somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মমতার হাত বাড়িয়ে দিন, একজন একিলিসের জন্যে !

২৫ শে মার্চ, ২০১২ দুপুর ১২:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি এক টকবকে তরুণের কথা বলব, সবে চব্বিশে পা দেয়া সুদর্শন তরুণ। যে কোন আড্ডায় তুমুল জনপ্রিয়। যে কখনো হারতে শেখেনি। অদৃষ্টের নির্মমতায় সে আজ বন্দি। তার দুটি কিডনিই নষ্ট। সে কি হেরে যাবে? তার কাঁধে যে অনেক দায়িত্ব। সে আমাদেরই কারো বন্ধু, কারো ভাই, কারো প্রিয়জন। আমরা তাকে হেরে যেতে দেব? আমাদের মনুষ্যত্ব কি বলে??

স্বর্গের অপরূপা অপ্সরী থেটিসের পাণিপ্রার্থী হয়ে বসলেন দুজন মহান দেবতা, জিউস এবং পসিডন । প্রমিথিউসের ভবিষ্যতবাণী এলো, থেটিসের ঔরসে এমন পুত্র জন্ম নেবে, যে তার পিতার চেয়ে ক্ষমতাবান হবে । সঙ্গে সঙ্গে দেবদ্বয়ের প্রেম উবে গেল । নিরস্ত হলেন তাঁরা । আর থেটিস মালা পরালেন, দুঃসাহসী মারমিডনদের রাজা, পেলিউসের গলে । তাঁদের এক ফুটফুটে পুত্র সন্তান হল । তার নাম রাখা হল, একিলিস !

সদা বিগ্রহ লিপ্ত দেবতা আর মানুষের ভিড়ে, সন্তানকে নিরাপদ রাখার জন্যে, স্নেহময়ী মাতা থেটিস এক অভিনব পরিকল্পনা করলেন । সবাই জানে, পাতাল-নদী স্টেকসের জলে কোন দেহ একবার ডুবলে পৃথিবী বা স্বর্গের কোন অস্ত্র, তাতে আঁচড় কাটতে পারে না । থেটিস একিলিসকে সেই স্টেকসের জলে ডুবিয়ে আনলেন । কিন্তু, তাকে ডোবানো হল ডান পায়ের গোড়ালি ধরে, উলটো করে । তাই, সারাদেহ বিশেষত্ব প্রাপ্ত হলেও, ডান গোড়ালিটি সবার অজান্তে বাদ পড়ে গেল ।

ট্রোজান যুদ্ধের সময়, প্রবল অস্ত্রের মুখে অক্ষত মহাবীর একিলিস, শেষ পর্যন্ত মৃত্যুকে বরণ করে নিয়েছিলেন প্যারিসের ছোঁড়া বিষাক্ত তীরের আঘাতে । তীরটি কোথায় এসে বিঁধেছিল, তা বোঝার জন্যে বুদ্ধিমান হবার প্রয়োজন নেই ।

বাস্তবতার সঙ্গে পৌরাণিক রূপকথার অন্যতম অমিলটি হল, পৌরাণিক ট্র্যাজেডির সিংহভাগ, জন্ম নেয় দুর্ভাগ্য বা অভিশাপের ঔরসে । আর বাস্তবতার ট্র্যাজেডির সঙ্গে দুর্ভাগ্য বা অভিশাপের কোন যোগ নেই । ব্যক্তিগত ভাবে আমি বিশ্বাস করি, জড় বা জীবজগতে ভাগ্য বা নিয়তির স্থান শূন্য । আপনাদের সঙ্গে আমার তুচ্ছ এ মত নাও মিলতে পারে । কিন্তু, একটি মত ঠিক ঠিক মিলে যাবে । তা হল, কোন কিছু সত্যিকারভাবে চাইলে, আমরা তা পেয়ে তবে ছাড়ি !



ছবিতে একজন সত্যিকারের একিলিসকে দেখা যাচ্ছে । কিন্তু, অসাধারণ তারুণ্যদীপ্ত এ ছবিটি আড়ালে, পৃথিবীর করুণতম সত্যটি লুক্কায়িত !
তিতুমির কলেজের ম্যানেজমেন্ট তৃতীয় বর্ষে পড়ুয়া এ মেধাবী শিক্ষার্থী মুহাম্মদ ফয়সাল ইসলামের, দুটি কিডনিই আজ পুরোপুরি অকেজো । মৃত্যুর সাথে অবিরত পাঞ্জা লড়ে যাচ্ছে সে !



গিটার হাতে ফয়সাল।।



হাসপাতালের বেডে ফয়সাল।।

একটি কিডনি প্রতিদিন দুশো কোয়ার্টস ( ১৮৯২৭০.৫৮ মি.লি. ) রক্ত ছেঁকে অন্তত দুই কোয়ার্টস ( ১৮৯২.৭১ মি.লি. ) বর্জ্য, নিষ্কাশনের জন্যে পৃথক করে । এ প্রক্রিয়া যখন থেমে যায়, তখন দূষিত বর্জ্য, রোগীর মস্তিষ্কসহ সর্বদেহে ক্রমাগত জমা হতে থাকে । রোগীকে তখন কল্পনাতীত অমানুষিক যন্ত্রণার ভেতর দিয়ে যেতে হয় !
একটি সুস্থ কিডনি পাওয়া গেছে ! তারপরও, এখন তাকে ডায়ালাইসিসের কষ্টকর প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে যেতে হচ্ছে । কেননা, কিডনি অপারেশনের জন্যে যথেষ্ট পরিমাণ অর্থের সংকুলান হয়ে ওঠেনি । ফয়সালের পরিবার কুড়ি লক্ষ টাকার কাছাকাছি জোগাড় করতে সমর্থ হয়েছে । দরকার আরও কুড়ি লক্ষ টাকা, যা আমাদের ভাইটির জন্যে, আমরা সবাই মিলে জোগাড় করে দেব বলে প্রতিজ্ঞা করেছি । আমাদের সঙ্গে হাত মেলানোর জন্যে, আপনাদের কাছে জোড়কর অনুরোধ!



সাহায্য পাঠাবার ঠিকানা-
MD.Saiful Islam
A/C No: 119.101.351461
Dutch Bangla Bank Ltd.
Dania Branch,Dhaka.



যুগে যুগে পৌরাণিক গল্পেরা, নিজেদের মত করে এগিয়ে গেছে । আমাদের বাস্তবতার এ গল্পটিকেও, আমরা আমাদের মনের মত করে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি ।
সত্যিকার থেটিসের মমতা আমরা বৃথা যেতে দেব না !
দেব না সত্যিকার একিলিসকে আমাদের ছেড়ে চলে যেতে !
কি বন্ধুরা ? উত্তর দিন !


মূল লেখা- হামিম কামাল

ছবি প্রাপ্তি- Fund For Faisal
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মার্চ, ২০১২ দুপুর ১২:৫৩
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×