ঈদের তিন দিন অফিস করিবার পর সামান্য ছুটি মিলিয়াছিল গত শনি আর রবিবারে। বহুদিন পর মনের আয়েশ মিটাইয়া বাংলা চ্যানেল সমুদ্রে অবগাহন করিবার অভিপ্রায়ে জুৎ করিয়া বসিয়া ঘুরিতে লাগিলাম এ চ্যানেল হইতে সে চ্যানেল। অতিব যন্ত্রনার সহিত উপলব্ধি করিলাম বাংলা চ্যানেল আপাদমস্তক প্লাবিত হইয়া গিয়াছে ভাই-বেরাদার নামক কিছু নাবালকের অক্ষম মল-মুত্রাদিতে।
কিছু বলিলে সবাই হারে রে রে করিয়া ছুটিয়া আসিবে, তাই মুখ খারাপ করিলাম না। তবে উহাদের সম্পর্কে কিছু বলিতে হইলে বেবুজ্জেদের ভাষা রপ্ত করা লাগিবে। উহাদের মস্তিষ্কে বিবাহিত দম্পতি মানেই পরকিয়া আক্রান্ত, ভালবাসা মানেই পরিচিত কাহারো ফ্ল্যাটে গমন করিয়া প্রেমিকা রমন! হয়তোবা শৈশবে উহারা এমন পরিবেশেই লালিত পালিত হইয়াছিল, হয়তোবা পারিবারিক চরিত্রহীনতা উহাদের মগজে স্থায়ী ক্ষত সাধন করিয়াছে, কে জানে!!
আরো বেশি হতবাক হইলাম যখন চোখে পরিল অন্যরাও এই একই ফর্দ মানিয়া এইবারের নাটক নামের বিষ্ঠা ত্যাগ করিয়াছেন। যাহা হউক, দুই দিনের টেলিভিশন দর্শনে নব্য বাঙালি সমাজ সম্পর্কে নিদারুণ জ্ঞান অর্জিত হইলো।
মীর শওকত আলী পরলোক গমন করিয়াছেন। কয়েক দিবস পূর্বে উনার পুরানো এক সাক্ষাতকার দেখিয়া বুঝিলাম একজন মুক্তিযোদ্ধার গহীন তম অহম উনি শেষ মুহুর্ত অবধি ধারন করিয়াছিলেন। বিনম্র শ্রদ্ধা!
বরই পেরেশানির মধ্যে দিন কাটাই, খবরের কাগজে ছাত্র-অছাত্র-কুছাত্র বাদ দিয়া শুধু "লিগ" শব্দ খানা দেখিলেই মনটা হু হু করিয়া উঠে। কাহার পুত্র আর বাড়ি ফিরিবে না, কাহার কন্যা সম্ভ্রম হারানোর লজ্জায় আত্মাহুতি দিবার কথা ভাবিবে। ইহার সাথে যোগ হইয়াছে হরতালের গুজব। কাঁপিয়া উঠি, ঘুম কিংবা জাগরনের মধ্যেও। অর্ধলক্ষ বর্গমাইলের এই ছোটখাট দেশটাকে আরো বহুকাল ধর্ষিত হইতে হইবে বোধকরি।