কে বাঁশী বাজায় রে
মন কেন নাচায় রে
আমার প্রান যে মানে না
কিছুই ভালো লাগে না
রুবাবের ঘরে ঢুকতেই আনিলার মিষ্টি কন্ঠ শুনতে পেলাম। লাকি আখন্দের গান। মনটা কেমন যেন করে দেয়। রুবাব একমনে শুনছে। ওকে বললাম,
"খুব তো ডুবে ডুবে জল খাওয়া হচ্ছে! তা দিনা কেমন আছে? "
কথাটা শুনে রুবাব, যেন ভেবাচেকা খেয়েছে। তবে সামলে নিলো। হেসে বললো," দিনার খবর তো ভালোই "।
"খোঁজখবর রাখা ভালো। সারাজীবন তো আর ভাইরাস নিয়েই কাটালে হবে না, ভালোবাসাতেও কিন্তু ভ আছে। দিনা মেয়েটা ভারি মিষ্টি। "
এরপর স্বাভাবিক কথাবার্তা সেরে সোজা আমার রুমে। "ওদেরকে মানাবে", এটুকু ভেবেই কাজে ডুব দিলাম।
বিটকয়েন ফর সাইন্স থেকে আনা একটি হার্ডডিস্ক, ভার্চুয়াল সেটআপের সাথে যুক্ত করলাম। এই ভার্চুয়াল সেটআপের সবকিছুই অর্থাৎ আইপি, প্রসেসর, জিপিইউ হ্যাকড সিস্টেমের ক্লোন। তাই যদি কোনো ম্যালওয়্যার থাকে সেটা চালু হয়ে যাবে।
কিন্তু না! কোনোকিছুই অস্বাভাবিক নয়। ভার্চুয়াল সেটআপে কোনো বহিরাগত যোগাযোগ ধরা পড়ছে না। সিপিইউ, মেমোরি ইউজেস নরমাল। ইভেন র্যামও নিট এন্ড ক্লিন। জিপিইউ চলছে না। এমনই হওয়ার কথা। কারন, বিটকয়েন চুরি করা হয়েছে, মাইন করা হয় নি। রহস্যটা নিয়েই ঘুমোতে গেলাম।
পরদিন, এডভান্সড রিসার্চ টিমের হেডকোয়ার্টারেঃ
দিনা, রুবাব আর আমি বসেছি IDA ultimate নিয়ে। রিভার্স ইন্জিনিয়ারিং করবো। একের পর এক ফাইল চেক করছি আমরা। হিডেন ফাইল, র্যামও বাদ যাচ্ছে না। দিনা প্রথম দিনেই গবেষণা কেন্দ্রের সমস্ত পিসির হার্ডওয়্যার চেক করেছে। সাসপিশাস কিছুই পাওয়া যায় নি। ফিজিক্যাল এট্যাকও হতে পারে। ডিভাইসটা সরিয়ে ফেলেছে। কিন্তু লগ তো থাকবে। নাকি সেটাও ইরেজ.......
হঠাৎ করেই দিনা বললোঃ "আমার তো মনে হয় এটা ডক্টরদের কাজ। কেননা তারাই কেবল ফিজিক্যালি কম্পিউটারের কাছে যেতে পারতেন। "
"কিন্তু দিনা..... তাঁরা উভয়ই নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী। দেশের সেরা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। এই চুরি তথা হ্যাকিং নিয়ে তো আমরাই কেবল মাথা ঘামাচ্ছি না। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা নেটওয়ার্কও কাজ করছে । তারাও ডক্টর জনসন এবং মরিসনকে দোষী ধরছে না। "
"মানুষের তো লোভ হতেই পারে কিংবা দেখা গেল, নতুন কোনো এক্সপেরিমেন্ট করতে প্রচুর টাকার দরকার তাই তারা এমন কিছু.... ", দিনার জবাব।
এবারে কথাটা বেরিয়ে এলো রুবাবের মুখ দিয়ে।
"বিটকয়েনের অনেক সিকিউরিটি সিস্টেম ডক্টর মরিসনের সুপারিশেই করা হয়েছে। আর ডক্টর জনসন বিটকয়েন কমিউনিটিতে একজন টপ কন্ট্রিবিউটর। তাদের দ্বারা এমনটা করা একপ্রকার অসম্ভব ।"
"আরেকবার ওখানে যাবো। পুরো ফেসিলিটি আবারো চেক করতে হবে!"- আমি বললাম।
আলাপচারিতা আর রিসার্চেই দিনটা কর্পূরের মতো উড়ে গেল। আমি আর রুবাব চলে এলাম বাসায়। দিনা গেল স্থানীয় বুকশপে। বই কিনে খালার বাসায় যাবে।
গানটাঃ
চলবে......
প্রথম পর্বঃ গল্পঃ এক অবিশ্বাস্য হ্যাকিং
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মে, ২০২০ রাত ১২:২৯