২০১৯ এর নারী দিবসটি যখন শেষ হয়ে গেলো ঠিক সে সময় আমি বৃষ্টি বিন্দু কিছু অনুভূতি নিয়ে হাজির সামুতে বহুদিন পরে।
একটিমাত্র দিনই যে নারী দিবস হবে ব্যপারটা কি তা? অবশ্যই না। নারী আছে, থাকবে। প্রতিটি দিনে, প্রতিটি মুহূর্তে...
কথা না বাড়িয়ে অনুভূতিটা ব্যক্ত করেই ফেলি।তবে আজ কোন কবিতা নয়, শুধুই কিছু একান্ত অনুভূতির অনুরণন!!!
এক নারী পর্দার আড়ালে নিজেকে আবৃত রাখতেই আনন্দিতা আর এক নারী নিজেকে উন্মুক্ত করতেই উল্লসিতা।
যে নারী স্রষ্টার হুকুমকে ভালোবেসে নিজেকে বোরখা আর নেকাবে আবৃত করলো সেই নারীকে উন্মুক্ত করতে স্বামীই অগ্রগামী, আর যে নারী উন্মুক্ত তাকে আবৃত করতে খুব কম স্বামীই তটস্থ।
যে নারী বোরখায় আবৃতা তার কি সাজগোজের ইচ্ছে থাকতে পারেনা? প্রশ্ন উঠবে- সাজবে! কার জন্য সাজবে? সেতো বোরখা আর নেকাবের অন্তরালে থাকে, তাকে কে দেখবে?
কেন?
সে সুশীল নারী সাজবে নিজের জন্য, আর প্রিয় স্বামীর জন্য!
যদি প্রশ্ন করা হয়-
সাজগোজ কি শুধু অন্য পুরুষকে আকৃষ্ট করার জন্য করতে হয়?
এ প্রশ্নে কেউ কেউ ভদ্রতার মুখোশে এঁটে বলবে- না না তা কেন!
অথচ দেখুন সেই ব্যাক্তির কলব ঠিক বিপরীত কথাই বলছে। তর্ক আর ভদ্রতার খাতিরে কেউ কেউ বলবেন- নিজের জন্যইতো সাজগোজ।
আবার কেউ কেউ নির্দ্বিধায় বলবে- আরে সমাজে চলতে হলে, স্ট্যাটাস মেন্টেইন করতে হলে এসব করতে হয়।
[তবে অনাবৃতা অধিকাংশ নারী অন্যকে (নারী/পুরুষ) আকৃষ্ট করার জন্যই সাজগোজ করে। আর আবৃতা! তাদের মধ্যেও কিছু বিভিন্নতা রয়েছে। কেউ কেউ এই পর্দাকেই আকৃষ্ট করার উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করেন। আবার কেউ কেউ পর্দা করলেও মন থেকে পর্দার প্রকৃত অর্থ বিলুপ্ত হয়। তবে এটাও ঠিক যে বয়সের নানা অলিগলিতে মেয়ে হিসেবে সাজের প্রাকৃতিক ইচ্ছেটা হতেই পারে, এটাই স্বাভাবিক। যারা বয়সের আকাঙ্ক্ষাকে বলি দিয়ে আবৃত থাকতে পছন্দ করেন তাদের জন্য আল্লাহ উত্তম প্রতিদান রেখেছেন, সুতরাং এখানে আমার আপনার বলার কিছুই নেই। আর যে নারী পর্দাপ্রথাকে পছন্দ করে, কিন্তু নিজেকে সাজাতেও পছন্দ করে তাকে বলবো তার সাজ যেন এমন হয় যা অন্যকে আকৃষ্ট করার মতো না হয়। কারণ কেউ এতো সহজে এ পথে নিজেকে সহনশীল করতে পারে না। তাই তাকে সময় দিতে হবে আর আল্লাহর রহমত যেন বিস্তারিত হয় সেই দোয়া করছি]
যাইহোক আমাদের অধিকাংশ অনাবৃত নারী কি বলবে?
