১. কিবরিয়া ওরফে ছাগফারমার সাহেবের মেজাজটা খারাপ হয়ে গেল ওয়েট্রেস এর সুরত দেখে।
" কাউল্লা" বলে মনে মনে গালি দিলেন। মুখে উচ্চারণ এর প্রশ্নই উঠে না, এই নিউইরর্ক বস্তি শহরের কালো মানুষেরা খুব ভাল মতই "কাউলা" শুনলে খেপে যাবে। মানে হয়ত না জানে। কিন্তু ওদের নিয়ে "নিগার " টাইপ এর একটা খারাপ কথা যে এ টা, সেটা শুনেই বুজে ফেলে এখন.
"হাড্ডি গুড্ডির দোকান" ফোঁস ফোঁস করে এবার জোরেই বলেন ফারমার সাহেব।
মেজাজ খারাপ হবার কারণ আছে. যে উদ্দেশ্যে নিয়ে এই বার ও "ব্রেস্টুরেণ্ট " এ আসা , তার উদ্দেশ্য সফল না. শুকনা পাতলা, মাথায় আফ্রো চুল,, নিষ্পাপ হাসিমুখের আফ্রিকান আমেরিকান ওয়েট্রেস কে দেখে মেজাজ তার গরম. টিনেজ মেয়ে, ১৬-১৭ হবে বয়স. .
তার আশা ছিল এখানে নিয়মিত কাজ করা, পুরু ঠোঁটের অপরূপ রূপবতী সেই শেলী নামের ল্যাটিনা ওয়েট্রেস এর দেখা পাওয়া।
কালো চুল মেয়েটার, ফিলার দিয়ে পুরু করা ঠোঁট, বাদামি উজ্জ্বল গায়ের ক্যামেরা চকচকে , মাথা খারাপ করার মত রূপ.
মুনি ঋষি এর ধ্যান ভাঙানোর মত আকর্র্ষনীয় শরীরের গাঁথুনি। আওয়ারগ্লাস ফিগার যাকে বলে। উন্নতবক্ষা , গুরুনিতম্বের অধিকারী শেলী । রেস্টুরেন্ট এর ইউনিফরর্ম সাদা শার্ট, আর স্কার্ট, রূপকে কেবল বাড়িয়ে তোলে, হাঁটার সময় শেলীর গুরুনিতম্বের ঢেউ মুনি ঋষি এর বুকে জলোচ্চাস এনে দেবে , স্তনের লুকোচুরি বাদে বিশাল বক্ষের প্রায় পুরোটাই উন্মুক্ত থাকে । টেবিলে যখন এভাকাডো টোস্ট এর প্লেট নামিয়ে দেবার জন্য আসে শেলী, নিচু হবার সময়, উন্মুখ গিরিখাদে আর কোন লুকোচুরি প্রায় থাকেই না।
শেলী নিজে খুব ভালমতোই জানে তার রূপের রাজ. একান্ত বাধ্য হয়ে কুইন্স এর কাছে এই "ঠারকি" সাউথ এশিয়ান এলাকার রেস্টুরেন্টে কাজ করে , ইলিগ্যাল ইমিগ্রান্ট বলে কাগজ নেই, ক্যাশে কাজ করে মিনিয়াম ওয়েজের কমে । তবে তাতে তার আপাতত সমস্যা নাই, বাঙালি আর ইন্ডিয়ান বুড়া হাবড়া পারভার্ট রা টিপস দিয়ে পুষিয়ে দিচ্ছে, যে বাঙালি আর ইন্ডিয়ান বুড়া হাবড়া পারভার্ট রা টিপস দেয়না বলে সারা নিউইয়র্ক
তোলপাড়, এই "ব্রেস্টুরেণ্ট " এ এসে কুৎসিত স্বাদের ওভারপ্রাইজড এভাকাডো টোস্ট খেয়ে কেন বিশাল টিপস দেয় , কারণ কারোই অজানা নয়। এই বার ও রেস্টুরেন্ট টা অফিসিয়ালি "ব্রেস্টুরেণ্ট " না, তবে শেলীর দেখাদেখি বাকি ২ ওয়েট্রেস গুলাও একই পথ নেবার চেষ্টা করছে ইদানিং। তবে শেলীর রূপের সাথে কারো ঠিক তুলনা হয় না।
