ধর্ম, রাজনীতি, ক্ষমতা-ক্ষমতার অপব্যবহার, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামা,
পুলিশ, সরকার, প্রশাসন,বন্ধুত্ব, বিশ্বাসঘাতকতা, আইডেন্টিটি ক্রাইসিস, ফ্যামিলি বন্ডিং,পারিবারিক দ্বন্দ্ব
এমন সৃজনশীল কাজ দেখে শুধু মুগ্ধই হতে হবে। ফাহাদ ফাসিল, অভিনয়ই সুনিপুণভাবে দেখালেন।সিনেমাটোগ্রাফি, স্ক্রিনপ্লে, বিজিএম, সব কিছু দারুন ছিল
কাহিনি:
সোলায়মান আলী নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে সে হজ্জে যাবে। কিন্তু হজ্জে যাওয়ার পথেই বাধা হয়ে দাঁড়ায় পুলিশ,। সোলাইমান আলিকে হজ্বে যাওয়ার সময় এয়ারপোর্ট এর ভেতর থেকেই গ্রেফতার করা হয়। তাকে গ্রেফতার করা হয় TADA এবং Terrorist and Disruptive Act এর আন্ডারে। জেলে ঢুকানো হয় আলীকে। জেলখানার ভেতর তাঁর গোত্রেরই একটা ছেলেকে পুলিশ দায়িত্ব দেয় তাকে হত্যা করার জন্য।
কিন্তু ঠিক কি হয়েছিলো আলির সাথে?
কেনোইবা তাকে মারার জন্য লোকজন/পুলিশও তাতে সায় দিচ্ছিলো?
মুভির পটভূমি হচ্ছে উপকূলীয় এলাকায় যেখানে মুসলমান এবং খ্রীষ্টান দুই কমিউনিটির লোকজনের বাস। দুইটা কমিউনিটির মাঝে কিছু কনফ্লিক্টের কারনে দাংগা এবং সাথে নিষ্পাপ কিছু মানুষের মৃত্যু।সাথে এসবকিছুতেই আছে পলিটিক্যাল ইনফ্লুয়েন্স যারা সেখানকার প্রশাসনকে পুলিশকে ব্যাবহার করে তাদের রাজনৈতিক উদ্দ্যেশ্য হাসিল করতে চায়।এসবকিছুর মাঝেই দেখানো হয়েছে মানুষের জীবনের বাস্তবতা।
মুভিটি তৈরি হয়েছে বাস্তব ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে। ২০০৯ সালে ভারতের বিমাপাল্লি তে একটি পুলিশ শুটআউট সংঘটিত হয় এবং সেখানে ৬ জন নিরীহ মানুষ মারা যায়, মোট ৪২ জন মানুষ আহত হয়। এটি ইতিহাসের পাতায় একটি কালো অধ্যায় হিসেবে থাকবে। ধর্মীয় কোন্দল থেকে নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য একটি কুচক্রী মহল এই নির্মমতা পরিচালনা করে।
গল্পে মারদাঙ্গা কোনো বিষয়বস্তু না থাকলেও, একটি যথেষ্ট সাদাসিধে গল্পকে দেখিয়েছেন প্রচুর শৈল্পিক ভাবে
মুভিতে ফাহাদের পারফরম্যান্স তাঁর সেরা কাজের মাঝে থাকবে।ছবিটাতে ফাহাদ শুধু চোখ দিয়েই অভিনয় করে গেছেন।ফাহাদের ট্রান্সফর্মেশন লক্ষ্যনীয়।যুবক থেকে বৃদ্ধ সুলায়মানের তিন সময়টাকে তিনি এমনভাবে উপস্থাপন করেছেন যেটি এক কথায় অবিশ্বাস্য। একজন জাত অভিনেতা যাকে বলে, ফাহাদ ফাসিল তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। একটা চরিত্রকে ভেঙে বাজিয়ে যতোটা নিজের মধ্যে ফুটিয়ে তোলা যায়, তার ছিটেফোঁটাও কমতি রাখেন নি। কখনো টগবগে যুবকের বেশ ধরেছিলেন, আবার কখনো একজন প্রভাবশালী গডফাদার। এই মানুষটাকে দেখলে মনে হয়, ডেডিকেশন একজন মানুষকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যায়