।
।
।
।
।
।
।
।
।
।
আমার কাছে বিয়া বাড়ির দাওয়াতের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ অংশ হইলো খাওন দাওন। খাওন দাওন ছাড়া যেকোনো বিয়া আমার কাছে হিল্লা বিয়া। আমার আরেকটা ব্যাক্তিগত ধারনা এবং উপলব্ধি হইলো যেইসব বিয়া বাড়ির দাওয়াতের খাওন মজা হয় না অই সমস্ত সংসার টিকে না আর টিকলেও সুখের হয় না.....কারন ১০০০-২০০০ মানুষ খায়া মজা না পাওয়ার কারনে অসন্তুস্ট থাকে






আমার কথা কইলে আমি বিয়া বাড়িতে যাই-ই খাইতে। এই বিয়া বাড়ির খাওনরে এক প্রকার শর্ত প্রযোজ্য* ব্যুফেই কওন যাইতে পারে.....তাই এই খাওনের ও কিছু সিস্টেম আর হিডেন টিরিক্স আছে যেই গুলা এপ্লাই করলে শান্তি মতন প্যাট ভইরা মজা কইরা তৃপ্তি নিয়া খাইতে পারবেন....নিম্নোক্ত আলোচনায় টিপিক্যাল বিয়া বাড়ির খাওন দাওনের উপ্রে আলোচনা হইবেক।
পয়েন্ট ১ : বিয়া বাড়িতে গেলে সব সময় প্রথম ব্যাচে খাইতে বইসা পড়তে হইবো, নো লজ্জা। আগেই কইছি খাইতে তো বসবেনই, তো সুযোগ থাকলে অলঅয়েজ প্রথম ব্যাচে বইসা পড়েন..বাকি কাম যা রইছে যেমন মানুষের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করা বা বন্ধু অথবা আত্নীয় সজন গো লগে গল্প করা এই গুলান খাওনের পড়েও করতে পারবেন..এইবার কমু ক্যান আমি প্রথম ব্যাচে বইতে কইলাম....


ক) প্রথম ব্যাচে টেবিল সব সময় ধবধবা সাদা, পরিস্কার থাকে।খাওনের সময় অশুচি ভাব আইবো না ফলে সাচ্ছন্দে খাইতে পারবেন
খ) প্রথম ব্যাচে পাতিলের উপ্রের খাওন সার্ভ করা হয় এর লাইগা খাওনে তেলের পরিমান কম থাকে কারন তেলের পরিমান সবসময় পাতিলের মাঝ এবং শেষ অংশের খাওনে থাকে।
গ) প্রথম ব্যাচে খাওন সর্ট পড়ার চান্সই নাই।


ঘ) শেষের ব্যাচগুলির খাওনের সময় যদি বোরহানী সর্ট পরে তাইলে বাবুর্চিরা পানি আর লবন মিশাইয়া বোরহানির কোয়ালিটি কমাইয়া কোয়ান্টিটি বাড়াইয়া কনে বা বর পক্ষের ইজ্জত রক্ষা করে, যা প্রথম ব্যাচের সাথে ঘটার সম্ভাবনা নাই
ঙ) প্রথম ব্যাচের খাওন প্রথম পাতিলের তাই পর্যাপ্ত সময় ও যত্ন নিয়া রান্না করা হয় এর লাইগা খাওনের টেস্ট বেশি থাকে যেটা ২য় বা ৩য় পাতিলের ক্ষেত্রে করা হয় না তাই খাবারের টেস্ট ভ্যারি করে....আমার নিজের অভিগ্গতা আছে যে একই বিয়াতে খাবারের টেস্ট দুইরকম....একই বাবুর্চি একই রকম মসলা দিয়া রান্না করার পড়েও খালি তাড়াহুড়ার কারনে খাওনের অবস্থার ব্যারাছেরা লাইগা যায়
খাড়ান প্রথম ব্যাচে বইলেই যে সব মুস্কিল আসান হইয়া যাইব তা কিন্তু না..প্রথম ব্যাচের বহনের ঝামেলাও আছে....যেই সেন্টারে দাওয়াত সেইডাতে যদি সেই দিন দুইডা বিয়া থাকে আর আপনাগোর বিয়া ডা যদি ২য় নাম্বারে হয় তাইলে কিন্তুক প্রথম বিয়ার বাইচা যাওন বাসি খাওন দ্বিতীয় বিয়ার প্রথম ব্যাচ ওয়ালাগোরেই গিলতে হয়...তাই একটু বুইযা শুইনা..........
পয়েন্ট ২ :ব্যুফে খাওনের মতন এইখানেও ১-৩ জন সংগি নির্বাচন কইরা ফেলান, তাগোরে নিয়া খাইতে বসেন...টেবিলে খাবার আসা মাত্রই একেক জন একেকটা আইটেম নিয়া একে অন্যরে বাইরা দিয়া খাওয়ায় সহযোগিতা করেন দেখবেন সুষম বন্টন ঘটবো
পয়েন্ট ৩ : বিয়া বাড়ির সব থেকে মজার খাবার কুনডা সেইটা জানেন?? সেইটা হইলো গরু বা খাসির রেজালা। এই ক্ষেত্রে বেশির ভাগ মানুষই ভুল করে, তারা রেজালা টাচই করেনা....ভাই বিয়া বাড়ির রেজালা খালি বিয়া বাড়িতেই মিলে...আর কুথাও টেকা দিয়া এই জিনিষ পাইবেন না, বাকি সব যেমন পোলাও রোস্ট, টিকিয়া, বোরহানি টেকা দিলে বাড়িতে বা হোটেলে কিন্না খাইতে পারবেন, মাগার রেজালা খাইতে হইলে আপনেরে বিয়া বাড়িতেই যাইতে হইবো তয় টেকা দিয়া চুন্নু, মুন্নু, নান্টু মিয়া বাবুর্চিরে বাড়িতে ডাইকা নিয়া রান্ধাইলে হেইডা হইলো আলাদা কথা...সো এই রেজালা রে এভয়েড কইরা নিজেরে বন্চিত কইরেন না।


