শুরুতেই বলে রাখি,আমি পাকিস্তান টীমের সাপোর্টার নই,একজন সাধারন দর্শক হিসেবে আমার প্রতিক্রিয়া জানাতে চাই। গতকালের পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ নিয়ে গত কিছুদিন ধরেই বেশ উত্তেজনা চলছে। পক্ষে-বিপক্ষে অনেক কথা হচ্ছে। আজ ব্লগে বিভিন্ন লেখায় দেখছি মাঠে গিয়ে যারা পাকিস্তান ক্রিকেট টীমকে সাপোর্ট করেছেন,তাদের জন্মপরিচয় নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করা হচ্ছে। আমার কথা হলো,যারা পাকিস্তান টীমকে সাপোর্ট করলো,তারা যদি বাড়াবাড়ি করে থাকে,তবে এখন ব্লগে যা শুরু হয়েছে সেটাও কম কিছু নয়। এব্যাপারে আমার কয়েকটা প্রশ্ন।
মানুষজন অনেক কষ্ট করে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাড়িয়ে টিকেট কেটেছে খেলা দেখার জন্য। যারা তখন টিকেট পায়নি,তারা চড়া মুল্যে ব্ল্যাকে টিকিট কিনতে বাধ্য হয়েছে। আপনাদের ভাষ্যমতে, দর্শকেরা আজ পাকিস্তানের সমর্থনে স্লোগান দিয়েছে,তাদের জয়ে উল্লাস প্রকাশ করেছে। আপনি কি আশা করেন? এত সময়,অর্থ ব্যয় করে টিকেট নামের সোনার হরিন হাতে পেয়ে যারা বিশ্বকাপ খেলা দেখতে গিয়েছে,তারা গ্যালারীতে চুপ করে বসে থাকবে? নাকি 'পাকিস্তান মুর্দাবাদ' স্লোগান দেবে? সেক্ষেত্রে বিশ্বের কাছে আমাদের ভাবমূর্তি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে চিন্তা করেছেন?
অনেকে বলছেন,আমাদের দেশে কেন পাকিস্তানের পতাকা উড়বে? সহমত। কিন্তু দেখেন,এটা একটা আন্তর্জাতিক খেলা। যদি ম্যাচটা উগান্ডা আর ঘানার মধ্যে হতো,তাহলেও ওই দুই দেশের পতাকা গ্যালারীতে দেখা যেতো। ম্যাচের আগে যদি পাকিস্তানের জাতীয় সংগীত বাজতে পারে,পাকিস্তানের পতাকা উড়তে পারে,তাহলে দর্শকেরা কি দোষ করলো? আর তাছাড়া আমি যতদুর জানি,আজ খেলা দেখতে প্রচুর বিহারী মাঠে গিয়েছিলো। তাদের আচরনের সাথে সাধারন দর্শকের আচরনকে মেলানোটা ঠিক হবেনা।
পরিশেষে আর একটা কথা বল্বো,ক্রিকেট আর রাজনীতিকে যারা এক করে দেখেন,তাদের জন্য। রাজনীতির দৃষ্টিতেই বলি; বাংলাদেশ আর পাকিস্তানের মধ্যে এই মুহূর্তে কোন দ্বন্দ্ব নেই। বাংলাদেশ সরকার পাকিস্তানকে শত্রুরাষ্ট্র ঘোষণা করেননি। কাজেই প্রতিবেশী দেশ হিসেবে কেও কি পাকিস্তানকে সাপোর্ট করতে পারেননা? যদি আপনার উত্তর হয়-না;তাহলে বলি,মাত্র কয়েকদিনের ব্যাপার। 'জাস্ট এ গেম' হিসেবে যদি মানতে না পারেন,তাহলে দয়া করে খেলার মাঝে এসব টেনে আনবেন না। ৭১ নিয়ে আমাদের মাঝে আবেগ কিছু কম নেই। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আশ্বাস দিয়েই এই সরকার নতুন প্রজন্মের সমর্থন পেয়েছে। ৭১ আমাদের গর্ব। তাই বলে সব জায়গায় এগুলো টেনে আনা যায়না।