এখন কী নিয়ে ব্যস্ত আছেন?
সবে ব্যাংকক থেকে ফিরলাম। প্রায় এক সপ্তাহ ব্যাংককে ছিলাম। তবে কোনো শুটিংয়ে নয়। ব্যক্তিগত ভ্রমণে সেখানে গিয়েছিলাম। ফিরেই এসএ হক অলীকের নতুন একটি নাটকে কাজের বিষয় চূড়ান্ত করেছি। সিনেমার শুটিং আপাতত নেই বললেই চলে। তবে আগামী সপ্তাহ থেকে আবারও সিনেমার কাজ শুরু হবে।
এখন কতগুলো ছবির কাজ করছেন?
হাতে গুনলে প্রায় এক ডজন। তবে নিয়মিত কাজ চলছে ৫-৬টির। এর মধ্যে আবার ২-৩টির শুটিং শেষ পর্যায়ে। আর শুরু হওয়ার কথা রয়েছে আরও ৪-৫টির।
হিসাব অনুযায়ী খুব বেশি নয়। আপনার হাতে আরও ছবি থাকার কথা—
আসলে এখন ছবিই কম নির্মাণ হচ্ছে। কয়েকদিন আগে পত্রপত্রিকায় দেখলাম, গত বছর মাত্র ৫৭টি ছবি মুক্তি পেয়েছে। অথচ আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে গত এক দশক ধরে প্রায় একশ’ করে ছবি মুক্তি পেয়েছে। সে হিসাবে গত বছর মুক্তি পেয়েছে অর্ধেকসংখ্যক ছবি। নতুন বছরে হয়তো এই সংখ্যা আরও কমবে। যে কারণে মনে হচ্ছে আমার হাতে ছবি কম। সব যেহেতু অর্ধেক হয়ে গেছে, সেহেতু আমার নির্মাণাধীন ছবিগুলোর সংখ্যা দ্বিগুণ করে হিসাব করলেই দেখবেন আমি অনেক ছবির নায়িকা। অর্থাত্ ছবি যদি কম হয় তাহলে আমাদের কিছুই করার নেই।
এক সময় সিনেমার নায়িকা বলে টিভি পর্দায় আপনার অনীহা ছিল। এখন তো নিয়মিতই টিভিতে কাজ করছেন। কেন?
যখন আমি সিনেমার নায়িকা হিসেবে চাহিদাসম্পন্ন এবং অনেক ব্যস্ত, তখন টিভি নাটক বা বিজ্ঞাপনকে এড়িয়ে চলতাম। এখন আমি সেই হারে ব্যস্ত নই। তাছাড়া সিনেমার অবস্থাও বদলে গেছে। আমার ক্যারিয়ারের শুরুতে একসঙ্গে রিয়াজ, ফেরদৌস, আমিন খান, শাকিব খান, মান্না ভাইদের সঙ্গে কাজ করেছি। এখন একমাত্র শাকিব খান ছাড়া কোনো নায়ক নেই বলে শোনা যায়। তাহলে কীভাবে এখানে নিয়মিত কাজ করা যায়? তাছাড়া অনেকদিন সিনেমায় চাহিদা আর জনপ্রিয়তা নিয়ে কাজ করেছি। এখন আর যেনতেন মানের কাজ করতে চাই না। বিয়ে করেছি, সংসার করছি। নিজেকে একটু সিনিয়র মনে হয়। যে কারণে সিনেমার পাশাপাশি টিভিতেও নিয়মিত কাজ করছি।
তার মানে আপনি মানছেন যে আপনি সিনিয়র, আপনার জনপ্রিয়তা আর চাহিদা হ্রাস পেয়েছে?
বিষয়টিকে নেতিবাচক অর্থে না নিলে খুশি হব। জনপ্রিয় বলেই আমাকে টিভি নাটকে নেয়া হচ্ছে। মাঝেমধ্যে সিনেমায়ও আমি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করছি। আর চাহিদা না থাকলে কি আর আমাকে কেউ নিতেন? আসলে আমি বলতে চেয়েছি যে অর্থে আমি কাজ করতে চাই সেই ধারার কাজ এখন পাওয়া মুশকিল।
সেটা কী রকম?
একমাত্র বাংলাদেশ ছাড়া বিশ্বের অন্য সব দেশেই পরিপকস্ফ বা সিনিয়র শিল্পীদের কদর বেশি। তাদের কথা চিন্তা করে গল্প তৈরি হয়। আমি যখন টিপিক্যাল নায়িকা তখন আমাকে নিয়ে সবাই কাজ করতে চাইতেন। ওই সময়ে আমি কিন্তু অভিনেত্রী হিসেবে ততটা পরিপকস্ফ ছিলাম না, যতটা এখন আমি আত্মবিশ্বাসী। আমার মনে হয়, এখন আমি বুঝে এবং মনের মতো করে অভিনয় করতে পারব। অথচ এই সময়ে আমাকে চিন্তা করে ছবির গল্প বা চরিত্র কে তৈরি করবে? আমাদের ইন্ডাস্ট্রির একটি কমন ধারণা—আরে না, ওই নায়িকা সিনিয়র হয়ে গেছে, বিয়ে করেছে, ছবি চলবে না। অথচ মৌসুমী আপু বিয়ের পর অনেক সুপারহিট ছবি উপহার দিয়েছেন। আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। তারপরও আমাদের নিয়ে আলাদা করে ভাবতে চান না নির্মাতারা।
কম-বেশি সবাই প্রযোজনা-পরিচালনায় এসেছেন। আপনার সেই সম্ভাবনা কতটুকু?
এখনও পর্যন্ত শূন্যের কোঠায়।
শোনা যাচ্ছে আপনি মা হতে যাচ্ছেন?
শোনা কথায় কান দিতে নেই। আর মা হওয়া এমন একটি বিষয় যা লুকানো যায় না। বিয়ের কথা লুকানো যায়। আমার মনে হয় মা হওয়ার বিষয়টি কোনো মেয়ে লুকাতে চান না। এটা প্রতিটি মেয়ের জন্য আনন্দের এবং গর্বের বিষয়। সুতরাং এ বিষয় নিয়ে কোনো মন্তব্য করা উচিত নয়।
সাক্ষাত্কার : বিনোদন প্রতিবেদক











