অবধারিতভাবেই এসে গেল ফেব্রুয়ারি। ভাষার মাস, কান্নার মাস, তিতুমীরের কন্যার বিষাদগীতি গাইবার মাস। সাহিত্য পাণ্ডাপুরুতদের প্রতিটি উপন্যাস আর গল্পই "আলোড়ন সৃষ্টিকারী" বাণিজ্যের মাস! আর প্রতিষ্ঠিত লেখকদের সাক্ষাতকারেরও মাস।
মেলা চলাকালীন প্রতিদিনই মেলাতে ব্লগারদের বিভিন্ন আলোচনা সভা, কবিতা পাঠের আসর থাকবে। প্রতি সন্ধ্যায় থাকবে সুরাপানসহযোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া মেলাতে লেখককুঞ্জ রয়েছে, যেখানে ব্লগার লেখকেরা উপস্থিত থাকবেন এবং তাঁদের বইয়ের ব্যাপারে পাঠক ও দর্শকদের সাথে মতবিনিময় করেন। এছাড়াও মেলার প্রবেশদ্বারের পাশেই স্টল স্থাপন করে বিভিন্ন রক্ত সংগ্রাহক প্রতিষ্ঠান স্বেচ্ছাসেবার ভিত্তিতে রক্ত সংগ্রহ করে থাকে। আছে পকেটমারও।
মেলার সারা মাসজুড়ে সার্টিফেকেটধারী লেখকদের ভয়াবহ কনুই লড়াইয়ের ভিড়ে যখন প্রতিষ্ঠিত ব্লগারদের অবস্থা ভয়াবহ; তখন আমাদের এই ব্যাতিক্রমী উদ্যোগ। আমাদের এইসব তরুণ ব্লগাররা, দিনরাত খেটেছেন। তারা স্টলের সামনে মাটি কামড়ে পড়ে থাকার লোক না। বই পড়িয়েই ছাড়বেন- এমন এক প্রতিজ্ঞা নিয়ে তারা মেলাঙ্গনে যান না।
এই মেলার ইতিহাস স্বাধীন বাংলার ইতিহাসের মতোই প্রাচীন। যতদূর জানা যায়, ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে চিত্তরঞ্জন সাহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বর্ধমান হাউজ প্রাঙ্গনে বটতলায় এক টুকরো চটের ওপর কলকাতা থেকে আনা ৩২টি বই সাজিয়ে বইমেলার গোড়াপত্তন করেন। সেই ৩২টি বইয়ের ক্ষুদ্র মেলা কালানুক্রমে বাঙালির সবচেয়ে স্বনামধন্য বইমেলায় পরিণত হয়েছে।
আপনারা নিশ্চয় একমত হবেন যে, আমাদের দেশে সাহিত্যের দুটো বড় ধারা আছে—১. প্রথিতযশা পণ্ডিতবর্গের জ্ঞানগর্ভীয় সদাবহমান মোটা সাইজের পুস্তকীয় ধারা; ২. বিপ্লবী উত্তেজনায় উত্তেজিত, প্রধানত ক্রমক্ষয়িষ্ণু লিটলম্যাগীয় ধারা। এই-দুই বড় ধারার মাঝে আরেকটি শামুকগতির স্রোত কিন্তু ইস্পাতদৃঢ়চিত্তে কুলুকুলু বেগে শনশন শব্দে বয়ে যাচ্ছে। এইসব তরুণ ব্লগারদের বইগুলো সে-ধারারই কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সংস্করণ। তো আসুন ঘুরে আসি বইমেলা থেকে-
(১) তায়েফ আহমেদের দ্রোহের কবিতা
দুর্ধর্ষ কাফেলা
বড় করে দেখার জন্য
(২) জীবনানন্দদাশের ছায়া 'র প্রবন্ধ সংকলন
ব্লগারদের আংগুলের ছাপ কিংবা আমার মডুগিরী
বড় করে দেখার জন্য
(৩) সবাকে র প্রথম কাব্যগ্রন্থ
রেসিডেন্ট এক আশ্চর্য আফিম
বড় করে দেখার জন্য
(৪) ফিউশন ফাইভ এর ধ্রুপদী কবিতা
মাউসের প্রেম এবং কীবোর্ডের সাথে নিষিদ্ধ সঙ্গম
বড় করে দেখার জন্য
[বিশেষ ঘোষণা: এই পোস্টের পাতায় ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১১’-এ প্রকাশিত তরুণ ব্লগারদের সেরা বইপত্রের তালিকা নিয়মিত প্রকাশিত হবে। তালিকাটি সরবরাহ করছে বাংলা একাডেমীর ‘সমন্বয় ও জনসংযোগ উপবিভাগ’। লিটল ম্যাগাজিনগুলির তরফে প্রকাশিত কিছু পত্রপত্রিকা এই তালিকার বাইরে থেকে যেতে পারে। তালিকার বাইরে থেকে যাওয়া বই ও পত্রপত্রিকা বইমেলায় সামুব্লগডটকম-এর স্টলে জমা দিলে আমরা বাদ পড়া বইয়ের তালিকায় সে বই সংযুক্ত করব।- কনফ্লিক্ট]