ভারতে বাংলাদেশী চ্যানেল বন্ধ আজ প্রায় ১ যুগ ধরে। এতদিন আমরা ভারতীয় ক্যাবল অপারেটরদের দায়ী করে আসছিলাম এই ব্যাপারে। কিন্তু এখন খোদ ভারতীয় হাইকমিশন নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে যদি বাংলাদেশী চ্যানেল ভারতে টেলিকাষ্ট করতে হয়। তো আসুন দেখা যাক ঐ নীতিমালায় কি শর্ত রয়েছে।
১. দশ বছরের জন্য চুক্তি করতে হবে এবং প্রতি বছরের জন্য ৫ লাখ ইন্ডিয়ান রুপি প্রদান করতে হবে।
২. প্রতি বছরের জন্য ১৫ লাখ ইন্ডিয়ান রুপি ডাউনলিংক এর জন্য প্রদান করতে হবে।
৩. রেজিষ্ট্রেশন এর জন্য প্রদান করতে হবে ১০ লাখ ইন্ডিয়ান রুপি।
৪. চ্যানেল কর্তৃপক্ষ কে ভারতে নিজস্ব ভুমিতে অফিস নেয়া সহ সর্বমোট ২৫ লাখ ইন্ডিয়ান রুপি মোট সম্পদ দেখাতে হবে।
এই হল যেখানে ভারতে বাংলাদেশী চ্যানেল টেলিকাষ্ট করার শর্ত, সেখানে বাংলাদেশে প্রতি বছর ৭০ কোটি টাকা ভারতীয় পে চ্যানেল কে প্রদান করতে হয় বাংলাদেশে সেই সমস্ত পে-চ্যানেল (ষ্টার প্লাস, জি টিভি, সনি ইত্যাদি ইত্যাদি) টেলিকাষ্ট করার জন্য।
আজকেই একটা টক শো দেখছিলাম একুশে টেলিভিশনে, অধ্যাপক মুনির চৌধুরীর বাংলাদেশী চ্যানেল ও ভারতীয় চ্যানেল এর দর্শক বিষয়ে। সেখানে তিনি বলেন ভারতীয় চ্যানেল গুলো তাদের পোষাক, সেট ইত্যাদিকে অনেক বেশী ঝলমলে, অনেক বেশী আলোকিত করে উপস্থাপন করে। কিন্তু বাংলাদেশের চ্যানেল সমূহের অনুষ্ঠান গুলো সেরকম ঝলমলে না হলেও তাদের চেয়ে অনেক বেশী প্রাণবন্ত, অনেক বেশী বাস্তবসম্মত।
এখন শুধু প্রশ্ন হচ্ছে আমাদের বিবেক এর। যেখানে ভারতীয় সরকার বস্তা ভর্তি টাকা দাবী করছে আমাদের চ্যানেল তাদের দেশে প্রচারের সেখানে আমরা বস্তা ভর্তি টাকা তাদের কে দিয়ে যাচ্ছি তাদের চ্যানেল আমাদের দেশে প্রচারের জন্য। কথায় কথায় আমরা ভারতীয় পন্য বর্জনের কথা বলি বা দেশপ্রেমেরে কথা বলি, কিন্তু চ্যানেল হিসেবে বাংলাদেশী চ্যানেল কে বর্জন করি, এই দ্বৈত নীতি কখনই আদর্শ হতে পারে না।
আমার অবশ্য এত বড় কথা বলা সাজে না, কারন যখন আমি এই ব্লগটি লিখছি, তখন আমাদের পরিবারের সবাই (আমি বাদে) জি-বাংলায় সুবর্নলতা দেখছে। যেখানে আমার নিজের ঘড়েই এই অবস্থা সেখানে সম্পূর্ন জাতির কথা বলাটা মনে হয় অকালকুষ্মান্ডতারই পরিচয় দেয়।
আসিফ