হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত নিলাম ছবি দেখবো। এই ছুটিতে একটা ছবি না দেখলে হয়? ও বলে নেয়া ভালো আমি এখন ১৫ দিনের ছুটিতে আছি। ঢাকার বাইরে যেহেতু কোথায়ও যাচ্ছিনা তাই একটু ছবিতো দেখাই যায়। সারাদিন মিটফোর্ড এর অলি-গলি আর মার্কেট দেখে দেখে যখন ক্লান্ত তখন খুঁজতে লাগলাম নীরব হোটেল। নীরব হোটেলে খেয়ে বের হতে হতে ৪টার বেশি বেজে গেলো। গুলিস্তান এসে মনে হলো ছবি দেখি। আর বাসে করে বসুন্ধরা পৌছতে পৌছতে ৪.৩০ টার ও বেশি বেজে গেলো। তাই আমাদের অপেক্ষা করার পালা ৬.৩০ আর ৭.০০ টার শো গুলোর জন্য।
এসে যে ছবিগুলো দেখলাম তার মধ্যে The Equalizer কেই ভালো লাগলো। বিশেষ করে Denzel Washington এর জন্য। তার প্রতিটি ছবিই আমার বেশ ভালো লাগে। অসাধারন তার অভিনয়।
এইবার ছবি বিষয়ে কিছু কথা বলি।
ছবির নামঃ The Equalizer
পরিচালকঃ Antoine Fuqua
সঙ্গীত পরিচালকঃ Harry Gregson-Williams
নায়কঃ Denzel Washington
IMDb রেটিংঃ 7.5/10
প্রকাশঃ September 22, 2014
এইবার ছবির ঘটনায় আসি। ডেনজেল ওয়াশিংটন একজন কোমান্ডো। তিনি মিথ্যা মৃত্যুর পর এক সাধারণ মানুষ হিসাবে কাজ করেন একটি কাঠের দোকানে কাজ করেন। নাম হোম মার্ট। প্রতিদিন একই রুটিন। সকালে উঠা, কারখানায় যাওয়া, বিকালে সমুদ্রের পাড়ে যাওয়া, রাতে একটা হোটেলে বসে কফি খাওয়া আর বই পড়া। বইটির নাম আমরা পাই দি ওল্ড মেন এন্ড দি সী। এখানেই দেখা হয় Chloë Grace Moretz এর সাথে। সে একজন দেহ পসারিনী। তার বয়স মাত্র ১৯। দু দিন দেখা হওয়ার পর একদিন ডেনজেল তার জন্য একটা খাওয়ার জিনিস নিয়ে আসে। এটা খেতে খেতেই তার সাথে কথা হয়। আর জানতে পারে তার গান করতে ভালো লাগতো। এই পথ থেকে সরে আসার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু এই পথ খুব ভয়ংকর। মেয়েটিকে নিয়ন্ত্রণ করে রাশিয়ার একটি গ্রুপ। একদিন মেয়েটির সাথে বের হয় হাটতে হাটতে কথা বলতে থাকে মেয়েটি। এদিকে ফোন আসলে তা কেটে দেয়। এতে ক্রুদ্ধ হয় সেই রাশিয়ান দল। মেয়েটিকে ডেনজেল এর সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায় আর ধরিয়ে দেয় একটা কার্ড। যদি দরকার হয় তবে যেন ফোন দেয়।
এরপর দিন দেখা যায় মেয়েটি মর্মান্তিক ভাবে আহত হয়ে ভর্তি হয় হাসপাতালে। হাসপাতালে মেয়েটিকে নিয়ে আসে তার এক বান্ধবী। ডেনজেল তার সাথে কথা বলে। এরপর যায় সেই রাশিয়ান বারে। তাদের কে অনুরোধ করে মেয়েটিকে মুক্ত করার জন্য। এরজন্য একটা খামে করে দিতে চায় প্রায় ৯০০০ এর মতো ডলার। এটা জমাতে তার বেশ অনেক দিন লেগেছে। বলা যায় এই তার সম্বল। লোকগুলো হাসে। ডেনজেলের একটা অভ্যাস হলো ঘড়ি ধরে কাজ করা। সে বের হয়ে আসার সময় দাঁড়ায় দরজার সামনে। তিনবার দরজাটা লাগাতে থাকে খুলতে থাকে। এরপর ভালো করে বন্ধ করে ঘুরে দাঁড়ায়। সকলে সাবধান হয়। কয়েক সেকেন্ড এর মধ্যেই সকলের অবস্থান দেখে ঘড়ির দিকে তাকায় আর স্টপ ওয়াচ চালু করে। সকলকে মেরে ফেলার পর ঘড়ির স্টপ ওয়াচ বন্ধ করে মাত্র ১৯ সেকেন্ড। বলা যায় ঘটনা এখান থেকেই শুরু।
এরপর? পুরো ছবিটি দেখতে না হয় চলে যান বসুন্ধরাতে। এই মাস খানেক আগেই মুক্তি পাওয়া ছবিটি আমার বেশ লেগেছে। পুরো গ্যাংটি ধ্বংস হওয়ার পর মেয়েটিকে দেখা যায় ডেনজেল সাথে কথা বলতে। সে একটা ক্যাসেট বের করেছে। ডেনজেলকে মেয়েটি ধন্যবাদ দেয়। কিন্তু মেয়েটি জানতেও পারেনা, তাকে কেবল এই পথ থেকে সরিয়ে আনার জন্য কি কি ঘটনা ঘটে গেছে। গল্পটি শেষ হয় এভাবে, ডেনজেল ল্যাপটপে একটা ই-মেইল পান অন্য কোথায়ও কিছু অন্যায় কিছু ঘটছে, সে তার সাহায্য প্রার্থী। বোঝাই যাচ্ছে The Equalizer এর সিকুয়াল আসতে পারে।
ছবিটি দেখে আমার সাথে থাকা সবুজ আমাকে জিজ্ঞাস করলো, 'ভাইয়া আমাদের দেশে এমন ছবি কবে হবে?' আমি কেবল বললাম, হবেনা।
আর শেষ করতে চাই এই বলে যে, ছবিটি দেখে আপনি হতাশ হবেন না। আপনার সময়টি বেশ যাবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১০:৪১