পয়েন্ট ৪ : এইডা মাইয়া মানুষ গো লাইগা.....পোলারা সরাসরি পয়েন্ট ৫ এ চইলা যান....আগেই কইছি মাইয়া মানুষগো কাছে বিয়া মানেই আত্নহত্যার উপলক্ষ্য উপস স্যরি আত্ন সজ্জার উপলক্ষ্য....লেডিসরা মনোযোগ দিয়া শুনেন বেশির ভাগ মাইয়ারাই বিয়া বাড়িতে খাইতে পারেনা...আমি অনেক মাইয়ারেই দেখছি যে তারা ঠোটের লিপস্টিক ও টিকায় রাখতে চায় আবার মুরগির ঠ্যাং ও খাইতে চায় পরে ঠোট গোল


অফটকিকের আরেকটা কথা আপনে যত সুন্দরী মাইয়াই হন না কেন আপনারে খাওনের সময় অনেক রকম মুখভঙ্গী করতে হয় তাই তখন ছবি বা ভিডিউ করলে আপনাকে অসুন্দর লাগোনের চান্সই বেশি তাই অই সময় ছবি তুলতে আইলে মানা করেন....কিছু ছাগল আছে যারা খাওনের সময়ই আইসা বলে আপু ইসমাইল প্লিজ, সেগুলারে এভয়েড কইরেন। নাইলে পরবর্তিতে দেখবেন যে আপনের এক চোখ আধাবুজা



পয়েন্ট ৫ : বিয়া বাড়িতে খাওনের ফাকে ফাকে বোরহানি খাইতে থাকেন তাইলে খাওয়ার সময় রিচফুড বেশি খাওনের অসস্তি লাগবো না। :-& :-& :-&
পয়েন্ট ৬: এইবার আলোচনা করমু ডেজার্ট নিয়া...বিয়া বাড়িতে ডেজার্ট হিসেবে সাধারনত জর্দা আর নাইলে ফিরনী দেয়...এই ডেজার্ট খাওনের আগেই যা বোরহানী খাওয়ার তা খাইয়া নেন। কারন মিস্টি খাওনের ফলে পরবর্তিতে বোরহানি খাইলে আর মিস্টি লাগেনা, বিস্বাদ লাগে...এই ভুলডা বেশির ভাগ মানুষই কইরা ফেলে জানা সত্বেও....
পয়েন্ট ৭: এই পয়েন্টটা শুধু মাত্র বরযাত্রীর জামাইয়ের বন্ধুবান্ধব, দুলাভাই, ছোডভাই মানে যারা জামাইয়ের লগে একই টেবিলে খাইতে বইবো তাগোর লাইগা...জামাইয়ের টেবিলডা আর দশটা টেবিলের চেয়ে আলাদা হয়...আমাদের এলাকায় জামাই এর খাওনরে সাগরানা কওয়া হয়...তো এই সাগরানার প্লেটে সাধারনত আস্তা খাসি, ১৫-২০ টা আস্তা মুরগীর রোস্ট থাকে (অনেকে আবার মুরগীর পেটের ভিতরে ডিমের কোরমা ঢুকাইয়া দেয়)

আইজকা এই পর্যন্তই.....আর যারা বিয়া বাড়িতে গিয়া কুপাইয়া খাইতে চান তারা আমার ব্যুফেতে গিয়া ক্যামনে পয়সা উসুল করবেন পোস্টটা পড়েন আর বিয়া বাড়ির লগে কুন কুন পয়েন্টটা যায় সেইটা ধইরা কোপাইয়া যান()....দেখবেন বিয়ার কনেরে বিদায় দেওয়া ছাড়াও কনে পক্ষের কান্দনের আরেকটা কারন ঘটায় ফেলতে পারবেন

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:০১