দুইটি বাবুর মধ্যে আদর-ভালোবাসা প্রকাশের ব্যালান্স করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। অন্ততঃপক্ষে সাড়ে তিন বছরের ছেলের কথা শুনে মনে হচ্ছে, সে ব্যাপারটা ফীল করছে অন্তরের গভীর থেকে। সেদিন অফিসে যাওয়ার আগে ছেলে বললো- "আব্বু, তুমি মারিয়াকে দুইবার কোলে নিয়েছো। আর আমাকে মাত্র একবার কোলে নিয়েছো।" ভাগ্যিস ছোটটা এখনো কিছু বলতে পারে না। আর বোঝার মতো বয়সও হয় নি। আরেকদিন ছেলে তার মাকে বলছে - "আম্মু, আমাকে অনেক ছোট করে দাও। বাবুর মতো ছোট করে দাও।" তার আম্মু আর জিজ্ঞেস করার সাহস পায় নি কেন এই আবদার।
(৩২)
তাশকিয়াকে দেখে এসে সেই থেকেই বড় বাবুর মনে কষ্ট ছোট বাবু কেন তাশকিয়ার মতো কথা বলে না! আসলে কথা বলবে কিভাবে, তখন তো ছোটবাবুর বয়স ছিল মাত্র ৩ মাস। তাশকিয়া প্রায় সময়ই "আত্তা...আত্তা...." বলে একটা শব্দ করতো। সে ৩ মাস বয়স থেকেই ছোটবাবুকে ট্রেনিং দিচ্ছে, "বলো-আত্তা...আত্তা...."। কে শোনে কার কথা! ছোটবাবু "আম..মা", "আব...বা", "দা..দা" বলা শিখলো, কিন্তু "আত্তা...." আর বলে না। বড় বাবুর কষ্টও শেষ হয় না। ৩ দিন আগে হঠাৎ করে ছোটটা ঘুম থেকে উঠেই গান গাওয়া শুরু করলো- " আত্তা..............আত্তা............."। শেষ পর্যন্ত ট্রেনিং স্বার্থক আর অহংকারের খুশীর ঝিলিক ফুটলো বড়টার মুখে।
ছেলে যে রুমে যাবে আধা ঘন্টার মধ্যে সে রুমের জিওগ্রাফী পরিবর্তন করে ফেলবে। আমার কোয়ার্টারের ছোট্ট ড্রইং রুমে সে অনেক কিছু উল্টাপাল্টা করে রেখেছে যা দেখা যাচ্ছে ছবিতে । সোফা গদিশূন্য খা খা করতেছে। গদিগুলো ফ্লোরে বিছানার উপরে একটা ইগলুটাইপ ঘর তৈরী করেছে। সেই ঘরের উপরে আবার দরজার পর্দা টানা দিয়ে পোক্ত করা হয়েছে। এ রকম ঘর বানিয়ে সেখানে লুকিয়ে থাকা তার একটা প্রিয় খেলা।