আগে সৌদি আরবে একজন বাঙ্গালীকে বয়োবৃদ্ধরা পুত্রের , অন্যরা নিজেদের পরিবারের একজন সদস্যের মত আচরন করত ।অনেকটা জামাই আদরে রাখত । কোথাও বেড়াতে গেলে পুরোপরিবারের ভাড়ের দায়িত্ব বাঙ্গালীর কাছে দিয়ে যেত ।কিছু কিছু মিসকিন বাঙ্গালী এই সুযোগে রাতারাতি ধনী হওয়ার চেষ্টা করত ।বাড়ীতে চুরি কিংবা সাংগোপাংগো নিয়ে ডাকাতি করত ।অপকর্ম করে যাবে কোথায় , সহসাই ধরা পড়ত ।এভাবে একে একে ঘটনা ঘটতে থাকে আর বাঙ্গালীদের প্রতি সৌদিদের বিশ্বাস নষ্ট হতে থাকে ।এখন কোন বাঙ্গালী রাস্তা দিয়ে হেটে গেলে বাংগালী বুঝতে পারলে পাথর ছুড়ে মারে ।
বছর দুয়েক আগে সৌদি প্রিন্সের বাড়িতে তার চুরি করে কয়েকজন বাঙ্গালী।ভাগের টাকা নিয়ে গন্ডগোল করে এক মিসরীয় সঙ্গীকে খুন করে । ধরা পড়ে , বিচারে মৃত্যুদন্ড হয় ।ফখরুদ্দিন সাহেব প্রান ভিক্ষার আবেদন করেছিলেন , কাজ হয়নি ।
আরেকবার এক সৌদিমহিলা ব্যাংকে ১ লাখ রিয়েল নিয়ে ফিক্সড ডিপোজিট করতে যায় ।অফিসার নোট হাতে নিয়ে দেখে সব জাল । মহিলাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় । পুলিশ জানতে পারে কয়েকজন বাঙ্গালী ঐ সৌদি মহিলাকে নিয়ে দেহব্যবসা করে । মহিলাকে পারিশ্রামিক হিসেবে ১ লাখ রিয়েল দেয়া হয়-যার সবই জাল নোট । এ ঘটনায় স্বয়ং কিং কঠোর শাস্তি দেয়ার নির্দেশ দেন ।
সৌদি আরবে হাতে তৈরি মদ বানায় ফিলিফাইনিরা । এগুলার বাজারজাতকরন, বিক্রি থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ে থাকে বাঙ্গালীরা । ধরা পড়লে বাঙ্গালীরাই ধরা পড়ে ।
কিছু কিছু বাঙ্গালী অবৈধ VOIP ফোন ব্যবসা করে রাতারাতি ধনী বনে যায় ।বন্ধু সাথের বাঙ্গালীর সহ্য হয় না ।গোপনে পুলিশকে সবকিছু বলে দেয় । নিখুঁত পুলিশী অভিযানে ধরা পড়ে জেল কিংবা Exit ।
বছর দুয়েক আগে এক সামান্য কিন্তু জঘন্য ঘটনায় ভারতীয়দের বিরাগ ভাজন হয় বাংগালীরা ।দাম্মামে বাংলদেশ স্কুলে এক ভারতীয় শিক্ষিকা ক্লাস নিচ্ছিলেন।ছাত্রদের সারির মধ্যদিয়ে হেটে যাওয়ার সময় এক ছাত্র আংগুল দিয়ে পাছায় গুতো দেয় ।অন্যকোথায় এ ঘটনার কি হয়েছিল জানি না । আমার অফিসে ২৩ জন দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করেএমন বাংগালী শ্রমিকের কাজ চলে গিয়েছিল । ঐ আভাগারা জানতেও পারেনি তাদের কী অপরাধ ।ভারতীয় মহিলা শিক্ষিকার স্বামীর বন্ধু আমাদের বস ।আরো মজার ব্যপার হল- ঐ ছাত্রের বাবা যে কিনা স্কুলের কমিটির সদস্য মহিলাকে ডেকে নিয়ে ধমকের সুরে বলে যে , তুমি কি এমন সুন্দরি যে আমার ছেলে পাছায় হাত দেয় !সুন্দরি হলেও না হয় কথা ছিল ।
ভারতীয় কমিউনিটি তখন পুরো ঘটনা পর্যবেক্ষন করছিল ।বাপ পুতের কান্ডকারখানায়
ঐ মহিলাকে কমিটি বরখাস্ত করে । এরপরই শুরু হয় সমালোচনার ঝড় । বিভিন্ন গ্রুপ মেইলে সমালোচনা, ভারতীয় রাষ্ট্রদুতের কাছে নালিশ ,ঘরোয়া মিটিং্যে ক্ষোভ প্রকাশ সবই চলতে থাকে ।আর বিভিন্ন অফিসে উচ্চপদস্থ ভারতীয়দের রোষানলে পড়ে বহু হতভাগা বাঙ্গালী । কেউ চাকরী হারায় , কারো বেতন বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায় ।কিন্তু কেউ বোঝতে পারে নাকোত্থেকে কি হচ্ছে ! এ যেন কামরুপ কামাক্ষার যাদুমন্ত্র !
(ক্রমশঃ)
(২য় পর্ব) (৪র্থ পর্ব )
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৯:৪৩