সৌদি আরবে আসতে হলে যে ভিসায় আসতে হয় সে ভিসার জন্য সরকারী ফি ২০০০ রিয়াল ।বাংলাদেশী টাকায় এর পরিমান প্রায় ৩৬০০০/-টাকা ।কোন সৌদি নাগরিক (কফিল) ভিসা তোলে , তারপর শুরু হয় হাত বদল ।ডাক্তার , ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে লেবার পর্যন্ত এ ভিসার মধ্যসত্বভোগী দালাল হিসেবে কাজকরে-এইমধ্যসত্বভোগী দালালদের আমরা আদম ব্যবসায়ী হিসেবে চিনে থাকি । হাত বদলের কারনে ১টা ভিসার দাম ঊঠে ৩লাখ থেকে ৪লাখ টাকা পর্যন্ত তাও আবার ১ভিসা জাল হয়ে একাধিক লোকের কাছে বিক্রি হয়।তখন দালালদের লাভের অংক বাড়লেও,শ্রমিকদের দুর্দশার শেষ থাকে না ।কিছুদিন আগে জ়েদ্দার একজন ডাক্তার এক সৌদি কোম্পানীতে জাল ভিসায় লোক সাপ্লাই দিয়ে ধরা পড়ে খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন । সৌদি আরবে এ ভিসার ব্যবসা মক্রু বা হারাম । কিন্তু তবুও বাঙ্গালী-সৌদি সবাই মিলেমিশে করছে এ ব্যবসা ।অপরদিকে বাংলাদেশে বায়রা নামক সংগঠন করে রীতিমত সরকারকে ধমকের উপর রাখে এ আদম ব্যবসায়ীরা ।বাংলাদেশের বনানী , পল্টন , মতিঝিলে অফিস থেকে এ আদম ব্যবসা পরিচালনা করা হয় ।কোন আদম ব্যাবসায়ীর বাড়ি যদি হয় ফরিদপুর সে কুমিল্লার লোকদের কাছে ভিসা বিক্রিকরে , আবার কোন আদম ব্যবসায়ির বাড়ি যদি হয় চট্টগ্রাম সে কুস্টিয়ার লোকের কাছে ভিসা বিক্রি করে ।
কেন করে ?
কারন , তাদের কথা শুনে বেকার যুবকরা চোখ বড় করে , নিশ্চিত উজ্জল ভবিষ্যতের আশায় ভিটেমাটি বিক্রিকরে,চড়া সুদে ঋন নিয়ে ৩-৪ লাখ জোগাড় করে সেই আদম ব্যাবসায়ীর হাতে তুলে দেয় ।আবার যেহেতু ইউরোপ/আমেরিকার মতো মধ্যপ্রাচ্যে আসতে পুলিশ ভ্যারিফিকেশনের দরকার হয় না ,সেই সুযোগে বহু আপরাধীও শাস্তি এড়াতে ১ টা ভিসা কিনে মধ্যপ্রাচ্যে চলে আসে ।
তারপর কি হয় ?
যদি তার ভাগ্যে জাল ভিসা জোটে তাহলে এয়ারপোর্টেই সে ধরা খেয়ে খবরের শিরোনাম হয় ।সঠিক ভিসা হলে তার দাস জীবন শুরু হয় সৌদি এলে । বিশাল অংকের বেতন পাওয়ারকথা থাকলেও এসে দেখে বেতন ৩০০~৪০০ রিয়াল ।ডিঊটি রাস্তায় ঝাড়ু দেয়া অথবা মরুভুমিতে ঠাভা রোদে বখরি চরানো । শুনে তার মাথায় যেন প্রথম ঠাডা পড়ে ।্মাস শেষে বেতন পেলেখেয়েদেয়ে দেশে ফোন বাবদ খরচ করে ১টা রিয়ালও রাখতে পারে না ।ফোনে দেশের সুদখোরের তাগাদা শুনে কেউ কেউ মাথা ঠিক রাখতে না পারে অন্য কোথাও সামান্য ওভারটাইম কিংবা ঠুনকো চুরি চামারিতে জড়িয়ে পড়ে ,কেঊবা আবার অপরাধজগতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগায়। ধরা পড়লে পত্রিকায় বিশাল শিরোনাম হয়ে আসে ।এখানকার পত্রিকার সাংবাদিকদের বিশাল অংশ ভারতীয় কিংবা পাকিস্তানি । তাদের দেশের লোকেরা আরও বড় ঘটনায় ধরা পড়লেও পরিচিতি হিসেবে ছাপা হয় এশিয়ান । এভাবে গত ৩/৪ বছর ধরে একের পর এক ঘটনা ঘটতে থাকায় সৌদি কতৃপক্ষ ত্যাক্ত-বিরক্ত হয়ে বাংলাদেশিদের ভিসা বন্ধ করে দেয় । আকামা ট্রান্সফার স্থগিত করে ।খতিব শুক্রবাবের খোতবায় বলে বাঙ্গালীদের কাজে না নিতে ।আদম ব্যবসায়ীদের সাথে এম্বাসীর কিছু অসাধু কর্মকর্তার সুসম্পর্কের কারনে সরকার কিছুই জানতে পারে না ।দেশবাসী তখনই জানতে পারে যখন কিছু সাংবাদিক দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে পেশাদারিত্ব নিয়ে পত্রিকায় খবর ছাপায় ।
সরকার ১টা ইলেক্ট্রনিক্স চিপের উপর ১জন শ্রমিকের সব তথ্য রাখার উদ্যোগ নিয়েছে । বায়রা কেন বাধা দিচ্ছে বুঝতে পারছেন?এখন আপনারাই বলেন , সৌদিসহ সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে বাংগালিদের দুর্দশার জন্য কারা দায়ী ?
(ক্রমশঃ)
২য় পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৯:৩৪