স্বর্গের অপরূপা অপ্সরী থেটিসের পাণিপ্রার্থী হয়ে বসলেন দুজন মহান দেবতা, জিউস এবং পসিডন । প্রমিথিউসের ভবিষ্যতবাণী এলো, থেটিসের ঔরসে এমন পুত্র জন্ম নেবে, যে তার পিতার চেয়ে ক্ষমতাবান হবে । সঙ্গে সঙ্গে দেবদ্বয়ের প্রেম উবে গেল । নিরস্ত হলেন তাঁরা । আর থেটিস মালা পরালেন, দুঃসাহসী মারমিডনদের রাজা, পেলিউসের গলে । তাঁদের এক ফুটফুটে পুত্র সন্তান হল । তার নাম রাখা হল, একিলিস !
সদা বিগ্রহ লিপ্ত দেবতা আর মানুষের ভিড়ে, সন্তানকে নিরাপদ রাখার জন্যে, স্নেহময়ী মাতা থেটিস এক অভিনব পরিকল্পনা করলেন । সবাই জানে, পাতাল-নদী স্টেকসের জলে কোন দেহ একবার ডুবলে পৃথিবী বা স্বর্গের কোন অস্ত্র, তাতে আঁচড় কাটতে পারে না । থেটিস একিলিসকে সেই স্টেকসের জলে ডুবিয়ে আনলেন । কিন্তু, তাকে ডোবানো হল ডান পায়ের গোড়ালি ধরে, উলটো করে । তাই, সারাদেহ বিশেষত্ব প্রাপ্ত হলেও, ডান গোড়ালিটি সবার অজান্তে বাদ পড়ে গেল ।
ট্রোজান যুদ্ধের সময়, প্রবল অস্ত্রের মুখে অক্ষত মহাবীর একিলিস, শেষ পর্যন্ত মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছিলেন প্যারিসের ছোঁড়া বিষাক্ত তীরের আঘাতে । তীরটি কোথায় এসে বিঁধেছিল, তা বোঝার জন্যে বুদ্ধিমান হবার প্রয়োজন নেই ।
বাস্তবতার সঙ্গে পৌরাণিক রূপকথার অন্যতম অমিলটি হল, পৌরাণিক ট্র্যাজেডির সিংহভাগ, জন্ম নেয় দুর্ভাগ্য বা অভিশাপের ঔরসে । আর বাস্তবতার ট্র্যাজেডির সঙ্গে দুর্ভাগ্য বা অভিশাপের কোন যোগ নেই । ব্যক্তিগত ভাবে আমি বিশ্বাস করি, জড় বা জীবজগতে ভাগ্য বা নিয়তির স্থান শূন্য । আপনাদের সঙ্গে আমার তুচ্ছ এ মত নাও মিলতে পারে । কিন্তু, একটি মত ঠিক ঠিক মিলে যাবে । তা হল, কোন কিছু সত্যিকারভাবে চাইলে, আমরা তা পেয়ে তবে ছাড়ি !
ছবিতে একজন সত্যিকারের একিলিসকে দেখা যাচ্ছে । কিন্তু, অসাধারণ তারুণ্যদীপ্ত এ ছবিটি আড়ালে, পৃথিবীর করুণতম সত্যটি লুক্কায়িত !
তিতুমির কলেজের ম্যানেজমেন্ট তৃতীয় বর্ষে পড়ুয়া এ মেধাবী শিক্ষার্থী মুহাম্মদ ফয়সাল ইসলামের, দুটি কিডনিই আজ পুরোপুরি অকেজো । মৃত্যুর সাথে অবিরত পাঞ্জা লড়ে যাচ্ছে সে !
গিটার হাতে ফয়সাল।।
হাসপাতালের বেডে ফয়সাল।।
একটি কিডনি প্রতিদিন দুশো কোয়ার্টস ( ১৮৯২৭০.৫৮ মি.লি. ) রক্ত ছেঁকে অন্তত দুই কোয়ার্টস ( ১৮৯২.৭১ মি.লি. ) বর্জ্য, নিষ্কাশনের জন্যে পৃথক করে । এ প্রক্রিয়া যখন থেমে যায়, তখন দূষিত বর্জ্য, রোগীর মস্তিষ্কসহ সর্বদেহে ক্রমাগত জমা হতে থাকে । রোগীকে তখন কল্পনাতীত অমানুষিক যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে যেতে হয় !
একটি সুস্থ কিডনি পাওয়া গেছে ! তারপরও, এখন তাকে ডায়ালাইসিসের কষ্টকর প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হচ্ছে । কেননা, কিডনি অপারেশনের জন্যে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থের সংকুলান হয়ে ওঠেনি । ফয়সালের পরিবার কুড়ি লক্ষ টাকার কাছাকাছি জোগাড় করতে সমর্থ হয়েছে । দরকার আরও কুড়ি লক্ষ টাকা, যা আমাদের ভাইটির জন্যে, আমরা সবাই মিলে জোগাড় করে দেব বলে প্রতিজ্ঞা করেছি । আমাদের সঙ্গে হাত মেলানোর জন্যে, আপনাদের কাছে জোড়কর অনুরোধ!
সাহায্য পাঠাবার ঠিকানা-
MD.Saiful Islam
A/C No: 119.101.351461
Dutch Bangla Bank Ltd.
Dania Branch,Dhaka.
যুগে যুগে পৌরাণিক গল্পেরা, নিজেদের মত করে এগিয়ে গেছে । আমাদের বাস্তবতার এ গল্পটিকেও, আমরা আমাদের মনের মত করে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি ।
সত্যিকার থেটিসের মমতা আমরা বৃথা যেতে দেব না !
দেব না সত্যিকার একিলিসকে আমাদের ছেড়ে চলে যেতে !
কি বন্ধুরা ? উত্তর দিন !
মূল লেখা- হামিম কামাল
ছবি প্রাপ্তি- Fund For Faisal
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মার্চ, ২০১২ দুপুর ১২:৫৩