’৭১ এ স্বাধীনতা যুদ্ধের পর যুদ্ধাপরাধীদের একটা অংশ সৌদিতে আশ্রয় নেয় । দেশে অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি হলে বড় দাগী অপরাধীরা দেশে যায় , একটা অংশ থেকে যায় ।সেই অংশটি আবার আত্নীয়স্বজন, দলের লোকদের নিয়ে এসে পাল্লা ভারী করে । যেহেতু তারা অনেক আগেই এদেশে আস্তানা গেড়েছে তাই তাদের পথ-ঘাট সরকারী দপ্তর ভালোই চেনা ।সৌদি আরবের দান খয়রাতের ১টা বিশাল অংশ এদের মাধ্যমে বিলিবন্টন , লুটপাট , আত্নসাত হয় ।বাংলাদেশে ১টা মসজিদ তৈরি করে ৪দিক থেকে ৪ টা ছবি তুলে সৌদিদাতাদের কাছ থেকে৪টা মসজিদের সমপরিমান সাহায্য নেয়া হয় । বলা বাহুল্য, বাড়তি পুরো টাকাই দেশে জংগীবাদ কিংবা ব্যক্তিগত ভোগবিলাসের কাজে লাগানো হয় ।
আমরা সবাই দেশে সালমান রহমান কিংবা আঊয়াল মিন্টুকে ধনকুবের বলে চিনি ।কিন্তু এরা ২/৪ টা সালমান-মিন্টু কেনারসামর্থ্য রাখে । এদের কারো লন্ডনে বাড়ী নেই , সাঈদীর আছে ।
তত্তাবধায়ক সরকারের আমল থেকে শুরু করে এমন কোনদিন পাওয়া যাবে না,যেদিন নানা উচিলায় সৌদি আরবের বিভিন্ন জায়গায় জামাত সমর্থকরা মিটিং করছে ।এ মিটিং কি ফল বয়ে আনে তার কিছু নমুনা দিই ।
সৌদি প্রিন্স তালাল রুপালী ব্যাংক কেনার সব কিছু ঠিকঠাক করে শুভেচ্ছার নিদর্শনস্বরুপ খেজুর ও নগদ অর্থ বাংলাদেশেপাঠিয়ে দেয় । কিন্তু তালালকে ভুল বোঝানো হয় ,যার পরিনতিতে আমরা দেখতে পাই , তালাল সব ঠিকঠাক হওয়ার পরও রুপালী ব্যাংক কেনা থেকে সরে আসে ।বাংলাদেশে প্রতিবছর পৃথিবীর সবগুলো দেশথেকে যত রেমিট্যান্স যায় সবগুলো যোগ করলেও, সৌদি থেকে যাওয়া রেমিট্যান্স আরও বেশী হবে । বাংলাদেশের সাথে রেমিট্যান্স প্রবাহ পুরোটাই নিয়ন্ত্রন করে ইসলামী ব্যাংক । সরকারী সোনালী ব্যাংকের তুলনায় ইসলামী ব্যাংক ২ গুন বেশী রেমিট্যান্স সংগ্রহ করে ।তালাল রুপালী ব্যাংক কিনলে ইসলামী ব্যাংক বসে যেত নিঃসন্দেহে ।
নিজামী গত তত্তাবধায়ক সরকারের সময় ১৬/০৭/২০০৮ তারিখ দুপুরে মুক্তির আদেশ পেয়ে , বিকেলেই ছাড়া পায় ।যেখানে অন্য বন্দী যেমন এমকে আনোয়ার,সামসুল ইসলাম প্রমুখের মুক্তির আদেশ কোর্ট থেকে জেলে আসতেই ৩/ ৪দিন লেগেছিল । সাঈদী সেসময় সৌদিতে ১ সপ্তাহের জন্য ছিল ।
সৌদি জামাতের সাথেবাংলাদেশের মুল পার্টির যোগাযোগ অবিছিন্ন । মাঝখানে একবার সৌদি কর্তপক্ষ জামাতিদের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহারের সিন্ধান্ত নেয় । সে সময়ই আমরা কেবল দেখতে পাই নিজামীসহ অন্যনেতারা সভা-সমাবেশে রীতিমত কান্নকাটি শুরু করে ।তারপর মনে হয় হাতেপায়ে ধরে আবার সম্পর্ক ঠিক করে ।
কিছুদিন আগে একজন জামাত নেতা বলেছিল , সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করলে সৌদি থেকে সব শ্রমিক ফেরত পাঠানো হবে । এই ব্লগে অনেকেই এ নিয়ে তামাশা করেলও তার কথার একটা ভিত্তি আছে , মনে হয় সম্পর্ক জোড়া লেগেছে ।
মাঝমাঝে সাহারা খাতুন আর শফিক আহমেদের কথা শুনে আমরা সৌদিপ্রবাসীরা কৌতুকবোধ করি আর আতংকে থাকি ।
পৃথিবীতে এমন ১টি দেশ পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ যে দেশের নাগরিকরা নিজ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারনা চালায় ।জাপানের নাগরিকরা বিদেশের মাটিতে নিযেকে একজন রাষ্ট্রদুত মনে করে , এজন্য তাদের মাঝে বিনয়ের কোন শেষ নেই ।
অথচ আমাদের বাংলাদেশীরা ?
যেখানেই জামাত, সেখানেই ষড়যন্ত্র , সেখানেই দেশবিরোধী কাজকারবার ।
(ক্রমশঃ)
(১ম পর্ব) (৩য় পর্ব )
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০১০ রাত ১০:২০