শেলীর নিজের অবশ্য কোন বিকার নেই, দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করে আছে এই নরক, আর কয়েকটা দিন, ওর স্বামী রিকোর ফেডারেল জেল থেকে মুক্তির দিন চলে এসেছে প্রায়, এরপর ওর রিকোকে ডিপোর্র্ট করে মেক্সিকো পাঠানো হবে. রিকোর প্ল্যান হচ্ছে এর পরপরই আবার বর্ডার ক্রস করে চোলে আসা, এরপর এল পাসোতে নিজেদের সংসার গড়বে। এই নোংরা নিউইয়র্ক এর বস্তি থেকে, সাপের মত কুৎসিত "ইন্ডিয়ান" বুড়া দেড় লকলকে চোখ থেকে যারা পারলে নজড় দিয়ে ওর শরীরটিকে গিলে খায়, রেস্টুরেন্ট এর মালিক যে প্রতি সপ্তাহে পে চেক দেবার আগে নিয়ম করে পান্ট্রিতে নিয়ে ওকে রেপ করে।
এই নরক, আর কয়েকটা দিন..
ছাগ ফার্মার সাহেবের এত কিছু জানার কথা না। ভদ্রলোক এর কাছে মেক্সিকান মানেই "পিগমি চোর বাটপার অশিক্ষিত", তবে ল্যাটিনা মানেই " আকর্র্ষনীয় মাংসের দলা". কাইলি জেনার এর মত করে মেকাপ সাজা ল্যাটিনা দেখলে ফার্মার সাহেবের চোখ সরে না। কৈশোরে "লিচু লিচু আম আম লাউ লাউ " এর ভক্ত ফার্মার সাহেবের এই বয়সে তানপুরা প্রিয় হয়ে উঠেছে।
২।
৩৫ আর ৭৩ স্ট্রিটের কোনা ঘেঁষে একটা বাদামি গাড়ি কার্ব সাইডে দাঁড়িয়ে।
"শয়তানটাকে আজকে ধরতেই হবে " ফোঁস করে নি:শ্বাস ফেলল কাইল। কাইলের পাশে বসে থাকা ইমানুয়েল এর মুখে কোন ভাবান্তর হলো না
কাইলের হাতের ফোনে টেক্সট এসেছে , জিম এর কাছ থেকে। "টার্র্গেট আসছে, ৩৭ এভিনিউতে".
বাদামি টয়োটা ক্যামরি এর উইন্ডশিল্ডে "উবার " এর স্টিকার লাগানো, ইচ্ছে করেই লাগিয়ে রেখেছে কাইল। উল্টা পাল্টা জায়গায় গাড়ি স্ট্যার্ট দিয়ে
পার্কে রেখে টার্গেট এর উপরে নজর রাখতে সুবিধা হয়. .ড্যাসবোর্ড থেকে গ্লোক- ১৭ বের করার জন্য হাত বাড়াতেই ইমানুয়েল চোখ পাকালো।
"ফাইজলামি করিস নাকি ? আমাদের কাজ শয়তানতাকে শিক্ষা দেয়া। টাকাগুলা বের করতে হবে দালাল টার কাছ থেকে। "
" তো? পিস্তল রেখে বের হবো? ফাইজলামি ? তুই জানিস ওই শয়তানটা বেরেটা ক্যারি করে ? "
"গাড়িতে থাকতে পারে ওর"
" আমি বুঝি না, আমি নিব "
আবার চুপচাপ হয়ে গেল দুজনে
-চলবে