত ঘুইরা, এইজন্য বল্লাম আর কী ! মাইন্ড খাইয়ো না ।'' বলে একটা শানুভূতির লুক দিল আমার দিকে। পাশের পাকি বন্ধুর মুখেও দেখলাম সহানুভূতির হাসি, যেন সে'ও একটা অরিজিনাল আরব
মাথা আর ঠিক রাখতে পারলাম না । হিশামের বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করলাম-
: তোমার বাপে কী দাড়ি রাখসে ?
: না ।
: হুম্ । আমার বাপে রাকসে। তোমার মা কি বোরকা-টোরকা পরে?
: না !
: আমর মা বোরকা পরে ।
:তোমার বাপ-মায় হজ করসে?
:না ।
: হুম ! আমর বাপ-মায় করসে - পুরা ইসলামী আক্বিদা মত চলে । এইবার আমার পাসপোর্ট-টা একটু দেখো -তোমার পাসপোর্টে দেখাওতো এমন কিছু আছে নাকি?(এই কথা বলে তার দিকে পাসপোর্ট এগিয়ে দিলাম, সেখানে লেখা আছে "Valid for travel to all countries except Israel")
এটা দেখার পর হিশাম এল-মাসরির চেহারাটা হয়েীল দেখার মত, আর কোনোদিন আমার সাথে মুসলমানিত্ব নিয়ে সে ট্যান ট্যান করেনি। তবে তখনই অরিজিনাল মুসলমানদের চেনা হয়ে গিয়েছিল। তাই ফিলিস্তিনের এই দু:সময়ে আরবদের নপুংসক ভুমিকা আমাকে মোটেও অবাক করেনি ।