দোস্ত'র কথা খুব মনে পড়তেছে। দোস্ত ছিলো আমাদের ব্যাচের সবার দোস্ত। সবাই তাকে দোস্ত বলেই ডাকতাম।
দোস্ত নামের শুরুটা মজার। ব্যাচেলরের ক্লাশ শুরুর পরে দেখা গেল একটা ছেলে সবাইকে দোস্ত বলে ডাকা শুরু করেছে। যেখানে ব্যাচের অধিকাংশই কেউ কাউকে চিনি না; সেখানে চেনা-অচেনা সবাইকে এক কাতারে নিয়ে এসে দোস্ত বলে ডাকাটা বিশাল মহত্বের পরিচয়। ফলাফল হিসেবে ব্যাচের সবাই তাকে দোস্ত বলেই ডাকা শুরু করলাম। হলে সিট পাওয়ার পরে দেখলাম দোস্ত আমার অন্য তিন রুমমেটের একজন হয়ে গেছে।
দোস্তের বিশেষ কিছু ব্যাপার ছিলো। প্রথমেই মাথার চুলের কথা বলি। দোস্তের মাথার চুল ছিল খুবই পাতলা আর পলকা। মাথায় একবার আলগোছে হাত বুলালেও ৪/৫টা চুল উঠে আসতো। সেই চুলের জন্যে দোস্তের ছিল অপরিসীম মায়া। আর তাই কেউ যদি ভুলেও তার মাথায় হাত রাখতো তাহলে কমপক্ষে ৭ দিনের জন্যে তার সাথে কথা বন্ধ হয়ে যেতো।
দোস্তের আরেকটা গুন ছিলো অসাধারন স্মরনশক্তি। দাড়ি কমা সেমিকোলন সহ সবকিছু মুখস্ত করে রাখতো। অনুশীলনীর অংক, প্রোগ্রামিং কোড সবই মুখস্ত করে রাখতো সে । তার পরীক্ষার দেওয়ার লজিক বেশ চমৎকার ছিলো। পরীক্ষায় যেগুলো হুবহু কমন পড়েছে যেগুলো লিখতো প্রথমে। যেগুলো বাকী থাকতো সেগোলোর প্রশ্নের সাথে মুখস্ত উত্তরগুলো মিলিয়ে যেখানে সবথেকে বেশী শব্দ কমন থাকতো সেটাই লিখে দিয়ে আসতো।
এহেন দোস্তকে শেষ সেমিস্টারে আমি অনেক কষ্ট দিয়েছিলাম। সেটা মনে পড়লে আমার এখনো কষ্ট লাগে

আমি জানি দোস্ত আমারে এখনো ক্ষমা করতে পারে নাই। দোস্ত তুই ভালো থাকিস.... সব সময় ... সারাজীবন....
১. ২৭ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ১১:২২ ০