বলবে- নিজেকে দেখাবোনাতো কি করবো? প্রশংসাইতো সব। অন্য পুরুষের প্রশংসায় বুঝা যায় আমার দাম কতোটা!!!
হায়রে বোকা মেয়ে! তুমি জানো না, ঐসব পুরুষ শুধু তোমাকে চোখ দিয়ে রেপ করবে কিন্তু তোমাকে সম্মান করবেনা। তোমার সামনে প্রশংসার ঝুড়ি খুলে মুখে ফেনা উঠাবে, কিন্তু নিজেদের আড্ডাবাজীতে তোমাকে কি নামে ডাকে জানো?
দু:খজনক হলো- কিছু মেয়ে এই নোংরামো স্বভাবেই বেশি প্রাণবন্ত। এটাই তাদের জীবন রসনা। পুরুষের প্রশংসা বাক্যবীণা তারা উশকোখুশকো।
২০১০ এর ঘটনা:
ছেলেটি মেয়ে পটাতে ওস্তাদ এবং তার টার্গেট বিছানা। প্রতিবারই সে সফল। কিন্তু একসময় বিয়ের তোড়জোড় শুরু হয়। যেসব মেয়ের কথা বলা হয় তাদের সাথে অলরেডি তার বাসর হয়ে গেছে, এখন?
ভাবলো ফেবুতে খুজি, পেতেও পারি ভালো কোন মেয়ে। কয়েকজন থেকে বাছাই করলো, দেখা করে মন তার বিষিয়ে উঠলো। এ কেমন পোষাক পরেছে মেয়ে? এ কেমন গায়ে পড়া স্বভাব! এ কিভাবে আমার স্ত্রী হয়? এও কি আমারই মতো বিছানায় গেছে? সন্দিহান হয়ে উঠলো সতীত্ব নিয়ে। বিয়েই করতে চাইলো না।
জীবনের সফল প্রায় প্রতিটা ক্ষেত্রে সে বিফল হতে শুরু করলো। দামি গাড়ি হাঁকিয়ে চলা, দেশ-বিদেশে বিজনেস করা ছেলে এখন ভাইয়ের দয়ায় চলছে।
দীর্ঘদিন পর বহু কষ্ট হজমের পর, অনুশোচনার পর হয়তো আল্লাহ্ তাকে আর একটি সুযোগ দিলেন শোধরানোর। পারিবারিকভাবে সে বিয়ে করলো এমন এক মেয়েকে যার আসলেই অতটা অনাবৃত হবার সৎ সাহস নেই।
অনেকেই বলবেন- খোঁজ নিয়ে দেখুন এই মেয়েও দশ ঘাটের জল খাওয়া। হতেও পারে, তবে না হবার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ অসৎ নারীর চেহারা আর মুখ থেকে অসাধুতার দূর্গন্ধই বেশি ঝরে।
দু:খ হয় সেইসব পুরুষদের জন্য যারা আবৃতা সংগীকে সাথী হিসেবে পেয়েও লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে অনাবৃতার অন্তরালবর্তী জংঘায়। ভালো লাগেনা বোরখায় আবৃতা স্ত্রীর সাজগোজ, অন্তরে পোষণ করে স্ত্রীকে বোরখাহীন তথাকথিত আধুনিকা হিসেবে উপস্থিত করার। আবার কারো কারো মানষিক অত্যাচারে তটস্থ, পর্দা করা স্ত্রী একসময় পর্দা ছেড়ে সেই রংমাখা মেয়েগুলোর দলেই শামিল হয়, আর স্বামী পায় অনাবিল আনন্দ।
দূর্ভাগা স্বামী ভাবেনা- আমি কতো সৌভাগ্যবান যে, আমার স্ত্রী শুধু আমারই সম্পদ, কারো সম্পত্তি নয়...
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ১২:১৫